বন্ধুকে বিয়ে করতে লিঙ্গ পরিবর্তন করলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের বাসিন্দা অনীক দত্ত।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, মডেলিং করতে গিয়ে কলকাতায় পরিচয় হয় জলপাইগুড়ির বাসিন্দা সাগ্নিক চক্রবর্তীর। এরপর তাদের মধ্য প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।
কিন্তু তা অসম্ভব। কারণ দুজনই পুরুষ।তাই অনীক ঠিক করলেন অস্ত্রোপ্রচারের মাধ্যমে লিঙ্গ পরিবর্তন করে ভালবাসার পাত্র সাগ্নিককে বিয়ে করবেন। সে মোতাবেক অস্ত্রোপ্রচার সম্পন্ন করলেন।
খবরে আরও জানা যায়, প্রথমে বাড়ি থেকে আপত্তি থাকলেও তাদের প্রেমের কাছে হার মানে দুই পরিবারের লোকজনেরা। গত রোববার জলপাইগুড়ির টাউন ক্লাবের ভাড়া করা বিয়ে বাড়িতে হিন্দু শাস্ত্র মতে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়েতে অ্যানির পরনে ছিল লাল বেনারসী, গলায় ও হাতে সোনার গহনা। অন্যদিকে হলুদ রঙের পাঞ্জাবী ও লাল রঙের ধুতি পরিহিত ছিলেন সাগ্নিক।
পাত্রী অ্যানি বালুরঘাটের একটি স্কুলের প্রাথমিক শিক্ষিকা, সাগ্নিক ময়নাগুড়ির একটি স্কুলে শিক্ষক।
তাদের প্রথম পরিচয়ের ব্যাপারে সাগ্নিক জানান, প্রায় আড়াই বছর আগে মডেলিংয়ের সূত্রে আমাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। পরে বন্ধুত্বের সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়। আমরা ঠিক করি উভয়েই সারা জীবন এক সঙ্গে থাকব।
বিয়ের স্বপ্ন পূরণের ব্যাপারে অ্যানি জানায়, সাগ্নিকের সঙ্গে একসঙ্গে থাকার ব্যাপারে ভেবেচিন্তেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিয়ের পর তা বাস্তবে পরিণত হলো। আমি আশা করব যে কোনো রকম সামাজিক বিভেদকে দূরে সরিয়ে রেখে মানুষ আমাদের বিয়েকে মেনে নেবে।
সাগ্নিকের বাবা সুব্রত চক্রবর্তী জানান, আমরা তাদের সম্পর্কের কথাটা জানতে পারি এবং আমি ভেবেছিলাম যে তাদের বিয়ে দেওয়াটা আমার কর্তব্য। এই ধরনের ভালবাসা ও বিয়ে সমাজে কিছুটা অগ্রহণযোগ্য। অনেকেই ভেবেছিলেন আমি হয়তো ছেলের বিয়েতে মত দিয়ে তার জীবনটা নষ্ট করে দিচ্ছি। আমাদের অনেক আত্মীয়-স্বজন এই বিয়েতে উপস্থিতও হননি। তবুও আমি তাদের ভালোবাসা ও বিয়েকে মেনে নিয়েছি।
সাগ্নিক ও অ্যানির বিয়েতে আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রায় দুই শতাধিক মানুষ। কনের পরিবারের দিক থেকে উপস্থিত ছিলেন অ্যানির মা প্রীতিরানী দত্তসহ আরও ২৯ জন সদস্য।
তাদের প্রেম ও বিয়ে সম্পর্কে প্রীতিরানী জানান, মেয়ের প্রবণতা দেখে প্রথম দিকে আমরা কিছুটা অবাক হয়েছিলাম। কিন্তু পরে তার সুখের কথা ভেবেই আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত বদল করি।
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)