আদালতের রায় অমান্য করে জমি দখল

‘পুলিশের সামনেই’ জমি দখল

আদালতের রায় অমান্য করে জমি দখল

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

রংপুরের পীরগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে, অদালতের রায় অমান্য করে জমি দখল করে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রংপুর আদালতে মামলা করা হয়েছে।

গ্রামবাসী জানান, প্রথমডাঙ্গা গ্রামের মৃত সেরাজ উদ্দিনের চার ছেলে মান্না গংদের বাড়ির পাশে ১২০৫, ১২০৬ ও ১২০৭ দাগে ৭২ শতকের মধ্যে ৩৮ শতক হামিদ ও হালিম মিয়ার ভিটা জমি রয়েছে (হামিদ মারা গেছে)। মূলত কাগজে-কলমে মান্নারা ৩ শতক জমির মালিক।

কিন্তু দখলকারীরা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে পুরো ৭২ শতকই দখল করে আসছিল। জমি গ্রাম্য সালিশে ফিরিয়ে না দিলে ২০০৭ সালে পীরগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে একটি বাটোয়ারা মামলা করেন হালিম। ওই মামলায় ২০১০ সালে বাদী হালিম ডিক্রি লাভ করেন। ওই ডিক্রি জারি মামলায় আদালত কমিশন নিয়োগ করে ২০১৬ সালের ৯ মে জমির দিক ও সীমানা নির্ধারণ করে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে জমির দখল হালিম বরাবর বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
এরপর হালিম মিয়া জমিতে বেড়া দিয়ে বিভিন্ন ধরনের গাছ ও ফসল লাগিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে দখল ভোগ করে আসছেন।

হঠাৎ গত ১১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের কর্মী দাবি করা সেলিমের নেতৃত্বে ও পুলিশের সহায়তায় জমিটি দখল করে নেয় মান্নারা। দখলকারীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র লাঠি, কুড়াল, কোদাল, বল্লম নিয়ে জমিতে ঢোকে। এ সময় জমির গাছ ও ফসল ধংস করা হয়। এতে প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি ভূমিদস্যুরা হালিমকে হত্যার হুমকি দেয়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা পুলিশ সদস্যরা হলেন- এসআই জানে আলম, আফজাল ও মাহমুদুর।

জানা গেছে, সেলিম দলিল লেখক হিসেবেও পরিচিত। সে জাল দলিল তৈরি করে বিভিন্নভাবে মানুষকে হয়রানি করে বলে অভিযোগ রয়েছে। হালিমের জমির বিষয়েও একটি জাল দলিল তৈরি করে থানা-পুলিশকে ম্যানেজ করেছে বলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জমির মালিক হালিম মিয়া বলেন, ঘটনার দিন পুলিশ ও সেলিম আমার কাছে আসে। বলে- ‘তোর জমির দলিল বের কর। তোর বাপ জমি কিনছিল? তুই কিসের জমি পাবি। ’

হালিম মিয়া জানান, এখন আমি খুবই নিরাপত্তাহীন অবস্থায় আছি। এমনকি দখলকারী সন্ত্রাসীরা নিজেদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে আমার উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। এর আগেও নিজেদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে আমাদের উপর মামলা করেছিল বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে সেলিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম। থাকতে থাকতেই মান্নারা জমি দখল করে নিয়েছে।

স্থানীয় শানেরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান (মন্টু) বলেন, সেলিমের কারণে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আমি অনেকবার তাকে অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে নিষেধ করেছি। কিন্তু সে শোনেনি। উল্টো দলের উপজেলা নেতৃবৃন্দের কাছে আমার বিরুদ্ধে নালিশ করেছে। এ ছাড়া একই দলের হওয়ায় সব সময় কিছু বলতে পারি না। এজন্য সেলিম কোনো স্থানে থাকলে আমি ওখানে থাকি না।

পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র বলেন, জমি দখলের বিষয়টি আমার জানা। কোনো ধরনের হতাহতের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য পুলিশ প্রথমডাঙ্গা গ্রামে গিয়েছিল।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর