৫৫ বছরে ১৪৫ ডিগ্রি!

পার্থিবান অর্জন করেছেন ১৪৫ ডিগ্রি, স্ত্রীর আছে ৯টি। ছবিতে স্ত্রীর সঙ্গে ভি এন পার্থিবান। (সংগৃহীত ছবি)

৫৫ বছরে ১৪৫ ডিগ্রি!

নিউজ টোয়েন্টিফোর অনলাইন

আপনার কয়টা ডিগ্রি আছে? দু'টি, তিনটি বা চারটি। কারও হয়ত পাঁচটি বা ছয়টি। এক জীবনে দুই-তিনটা ডিগ্রি জোগাড় করতেই হিমশিম খায় অধিকাংশ মানুষ। কিন্তু, ভারতের ৫৫ বছর বয়সী এক অধ্যাপকের ঝুলিতে আছে মোট ১৪৫ টি ডিগ্রি? শিশুকাল বাদ দিলে গড়ে প্রতি বছর তিনি প্রায় তিনটি করে ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

তার নাম ভি এন পার্থিবান। পেশা অধ্যাপনা। মজার বিষয় হলো চেন্নাইয়ের বিভিন্ন কলেজে তিনি ১০০-র বেশি বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের পড়ান। পার্থিবানের ভিজিটিং কার্ডটির চেহারাই দাঁড়িয়েছে একটি ছোটখাটো বইয়ের মতো।

বিভিন্ন বিষয়ের উপর ডিগ্রি অর্জন করা তার নেশা। ভি এন পার্থিবানের ঝুলিতে আছে দশটি মাস্টার অব আর্টস ডিগ্রি (এমএ), আটটি মাস্টার অব কমার্স ডিগ্রি (এম কম), তিনটি মাস্টার অব সায়েন্স ডিগ্রি (এমএসসি), ১২ টি রিসার্চ ডিগ্রি (এম ফিল), ন’টি মাস্টার অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিগ্রি (এমবিএ), আটটি মাস্টার অব ল ডিগ্রি।

১৪৫ টি ডিগ্রি থাকলেও পার্থিবানের অঙ্কে ভয় এখনও কাটেনি। পার্থিবনের দাবি, অঙ্কই একমাত্র বিষয়, যা তিনি এখনও পুরোপুরি আয়ত্তে আনতে পারেননি। জানিয়েছেন, একবার অঙ্ক পরীক্ষায় ফেলও করেছিলেন তিনি।

news24bd.tv

ডিগ্রি অর্জন করাই তার নেশা। শেষ ৩৫ বছরে ছুটি কাটাননি একটি দিনও।

চেন্নাইয়ের অত্যন্ত গরীব পরিবারে বড় হন পার্থিবান। তাঁদের পরিবারে পড়াশোনা বিষয়টাই ছিল বিলাসিতা। অনেক কষ্টে জোগাড় করেছিলেন প্রথম ডিগ্রি। সেই জেদ থেকেই ডিগ্রি অভিযানে নামেন তিনি। শেষ ৩৫ বছরে একটিও রোববার ছুটি কাটাননি এই অধ্যাপক। ছুটির দিনগুলোকে তিনি কাজে লাগান প্রস্তুতি এবং পরীক্ষা দেওয়ার কাজে।

এই সাফল্যের জন্য স্ত্রীকে কৃতিত্ব দেন ভি এন পার্থিবান। তার মতে স্ত্রীর সমর্থন আর সহযোগিতা না থাকলে এটা কখনোই সম্ভব হতো না।  

আর সেই কৃতিত্ব তো দিতেই হবে। স্ত্রী যদি সারাদিন সময় দেওয়া, শপিংয়ে যাওয়া, বেড়াতে যাওয়া নিয়ে পার্থিবানকে বলতে থাকতেন, তাহলে পার্থিবানের এই ডিগ্রি অর্জনের নেশা অনেক আগেই জলাঞ্জলি দিতে হতো- এমন মত প্রতিবেশীদের। পার্থিবান দুই ছেলেমেয়েকে বড় করার দায়িত্ব স্ত্রী-র হাতে তুলে দিয়েছেন। মূলত পার্থিবানের স্ত্রী-ও অবশ্য কম যান না। পুরোদস্তুর সংসার করার পরও তাঁর ঝুলিতে আছে ন’টি ডিগ্রি। আর এ কারণেই তিনি পার্থিবানের ইচ্ছাকে মূল্যায়ন করতে পেরেছেন বলে মনে করেন বন্ধু-স্বজনরা।  

এক ছেলে, এক মেয়ে। তাঁরা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করে এমবিএম করে ফেলেছেন। তবু থামানো যাচ্ছে না পার্থিবানকে। এখনও নতুন নতুন ডিগ্রির জন্য আবেদন করে চলেছেন তিনি। জারি আছে পড়াশোনাও।

তবে পড়া মনে রাখতে গিয়ে অনেক সাধারণ জিনিষ ভুলে যান ভি এন পার্থিবান। কাছের মানুষ জনকেও অনেক সময় চিনতে পারেন না তিনি। মাঝে মধ্যে বাড়ির রাস্তাও গুলিয়ে ফেলেন। আসলে এক জীবনে মাথায় তিনি এত তথ্য জমা করেছেন যা সামলাতে হয়ত মগজকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার

সম্পর্কিত খবর