আল্লাহর ভয়ে ফেরেশতারা যা করে

ফেরেশতারা আল্লাহর অনুগত সৃষ্টি। তাদের সামনে আল্লাহর শক্তি ও নিদর্শন অধিক স্পষ্ট হওয়ায় তারা মহান আল্লাহকে সবচেয়ে বেশি ভয় করে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা বলে, দয়াময় আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন। (বরং এ থেকে) তিনি পবিত্র, মহান! তারা (ফেরেশতারা) তাঁর সম্মানিত বান্দা।

তারা আগ বাড়িয়ে কথা বলে না, তারা তো তাঁর আদেশ অনুসারেই কাজ করে থাকে। তাদের সামনে ও পেছনে যা কিছু আছে তা তিনি অবগত। তারা সুপারিশ করে শুধু তাদের জন্য, যাদের প্রতি তিনি সন্তুষ্ট এবং তারা তাঁর ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত। ’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ২৬-২৮)

উল্লিখিত আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা সাদি বলেন, ‘ফেরেশতারা আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকে। তারা আল্লাহর পরাক্রমকে এবং ভীত হয়ে তার সামনে মাথানত করে দেয়। ’ (তাফসিরে সাদি, পৃষ্ঠা ৫২২)

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা ভয় করে তাদের ওপর তাদের প্রতিপালককে এবং তাদের যা আদেশ করা হয় তা তারা করে। ’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৫০)

ফেরেশতারা আল্লাহর একান্ত অনুগত। সৃষ্টিগতভাবেই তারা আল্লাহর অনুগত। ফলে আল্লাহর আনুগত্য করতে তাদের কোনো কষ্ট হয় না। মানুষের মতো তাদের ভেতর কুপ্রবৃত্তিও সক্রিয় নেই। সম্ভবত এ কারণেই কোনো কোনো আলেম বলেন, ফেরেশতারা আল্লাহর ‘মুকাল্লাফ’ (যার জন্য শরিয়তের বিধান মানা আবশ্যক) নয়। আনুগত্য করা ও না করার ভিত্তিতে আল্লাহ যে পুরস্কার ও শাস্তি ঘোষণা করেছেন তা ফেরেশতাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। যদিও তারা সব সময় আল্লাহর আনুগত্য করে এবং কখনো অবাধ্য হয় না।

আল্লাহর ভয়ে ভীত হলে ফেরেশতারা কী করে? তারা কাঁপতে থাকে এবং নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা বন্ধ করে দেয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যাকে অনুমতি দেওয়া হয় সে ছাড়া আল্লাহর কাছে কারো সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না। পরে যখন তাদের (ফেরেশতাদের) অন্তর থেকে ভয় দূর হবে, তখন তারা পরস্পর আলোচনা করবে, তোমাদের প্রতিপালক কী বললেন? তদুত্তরে তারা বলবে, যা সত্য তিনি তা-ই বলেছেন। তিনি সমুচ্চ, মহান।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন আল্লাহ আসমানে কোনো নির্দেশ জারি করেন, ফেরেশতারা আল্লাহর ভয়ে তাদের পাখা দিয়ে আঘাত করতে থাকে, যেভাবে পাথরের ওপর শেকল দিয়ে আঘাত করা হয়। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৯৫৪)

লেখক: মো. আবদুল মজিদ মোল্লা

news24bd.tv/DHL