<h1 id="firstHeading" class="firstHeading mw-first-heading" style="color: var(--color-emphasized,#000); font-weight: normal; margin: 0px; padding: 0px; overflow: hidden; border: 0px; font-size: 1.8em; line-height: 1.375; font-family: 'Linux Libertine', Georgia, Times, 'Source Serif Pro', serif; overflow-wrap: break-word; flex-grow: 1; background-color: #ffffff;"><span class="mw-page-title-main">ঈদ আয়োজন</span></h1>

কাজী জহিরুল ইসলামের কবিতাগুচ্ছ

বাঁশি তুমি কী সেই দূরের বাঁশি পাথর-গৃহে আজও নীল কষ্টে বাজো? আমিও তো মধ্যরাতে হঠাৎ বলি, আসি।   চিকন বাঁকা বাঁশের বাঁশি ছিদ্র গোটা সাত ছয়টি ঢাকা ছয় আঙ্গুলে একটি রেখেছিলাম খুলে এক ফুটোতে আওয়াজ তুলে করতো বাজিমাৎ। নষ্ট রাতে হঠাৎ বাঁশি বাজল অকস্মাৎ।   পিরিতি গতর পাতিয়া তুমি শুয়ে আছো ধলেশ্বরী গাঙের লাহান সেই বুকে পাতি আমার প্রকান্ড কান। শুনি গান, উজানের বেমক্কা ঢেউয়ে ভেসে আসে পিরিতের নয়া সাম্পান। আমারে নেয় না সে এমন পাষাণ। জননী সর্বংসহা নদী স্তন্য দিয়া হাজার বছর যারে রাখিল বান্ধিয়া সে কেন করে আজ ডাঙা-সন্ধান?     কর্ণফুলি সভ্যতার নাকের ওপর দাঁড়িয়ে তুমি রোদ খাও? তুমি আমার বোধ খাও। সমৃদ্ধির বৃষ্টি দিলে? চোখের আগুন ভিজিয়ে তুমি নীল পাথরের দৃষ্টি দিলে। আমি এখন অন্ধ, বধির নিঃশব্দে জল মাপি রোজ পূর্ব নদীর। নদীর ঢেউয়ে দুলি বুকের ভেতর হু হু কাঁদে দূরের কর্ণফুলি।   স্নানঘর শব্দগুলো নীরবতার ঠান্ডা জলে অক্ষরেরা সাঁতার কাটে জলের নিচে ছন্দ এবং দ্বন্দ্ব নিয়ে সাবান ঘষি জলকলে গান, যুদ্ধ দিনের বিস্মৃত সুর জল গড়াল আর কতদূর? আর কতদূর? ঠান্ডা জলে নষ্ট সময়, কষ্ট ভেজাই চুলের শেকড় গনগনে খুব বন পুড়ে যায় শব্দগুলো জলের নিচে হচ্ছে শীতল মনোদ্বৈরথ থমকে আছে গুমট গৃহ জিহ্বাটাও হচ্ছে অবশ ও নিঃস্পৃহ। কাচের দেয়াল ঝাপসা ছবি অন্যপাশে যাচ্ছে গলে বদ্ধ পুকুর বিরান বাজার মাৎস্য-চোখ উঠছে জেগে নগ্ন দেহে স্নানঘরে জল-সাবান খেলা ছুটির দিনে মল্লিকা ফুল যাচ্ছে ঝরে এ-আশ্বিনে।   বালিকাবেলা পাড়ার ছেলের তাড়া খেয়ে তারা আমাকে একতাড়া নোটের বুড়ো শকুনের ঠোঁটের কাছে রেখে এলো; শকুণটা রোজ আনন্দের ভোজ সারে আমার বালিকাবেলায়। পাড়ার কাটা গাল বখাটে লম্বা চুল খ্যাপাটে পিছু পিছু স্কুলপথ সিগারেট ধোয়া ছোড়া, একদিন পরিপাটি গোলাপের এক তোড়া হয়তো বা দুমড়ানো খামে মোড়া মলিন বুকের ঘামে কিছু অস্পস্ট কথা; এখন হঠাৎ নামে এক পশলা উজ্জ্বল বৃষ্টি এই এঁটো-বালিকাবেলায়। হায়, সে-ই তো ভালো ছিল, না হয় কালো ছিল রঙ তার, আলো ছিল দুচোখের গহ্বরে, এই হীরের কবরে আছে এক অজগর সাপ আমার সকল পাপ গিলে খায়, কচলায় সারারাত মৃত কৈশোর।     হৃদয় ছিল নীল হৃদয় ছিল নীল পা বাড়াবো? রাস্তাটা পিচ্ছিল। বৃষ্টি ছিল খুব কিন্তু কোথাও মেঘ ছিল না, দুঃখ দেবে ডুব। সবুজ ছিল, বন ছিল না তবু সবাই বনেই গেল, আমায় নিলো না। হৃদয় ছিল নীল একটি শুধু জানলা ছিল, হাসছিল খিলখিল। বিকেল ছিল ছায়া ছায়া টলমলে দুই নদী, গভীর মায়া। পাখি ছিল, কন্ঠে ছিল গান সন্ধ্যা ছিল। শোকের শহর, বিষণ্ন-নিস্প্রাণ। হৃদয় ছিল নীল স্লোগান ছিল, মুষ্ঠিতে মিছিল।  

কাজী জহিরুল ইসলামের নিউ ইয়র্কে থাকেন। জন্ম বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। আশির দশক থেকে লিখছেন কবিতা, গল্প, ছড়া উপন্যাস। এ যাবৎ প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ৪৯, এর মধ্যে ১৯টি কবিতার বই। ইওরোপের 'জাস্ট ফিকশন এডিশন' বের করেছে 'পোয়েমস অব কাজী জহিরুল ইসলাম'। তিনি জাতিসংঘ সদর দফতরের একজন আন্তর্জাতিক কর্মকর্তা।

news24bd.tv/ডিডি