মৃত্যুর পরও তারা বর-কনে বেশে!

মৃত্যুর পরও বর-কনে তারা

মৃত্যুর পরও তারা বর-কনে বেশে!

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

মৃত্যুর পর বৃদ্ধ দম্পতিকে বর-কনে বেশে সাজানো হয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবড়ার কুমড়ো কাশীপুর এলাকার ভরতী নগরে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, স্বামীকে পরানো হয়েছে নতুন কিনে আনা কুচি দেওয়া রঙিন ধুতি ও পাঞ্জাবী, মাথায় সোলার টোপর। স্ত্রী-কেও সাজানো হয়েছে লাল পাড়ের বেনারসী, সঙ্গে চেলি ঘোমাটা, মাথায় সোলার মুকুট দিয়ে, পায়ে টকটক করছে লাল আলতা।

উভয়ের কপালেই চন্দনের টিপ, শরীরে সাদা ফুলের মালা। এরপর বাড়ির উঠোনেই কুলোতে ধান-দুব্যা সাজিয়ে একে একে তাদের বরণ করছেন এলাকার বাসিন্দারা। উলুধ্বনি আর শঙ্খধ্বনিতে গোটা এলাকা তখন মুখরিত। বরণ শেষে তাদের মরদেহ দাহ করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় মহাশ্মশানে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি জানায়, গত শুক্রবার রাতে নিউমোনিয়ায় আক্রন্ত মনিমোহন মন্ডলকে ভর্তি করানো হয় বারাসাত জেলা সদর হাসপাতালে। স্বামীর অসুস্থতার কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন তার স্ত্রী নিরুপমা মন্ডল। পরদিন শনিবার ভোরে হঠাৎ করেই সেরিব্রাল অ্যাটাকে আক্রান্ত হন নিরুপমা(৬৩)। তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া বারাসত হাসপাতালেই। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই বিকালের দিকে মৃত্যু হয় নিরুপমার। আর রাতের দিকে ওই একই পথের পথিক হন ৭৩ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী মনিমোহনও।  

স্ত্রীর মৃত্যুর কয়েকঘণ্টার ব্যবধানে স্বামীর এই মৃত্যুতে এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে। এরপর নিরুপমার ইচ্ছাতেই রোববার দুপুরের দিকে দুইজনকেই বিয়ের সাজে সাজিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় শেষকৃত্যের জন্য।  

ওই দম্পতির নিকটাত্মীয়রা জানায়, জীবদ্দশায় দম্পতির সম্পর্ক ছিল খুবই মধুর। দীর্ঘ ৪৭ বছরের দাম্পত্য জীবনে তাদের পরস্পরকে কখনও আলাদা থাকতে দেখা যায়নি। আর মরণেও তারা সহযাত্রী হলেন। চার মেয়ে ও এক ছেলের সুখের সংসার মনিমোহন-নিরুপমার।

মৃত দম্পতির বড় মেয়ে নীলিমা জানান, ‘আমার মা প্রায়ই বলতেন, গোটা জীবন বাবার সাথে একসঙ্গে কাটিয়েছি। তাই বাবার সাথে একসঙ্গে মরতে চান। ভগবান মায়ের সেই ইচ্ছাকে হয়তো পূরণ করেছে। ’ 

কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু সবার ভাগ্যে খুব একটা জোটে না। জানায় প্রতিবেশীরা।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর