পর্যটক শূন্য রাঙামাটির পর্যটন স্পট

পর্যটক শূন্য রাঙামাটির পর্যটন স্পট

ফাতেমা জান্নাত মুমু  • রাঙামাটি

রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্রগুলো এখন পর্যটন শূন্য। প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে রাঙামাটিতে পর্যটকের উপচেপড়া ভিড় থাকলেও একেবারেই ভিন্ন চিত্র। দেশের বৃহত্তম জেলাটির পর্যটন স্পটগুলোতে ভ্রমণপিপাসুদের আনাগোনা নেই বললেই চলে। পাহাড়ে ঘেরা রাঙামাটিতে বেশ কয়েকটি পর্যটন স্পট থাকলেও তা এখন বিরান।

 

গেল ১২জুন পাহাড় ধসের ঘটনার পর পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স, ডিসি বাংলো, পলওয়েল লাভপয়েন্ট, সুখী নীলগঞ্জসহ অন্যান্য স্পট একদম ফাঁকা। হাতেগণা স্থানীয় তরুণ-তরুণী ও শিশু-কিশোরকে ওই পর্যটন স্পটগুলোতে চোখে পড়লেও নেই কোনো দেশি-বিদেশী পর্যটক। তাই কর্মহীন অলস সময় কাটাচ্ছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

news24bd.tv

রাঙামাটিতে রয়েছে সবুজ পাহাড়ের নান্দনিক সৌন্দর্য।

আর পাহাড়ের ভাঁজে ভাজেঁ আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে শত শত ঝর্ণা। এসব দৃশ্য যে কাউকে মুগ্ধ করে।  

একটা সময় ঈদ, পুজা কিংবা অন্যান্য উৎসবে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে থাকতো দেশি-বিদেশিদের উপচেপড়া ভিড়। পর্যটকের আগমনকে কেন্দ্র করে পাহাড়ে পাহাড়ে গড়ে উঠেছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র। তার মধ্যে আনন্দ ও মনোরঞ্জন জোগানোর নৈসর্গিক আবেশ ও দর্শনীয় স্থান হচ্ছে- ডিসি বাংলো, পেদাটিংটিং,শুভলং ঝর্ণা, টুকটুক ইকো ভিলেজ, সুখী নীলগঞ্জ, বরগাঙ্গ, উপজাতীয় জাদুঘর, রাজবন বিহার, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফের স্মৃতিসৌধ ও কাপ্তাই-আসামবস্তি সড়কসহ আরো অনেক পর্যটন স্পট।

এগুলোকে কেন্দ্র করে রাঙামাটি পর্যটন হয়ে উঠেছে পার্বত্যাঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাত। আধুনিক হোটেল-মোটেলের পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষও পর্যটন কেন্দ্রিক ব্যবসায় জড়িয়েছে। তাই পর্যটক আসলেই প্রাণ ফিরে পান পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। কিন্তু প্রকৃতির নিষ্ঠুর আচরণে সব আশাই যেন ভেস্তে গেছে।  

news24bd.tv

বৃষ্টি দেখলে পাহাড় ধসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে রাঙামাটিতে। সে আতঙ্কে পর্যটক আসেনা বলে জানালেন রাঙামাটি নৌ-যান ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. রমজান আলী। তিনি বলেন, ‘গত দেড় বছর ধরে রাঙামাটিতে পর্যটকদের ভিড় দেখা যায়না। আগের মত প্রাণবন্ত হয়ে উঠেনা কাপ্তাই হ্রদও। তাই ভাড়াও হয়না নৌ-যানগুলো। পর্যটক না আসলে বেকার থাকে ট্যুরিস্ট বোর্ট চালকরা। ’

একই অভিযোগ রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার সূর্যসেন ত্রিপুরার। তার ভাষ্য, পর্যটক না থাকলে রেস্টুরেন্টগুলো খালি পড়ে থাকে। সারাদিন অলসতায় সময় কাটে। ইতোমধ্যেই পর্যটন ব্যবসায় ধস নেমেছে।  

news24bd.tv

এ ব্যাপারে রাঙামাটি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্সর ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া জানান, পর্যটকদের বরণ করতে রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশন প্রস্তুত ছিল। আশা করেছিলাম এবার ঈদের ছুটিতে রাঙামাটিতে পর্যটকের ঢল নামবে। কিন্তু পাহাড় ধসের আতঙ্কের কারণে অনেক পর্যটক বুকিং বাতিল করেছে। তবে স্থানীয় ও আশেপাশে জেলা থেকে কিছু সংক্যক পর্যটক এসেছে। ’

প্রসঙ্গত, যান্ত্রিক ও একঘেষে জীবন ছেড়ে নীরব-নিরিবিলি পরিবেশে প্রশান্তি লাভে প্রতি বছর রাঙামাটিকে বেছে নেন পর্যটকরা। কিন্তু টানা বর্ষণ, বন্যা ও পাহাড় ধসের কারণে জেলাটি এখন পর্যটন শূন্য। ফলে ঝড়টা এখন জেলার পর্যটন শিল্প ও ব্যবসায়িক অঙ্গনের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে।  

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, দীর্ঘ নীরবতা ভেঙে এ অঞ্চলটি শিগগিরই পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠবে।

মুমু/অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর