‘মশক নিধন’ কার্যক্রমে এসে উল্টো মশার কামড়ে অতিষ্ঠ মন্ত্রী-মেয়র

রাজধানীর উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর খালপাড়ে উত্তর সিটি করপোরেশনের ‘মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম’ পরিদর্শনে এসে উল্টো মশার কামড়ে নাজেহাল হয়েছে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

এসময় তাদের সঙ্গে থাকা রাজউকের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞাসহ ঢাকা উত্তর সিটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও বেশ বেগ পেয়েছেন মশার অত্যাচারে।

গতকাল বুধবার উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর খালপাড়ের এক অংশে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করতে গিয়ে এমন বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। খালের উপরের কচুরিপানা একটু নাড়া দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অগণিত মশা ওড়া-উড়ি শুরু করে।  

পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রম ঘুরে দেখে মঞ্চে উপস্থিত হন মন্ত্রী, মেয়রসহ অন্যরা। স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর বক্তব্য শুরুর আগে আগে একজন মশা মারার ওষুধ নিয়ে এসে স্প্রে করেন। এরপর তিনি যখন বক্তব্য শুরু করলেন, মেয়র আতিককে তখন গায়ে, মাথায় বসা মশা তাড়াতে দেখা যায়। অন্য কর্মকর্তারাও একটু পর পর হাত-পা নাড়াচ্ছিলেন। মন্ত্রীর বক্তব্যের পর কয়েকটি ফগার মেশিন নিয়ে আসেন ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। তারা ওই এলাকায় মশা তাড়াতে ধোঁয়া দিতে থাকেন।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি লাইভ ভিডিওতে মন্ত্রী, মেয়রসহ অন্যদের হাত দিয়ে মশা তাড়াতে দেখা গেছে। কেউ কেউ মশার কামড় দেওয়া স্থানে হাত দিয়ে চুলকাচ্ছিলেন। মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা উত্তর সিটির একাধিক কর্মকর্তা।

এদিকে মশার কামড় নিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর বক্তব্য শেষে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা সবাই এডিস নিয়ে বেশি আতঙ্কিত। কারণ, এডিস মশার কামড়ে আক্রান্ত রোগীরা মারা যান। সে ক্ষেত্রে বছরের প্রথম থেকে এ নিয়ে বলেছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই বিষয়টি নিয়ে তিনি সতর্ক।

তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন মশা নিধনের চেষ্টা করবে জনগণের সহযোগিতা নিয়ে। নিধন যতটুকু করতে পারবে করবে। তারপরও মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত হলে চিকিৎসা করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

অনুষ্ঠানে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, এডিস মশার জন্য যার যার ঘর, অফিস-আদালত তাকে দায়িত্ব নিতে হবে। আমার কাছে কিন্তু অসম্ভব, কারও বাড়ির ছাদে পানি জমে আছে কি না, তা দেখা। এটি এডিস মশার জন্য সবাইকে সামাজিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি সিটি করপোরেশন হট স্পটগুলোয় চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিচ্ছে। এডিস মশা থেকে বাঁচার জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পাড়ায়, মসজিদে, মন্দিরে, চার্চে আলাপ করতে হবে যার যার এলাকা পরিষ্কার করা জন্য।

মেয়র বলেন, ‘গুলশান-বারিধারার মতো লেকে মশার জন্ম হচ্ছে। শুধু সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে মশা নিধন অসম্ভব ব্যাপার। সরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে এগিয়ে আসতে হবে। যে খালে আজ কাজ করা হচ্ছে, সেটি রাজউক ও ওয়াসার খাল। অনেকবার খালটিকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে দিতে বলেছি। রাজউককে বলেছি, ওয়াসাকে বলেছি, কিন্তু কেউ পরিষ্কারে এগিয়ে আসেনি। নিজেদের মধ্যে এমন চলতে থাকলে শেষ পর্যন্ত জনগণ কষ্ট পাচ্ছে। যত দিন লাগে সিটি করপোরেশন এ খাল পরিষ্কার করে দেবে।