সৌরঝড়ের ঘটনায় ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে পৃথিবী

সূর্যের পৃষ্ঠে মাঝেমধ্যে ভয়াবহ মাত্রায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তখন মহাকাশের লাখ লাখ মাইল এলাকাজুড়ে বিশালাকার তেজস্ক্রিয় শিখা ছড়িয়ে পড়ে। এই শিখার তাপমাত্রা লাখো ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায়। এই শিখা মূলত চার্জযুক্ত ইলেকট্রন, প্রোটন কণিকার স্রোত যা আলোর বেগে ছুটে চলে। এ ছাড়া এর মধ্যে থাকে প্রচণ্ড শক্তিশালী বিভিন্ন রশ্মি। সূর্য থেকে শক্তিশালী তেজস্ক্রিয় বিকিরণকে সোলার ফ্লেয়ার বা সৌরশিখা বলা হয়।  

যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টারের (এসডব্লিউপিসি) বিশ্লেষণে দেখা যায়, সূর্য থেকে সৌরশিখা নির্গত হয় সেকেন্ডে ৯৭৩ কিলোমিটার বেগে। সূযের্র এই চার্জযুক্ত কণিকাগুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের আয়নোস্ফিয়ারের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটায়। তখন হঠাৎ করে কিছু সময়ের জন্য পৃথিবীব্যাপী রেডিও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, এ ছাড়া রাডার যোগাযোগ ব্যবস্থাও কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়।  

বর্তমানে সৌর চক্রের মধ্যে সবচেয়ে প্রতিক্রিয়াশীল অবস্থায় রয়েছে সূর্য। প্রতি ১১ বছর সময়কালে এমন ঘটনা ঘটে থাকে। যেখানে এর চৌম্বক ক্ষেত্র একটি চক্রের মধ্য দিয়ে যায়। এর অর্থ হলো সূর্যের উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর মধ্যকার চৌম্বক ক্ষেত্র পরস্পর স্থান পরিবর্তন করে। এ ঘটনায় সূর্যের উত্তর এবং দক্ষিণ মেরু ফের একই অবস্থানে ফিরে আসতে আরও ১১ বছর সময় লাগে।  

এই সময়কালে, সূর্য অনেকগুলো সোলার ফ্লেয়ার বা সৌরশিখা ছাড়ে যা পৃথিবীর স্বাভাবিক অবস্থাকে ব্যাহত করার ক্ষমতা রাখে। স্পেস ডটকম-এর তথ্য অনুযায়ী, মাত্র কয়েকদিন আগে সানস্পট অঞ্চল এআর-৩৬৬৩ থেকে দুটি বিশাল সৌরশিখা নির্গত হয়েছে এবং এতে পৃথিবী সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে (ফায়ারিং লাইনে) রয়েছে।  

সৌরশিখা প্রথম নির্গত হয় ২ মে এবং এটি একটি এক্স-ক্লাস শ্রেণির প্রজ্জ্বলন ছিল, যা সৌর শিখার সবচেয়ে শক্তিশালী শ্রেণির একটি। এটি অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং চীনের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে শর্টওয়েভ রেডিও নেটওয়ার্কে বিঘ্ন ঘটায়। দ্বিতীয় সৌরঝড়টি হয় ৩ মে যার বিস্ফোরণের মাত্রা ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এম-এক্স ফ্লেয়ার শ্রেণির।

সৌর পদার্থবিদ কিথ স্ট্রং মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্স দেয়া বার্তায় বলেন, 'এক্স ফ্লেয়ার' সানস্পট অঞ্চল এআর-৩৬৬৩ থেকে এক্স১.৭ পরিমাণ শিখা তৈরি করেছে, যা সূর্যের এই চক্রে এখন পর্যন্ত ১১তম বৃহত্তম শিখা। এটি দেখতে চোখধাঁধানো শিখা যা মোট ২৫ মিনিট স্থায়ী ছিল।  

সূত্র :  এনডিটিভি।

news24bd.tv/aa