'পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যালের গোডাউন না সরানো দুঃখজনক'

'পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যালের গোডাউন না সরানো দুঃখজনক'

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যালের গোডাউন না সরানো দুঃখজনক। চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আহতদের দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। আজ শনিবার সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে তিনি সেখানে পৌঁছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা মোবাইল কোর্ট বসিয়েও কারখানাগুলো অপসারণ করেছি।

কিন্তু সেগুলো আবার বসেছে। এগুলো দ্রুত সরিয়ে নিতে হবে। আমাদের নিজেদের সচেতন হতে হবে। এ ধরনের আগুন নির্বাপণে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে উৎসুক জনতা।
এসব ঘটনায় সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, এই ঘনবসতির এলাকায় যেন আর কেমিক্যাল না থাকে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এটা একটা বড় ধরনের দুর্ঘটনা যা আমাদের সবাইকে ব্যথিত করেছে। হতাহতদের জন্য শোক দিবস ঘোষণা করা হবে।

হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা একটি শোক দিবস ঘোষণা করবো। আজ ছুটির দিন আগামীকাল রোববার অফিস খুললে কেবিনেট সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে শোকের ঘোষণা দেয়া হবে।

তিনি বলেন, আগুনে দগ্ধদের চিকিৎসায় সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সর্বাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের আধুনিকায়নে আগুন দ্রুত নেভানো সম্ভব হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি আগুন নেভানোর জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছে।

আগুন নেভানোর কাজ বিঘ্নিত করার জন্য সংবাদকর্মীদের প্রতি দোষারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সংবাদ কর্মীদের নানা প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আগুন নেভানো ব্যাহত হয়েছে। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা।

বুধবার রাত ১০টার পর রাজধানীর চকবাজার এলাকার নন্দকুমার দত্ত সড়কের চুরিহাট্টা মসজিদ গলির চৌরাস্তায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে আগুন ভয়াবহ আকারে আশপাশের ৫টি বিল্ডিংয়ে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট ১৪ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর দুইটি হেলিকপ্টারও যোগ দিয়েছিল।

অগ্নিকাণ্ডে ৬৭ জনের প্রাণহানি ঘটে। তবে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে শনাক্ত হওয়া ৪৫ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।  

এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে ৯ জন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের আইসিউতে ও পোস্ট অপারেটিভে ভর্তি রয়েছেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. সামন্তলাল সেন জানান, আমাদের এখানে ১৪ জন এসেছিল। যার মধ্যে ৯ জনকে আইসিউতে ও পোস্ট অপারেটিভে রাখা হয়েছে।

 বাকিদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে ভর্তি থাকা ৯ জনকে আমরা ঝুঁকিমুক্ত বলবো না যতক্ষণ তারা হাসপাতালে থাকে। এ ৯ জনের সবার শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। যারা এসেছেন তারা প্রত্যেকেই পথচারী ও কেমিকেলের আগুনে দগ্ধ।


(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল)

সম্পর্কিত খবর