টিকটকের নেপথ্যে জন্মের ১৯ বছর পর যমজ দুই বোনের সাক্ষাৎ!

যমজ দুই বোনের জন্মের সময় বাবা- মায়ের ‘বিচ্ছেদ’, এরপর বড় হয়ে দেখা হওয়া; এসব যেন সবই সিনেমার গল্প। কিন্তু সিনেমার গল্পই যেন এবার বাস্তবে রূপ নিয়েছে। পর্দার ‘সীতা-গীতা’র দেখা মেলেছে বাস্তব জীবনে।  

তাদের নাম অ্যামি খাভিশা ও অ্যানো সারতানিয়া। ভাইরাল হওয়া এক টিকটক ভিডিওতে তারা একজন আরেকজনকে খুঁজে পেয়েছেন ১৯ বছর পর। আরও মজার বিষয় হলো, তারা জর্জিয়ার একই শহরে বসবাস করতেন।

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদেনে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বাস্তবের এই ‘সীতা-গীতার’ গল্প শুরু হয় ২০০২ সালে। সে বছরের ২০ জুন অ্যামি-অ্যানোর জন্মদাত্রী মা আজা শোনি জর্জিয়ার কিরতিশখি গ্রামে তাদের জন্ম দেন। জন্মদানের পর বেশকিছু জটিলতায় শোনি কোমায় চলে যান। আর তাদের বাবা গোচা গাখারিয় অ্যামি ও অ্যানোকে দুটি আলাদা পরিবারে বিক্রি করে দেন। মূলত তাদের পরিবারে আরও তিনটি সন্তান থাকায় এমন সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

তবে ২০২১ সালে টিকটক ভিডিও দেখে খুঁজে পাওয়ার আগেও একবার নিজেদের খুঁজে পেয়েছিলেন তারা। ১২ বছর বয়সে অ্যামি তার প্রিয় টিভি শো ‘জর্জিয়াস গট ট্যালেন্ট’ দেখছিলেন। শোতে অ্যামি একটি মেয়েকে দেখেতে পায় যার সঙ্গে তার চেহারার মিল আছে। তবে শুধু মিল বললে ভুল হবে, চেহারা ছিল অবিকল তারই মতো। কিন্তু অ্যামি তখন জানত না যে, নাচতে থাকা মেয়েটিই তার বোন।  

এর সাত বছর পর ২০২১ সালে অ্যামি তার চুলের রং নীল করে ও আইব্রো ফুটিয়ে টিকটকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। তবে সেই ভিডিও অ্যানোর এক বন্ধু তাকে পাঠিয়ে তার চুলের রং পরিবর্তন করার বিষয়ে জানতে চান। কিন্তু অ্যানো তখন জানান, ভিডিওর মেয়েটি তিনি নন।   পরে মেয়েটির পরিচয় জানার জন্য অ্যানো ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করেন। আর এতেই ঘুরে যায় মোড়। ভিডিওর সেই মেয়ে অ্যামির ফোন নম্বর পেয়ে যান অ্যানো। এরপর তাদের যোগাযোগ হয়। প্রথমবারের মতো জানতে পারেন যে, তারা দুজন আসলে যমজ বোন।

২০২১ সালে জর্জিয়ার রাজধানী তিবিলিসির রুস্তাভেলি সেতুতে দেখা হয় দুই বোনের। ১৯ বছর আগে তাদের বিচ্ছেদের পর প্রথমবারের মতো একত্রিত হন অ্যামি ও অ্যানো। জর্জিয়ার হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া আরও অনেক শিশুর মধ্যে তারাও ছিলেন।  

বিবিসি জানিয়েছে, যমজ দুই বোন তাদের দত্তক নেয়া পরিবারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চান। তাদের উভয়েরই পালক মা জানান, তারা যখন বাচ্চাদের দত্তক নিয়েছিলেন তখন বলা হয়েছিল তারা ‘অবাঞ্চিত’ শিশু। টাকার বিনিময়ে তারা ডাক্তারের কাছ থেকে অ্যামি ও অ্যানোকে কিনে নেন। তবে তারা কেউই জানতেন না তাদের মেয়েদের যমজ বোন আছে।

news24bd.tv/কেআই