‌‘গায়ে আগুন দেওয়ার আগে তারা টয়লেটে লুকিয়ে ছিল’

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি

‌‘গায়ে আগুন দেওয়ার আগে তারা টয়লেটে লুকিয়ে ছিল’

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন দেওয়ার আগে দুজন ছাত্র ও দুজন ছাত্রী বোরকা পরে সাইক্লোন সেন্টারের টয়লেটে লুকিয়ে ছিলেন। তাঁরাই নুসরাতের শরীরে আগুন লাগিয়েছেন।

শনিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এমন দাবি করেছেন মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।

তিনি জানান, নুর উদ্দিনসহ কয়েকজন সিরাজ উদ দৌলার সঙ্গে দেখা করে নির্দেশ নিয়ে আসেন।

৫ এপ্রিল সকাল নয়টা থেকে সাড়ে নয়টার দিকে মাদ্রাসার কাছে থাকা হোস্টেলের পশ্চিম অংশে তাঁর মূল পরিকল্পনা করেন। সেখানেই নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। অধ্যক্ষকে আটক করায় আলেম সমাজকে হেয় করা হয়েছে বলে মনে করেন তাঁরা। এই হেয় করা ও প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখানের ক্ষোভ থেকে নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার সিদ্ধান্ত নেন।
এ ঘটনায় দুজন মাদ্রাসাছাত্রী ও তিনজন ছাত্র জড়িত। এঁদের একজন মাদ্রাসাসংলগ্ন সাইক্লোন সেন্টারে তিনটি বোরকা ও কেরোসিন শাহদাতকে দিয়েছেন। পরে দুজন ছাত্র ও দুজন ছাত্রী বোরকা পরে সাইক্লোন সেন্টারের টয়লেটে লুকিয়ে ছিলেন। তাঁরাই নুসরাতের শরীরে আগুন লাগিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে গিয়ে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার যায় নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের উপর কে বা কারা মারধর করেছে এমন সংবাদ পেয়ে তিনি ওই ভবনের তৃতীয় তলায় যান। সেখানে মুখোশ পরা ৪/৫জন ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। সে অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় নুসরাতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে বুধবার রাত সাড়ে নয়টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত।

এর আগে ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে এনে ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তাঁদের মধ্যে পুলিশের হাতে আটক সাতজন।

আরও পড়ুন: ‘তোরা জানিস না, উনি আমার কোন জাগায় হাত দিয়েছে?’

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর