কোটা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

কোটা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছাত্র আন্দোলন ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার ইস্যু। তবে কোটা সংস্কার নিয়ে এখনো কার্যত অন্ধকারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। দেশের প্রায় সবকটি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের লাগাতার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গেল ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদ অধিবেশনে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ওই সময় তিনি বলেছিলেন, কোটা নিয়ে যখন এতকিছু, তখন কোটাই থাকবে না।

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের ‘অন্যভাবে’ চাকরির ব্যবস্থা করা হবে।

প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেছেন, তারা কোটা সংস্কার চান (৫৬ ভাগ থেকে ১০ ভাগে নামিয়ে আনা), বাতিল নয়। বিশিষ্টজনেরাও কোটা একেবারেই বাতিল নিয়ে দ্বিমত পোষণ করছেন।

গেল রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সংসদ ভবনে এক বৈঠকে কোটার বিষয় নিয়ে আলোচনা করে।

ওই সময় প্রধানমন্ত্রী বিদেশে অবস্থান করছিলেন। সভায় বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত কথা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় আলোচনা।

পরে ওই বৈঠকে অংশ নেয়া সদস্যরা কোটা ইস্যু নিষ্পত্তি নিয়ে ভিন্ন মত জানিয়েছেন। কমিটির কিছু সদস্য সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি একেবারে বাতিল না করে সংস্কারের পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

তারা জানান, বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে কোটা পদ্ধতি সহজীকরণের বিষয় আলোচনা হয়েছে। দেশের প্রতি, ইতিহাসের (মুক্তিযুদ্ধ) প্রতি, আঞ্চলিকতার প্রতি এবং পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা কোটা রাখার পক্ষে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ২৮তম ওই বৈঠকে কেউ কেউ কোটা সম্পূর্ণ বাতিল না করে সংস্কারের পক্ষে মতও দেন। যদিও অনেকে সংসদে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যকে কোট করেছন।

কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিফুর রহমান এমপির সভাপতিত্বে সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক, এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, খোরশেদ আরা হক এবং জয়া সেন গুপ্তাসহ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ওই বৈঠকে জনপ্রশাসন সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, কোটা পদ্ধতি নিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন। তিনি যেভাবে নির্দেশনা দেবেন, মন্ত্রণালয় কমিটি করে সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আগেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কোটা সংস্কার নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছিল। কিন্তু পুরো কোটা পদ্ধতিই বাতিল করায় এ ব্যাপারে এখন আর কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না মন্ত্রণালয়। এখন প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট ঘোষণার দিকে সবাই তাকিয়ে আছেন।

অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর