বাবার রহস্যজনক মৃত্যুর আধাঘণ্টা পর মেয়েরও আত্মহত্যা

নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর উকিলপাড়ায় বাবার রহস্যজনক মৃত্যুর আধাঘণ্টা পর গলায় ফাঁস দিয়ে আইন কলেজে পড়ুয়া এক মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।

মৃত নরেশ চন্দ্র দে (৫০) নোয়াখালীর পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের উকিল পাড়ার বাসিন্দা। আর আত্মহত্যা করা তার মেয়ের নাম তার তিশা দে (১৯)।  

জানা গেছে, মৃত নরেশ ও স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিরোধ ও পরকীয়ার জের ধরে স্থানীয়ভাবে একাধিক বৈঠক হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এটি কি আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিতভাবে খুন, এ নিয়ে তাদের মনে নানা প্রশ্ন আছে। তাদের দাবি, সঠিক রহস্য উদঘাটনে পুলিশ সঠিক জিজ্ঞাসাবাদে হয়তো বেরিয়ে আসতে পারে মূল রহস্য।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দুপুরের দিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এর আগে, গতকাল বুধবার (৫ জুন) সকালে সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে নোয়াখালীর পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের উকিল পাড়ার নরেশ চন্দ্র দের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।     

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মারা যাওয়া নরেশ চন্দ্রের মেয়ে তিশা ফেনীর একটি আইন কলেজে পড়ত। পড়ালেখা অবস্থায় সেখানে একটি মুসলিম ছেলেকে ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করে সে। বিষয়টি তার বাবা জানতে পেরে তাকে ফেনী থেকে নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এ নিয়ে মেয়েকে বুঝানোর অনেক চেষ্টা করেন বাবা। সে যেন তার স্বামীর সঙ্গে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে। কিন্তু মেয়ে তার স্বামীর পক্ষে অনড় ছিল।  

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মৃত নরেশের ছোট ছেলে স্কুলে যাওয়ার সময় বাবার কাছে টাকার জন্য গেলে দেখে, তার বাবার নিথর দেহ কক্ষে পড়ে আছে। আশে-পাশে রক্ত। ডায়ালাইসিসের ফিস্টুলার স্থান থেকে রক্ত বের হচ্ছে। পরে তার চিৎকার শুনে পরিবারের অন্য সদস্যরা এগিয়ে আসে। তিশা বাবার এ অবস্থা দেখে পরিবারের সদস্যদের অগোচরে আলাদা একটা কক্ষ গিয়ে দরজা বন্ধ করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেয়। পরে পরিবারের সদস্যরা দরজা ভেঙে তার মরদেহ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল সম্পন্ন করে।     

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, তবে আমার কাছে বিষয়টি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। নরেশ কিডনি রোগী ছিলেন। তিনি বাসায় ডায়ালাইসিস করতেন। তার মেয়ে ফেনী কলেজে পড়ত। সেখানে একজন মুসলিম ছেলেকে ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করে। বিষয়টি তিনি ভালোভাবে নেননি। এ জন্য মেয়েকে ফেনী থেকে নিয়ে আসেন।  

দুটি মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে বলেও জানা সুধারাম থানার ওসি।

news24bd.tv/SHS