পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটিতে আলেম অন্তর্ভুক্তির দাবি হেফাজতের

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপিত জাতীয় পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটিতে কোনো আলেম না থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করে আলেমবিহীন এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছে হেফাজতে ইসলাম।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) জামিয়া মাদানিয়া বারিধারায় আমীরে হেফাজত আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী এর সভাপতিত্বে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর খাস কমিটির এক বৈঠক উপরোক্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বৈঠকে বলা হয়, 'সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে কোনো বিজ্ঞ আলেমের উপস্থিতি না দেখে আমরা যার পরনাই বিস্মিত হয়েছি। কারণ, স্বৈরাচার-ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় পাঠ্যপুস্তকের অসঙ্গতি ও বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে ওলামায়ে কেরাম ব্যাপকভাবে সোচ্চার ছিলেন। অথচ আজ এই নতুন বাংলাদেশে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটি থেকে আলেমসমাজকে বঞ্চিত করে আবারও বিতর্কের পথ বেছে নেয়া হলো। আলেমবিহীন এই বৈষম্যমূলক কমিটি আমরা জোরালভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। '

নেতৃবৃন্দ বলেন, ভারতের সেবাদাস কুখ্যাত স্বৈরশাসক হাসিনা এদেশের শিক্ষাব্যবস্থা প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিল। এমনকি বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে ভারতের অনুগত করে  গড়ে তোলার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে জাতীয় পাঠ্যপুস্তকে মুসলিমবিদ্বেষী হিন্দুত্ববাদী বয়ান ও ইতিহাস ঢোকানো হয়। এ বিষয়ে দেশের ওলামায়ে কেরাম তখন উচ্চকণ্ঠে প্রতিবাদ জানিয়ে জনসচেতনতা তৈরি করেছিল। এছাড়া পাঠ্যপুস্তকে ইসলামবিরোধী কিছু কন্টেন্ট এখনো বিদ্যমান। সে কারণে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটিতে বিজ্ঞ আলেমের উপস্থিতি অপরিহার্য। তাই ওই কমিটিতে অতিসত্বর একাধিক প্রসিদ্ধ বিজ্ঞ আলেমকে অন্তর্ভুক্ত করে শিক্ষা সংস্কার কমিটি পুনর্গঠন করার জন্য শিক্ষা উপদেষ্টার প্রতি জোর দাবি জানানো হয়।

হেফাজত নেতৃবৃন্দ বলেন, গত জুলাই-আগস্ট মাসের গণ-অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারের পতনে এদেশের আলেম সমাজ ও মাদরাসা ছাত্রদের অবদান উল্লেখযোগ্য। আন্দোলনে শীর্ষ আলেমদের দিকনির্দেশনাও স্মরণীয়। সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণে এবং নজিরবিহীন আত্মত্যাগের বিনিময়ে এই নতুন বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি। বৈষম্যমুক্ত একটি দেশের জন্যই আমরা সবাই লড়াই করেছি। সুতরাং, এই নতুন বাংলাদেশে কোনো ধরনের বৈষম্য ও বঞ্চনা চাপিয়ে দেয়ার সুযোগ আর নেই। আমরা ওলামায়ে কেরাম অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই। দেশের এই ক্রান্তিকালে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে চাই। কিন্তু রাষ্ট্রের পুনর্গঠনের কাজে আমাদের বঞ্চিত করার দুঃসাহস দেখালে তার পরিণতি ভালো হবে না।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, হেফাজত মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান, নায়েবে আমীর আব্দুল হামীদ পীর সাহেব মধুপুর, আল্লামা জসিম উদ্দীন, আল্লামা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, আল্লামা আব্দুল আওয়াল, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, ড. আহমাদ আব্দুল কাদের, মাওলানা আইয়ুব বাবুনগরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হারুন ইজহার, মাওলানা মীর ইদরিস, মুফতি সহকারী মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি বশিরুল্লাহ, অর্থ সম্পাদক মুফতি মুনির হুসাইন কাসেমী, দপ্তর সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদ প্রমুখ।

news24bd.tv/FA