'শ্রম পরিদর্শক' পদকে নবম গ্রেডে উন্নীতসহ ৯ দাবি ইন্সপেক্টরদের  

'‌‌লেবার ইন্সপেক্টর' পদকে নবম গ্রেডে উন্নীতসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম ইন্সপেক্টররা। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনের সামনে এক সমাবেশে তারা এসব দাবি জানান।  

এ সময় তারা শ্রম উপদেষ্টা বরাবর পৌঁছে দেওয়ার জন্য অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) আবদুর রহিম খানের কাছে একটা স্মরকলিপি দেন। আইজি স্মরকলিপিটি গ্রহণ করেন এবং উপদেষ্টা বরাবর পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেন। আইনের মধ্য থেকে এ বিষয়ে যতটা করা যায় তা করবেন বলেও শ্রম ইন্সপেক্টরদের আশ্বস্ত করেন আইজি।     

ইন্সপেক্টরদের ৯ দাবি

১. ফিডার পদ পূরণকারী শ্রম পরিদর্শকদের জন্য আইন ও বিধি মোতাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও পিএসসিকে সম্পৃক্ত করে জ্যেষ্ঠতা তালিকা প্রণয়ন করে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে ভূতাপেক্ষভাবে পদোন্নতি প্রদান করতে হবে। এছাড়া আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী ‘শ্রম পরিদর্শক' পদকে গ্রেড-৯ তে উন্নীত করতে হবে। পদোন্নতি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে সুপারনিউমারারি পদ সৃষ্টি করে পদোন্নতি দিতে হবে।  

২. কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরকে ‘শ্রম পরিদর্শন কর্তৃপক্ষ' নামে রূপান্তর করতে হবে। প্রধান কার্যালয়ের নিজস্ব ভবন নির্মাণসহ যে সব জেলা কার্যালয়ের নিজস্ব ভবন নেই, সেখানে দ্রুত নিজস্ব ভবন তৈরি করতে হবে। এছাড়া, শ্রম সংক্রান্ত জরিপ এই দপ্তরের মাধ্যমে পরিচালিত হতে হবে।  

৩. অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শকের পদ গ্রেড-১ এ উন্নতি করতে হবে। এছাড়া, প্রধান কার্যালয়ের অর্গানোগ্রাম পরিবর্তন করে প্রশাসন অধিশাখা, সাধারণ অধিশাখা, সেইফটি অধিশাখা, স্বাস্থ্য অধিশাখা, আইন অধিশাখা, লাইসেন্সিং অধিশাখা, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অধিশাখা, অর্থ অধিশাখা, আইসিটি অধিশাখা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অধিশাখা এবং শৃঙ্খলা ও তদন্ত অধিশাখায় বিভক্ত করতে হবে। অধিশাখার দায়িত্বে থাকবেন গ্রেড-৩ এর একজন অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক; যিনি পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন।  

৪. মাঠ পর্যায়ে প্রতিটি বিভাগে একটি করে বিভাগীয় কার্যালয় স্থাপন করতে হবে। যার প্রধান হবেন একজন যুগ্ম মহাপরিদর্শক। এছাড়া, বিভাগীয় কার্যালয়সমূহে একজন আইন কর্মকর্তার পদ সৃষ্টি করতে হবে।  

৫. মাঠ পর্যায়ে প্রতিটি জেলায় একটি করে জেলা কার্যালয় স্থাপন করতে হবে। জেলা কার্যালয়ের অর্গানোগ্রাম পরিবর্তন করে প্রশাসন শাখা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, যার প্রধান হবেন গ্রেড-৭ এর একজন অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক। প্রতিটি জেলা কার্যালয়ে একজন সহকারী আইন কর্মকর্তা/কোর্ট ইন্সপেক্টর- এর পদ সৃষ্টি করতে হবে। এছাড়া, বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা ৩১৯(১)(ক) এবং ধারা ৮৪ এর বিধান বাস্তবায়নের জন্য গ্রেড-১০ ভুক্ত প্রয়োজনীয় সংখ্যক ‘সহকারী শ্রম পরিদর্শক' এবং ‘নমুনা সংগ্রহকারী'র পদ অবিলম্বে সৃষ্টি করতে হবে।  

৬. ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামের মতো শিল্পঘন জেলাসমূহকে বিভক্ত করে শ্রমিকদের আইনগত সুবিধা নিশ্চিতকরণে আরও ৪টি জেলা অফিস প্রতিস্থাপন করতে হবে।  

৭. সময়োপযোগী শ্রম আইন প্রণয়নপূর্বক শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিতকরণ, শ্রম পরিদর্শকদের আইনগত ক্ষমতা বৃদ্ধিকরণে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং প্রশাসনিক জরিমানার বিধান যুক্ত করাসহ কারখানায় অগ্নিকাণ্ডসহ যেকোনো দুর্ঘটনার দায়-দায়িত্ব মালিককে বহনের বিধান যুক্ত করতে হবে। এছাড়া, “এক দেশ, এক শ্রম আইন” নীতি অনুসরণ করে অবিলম্বে বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯ এবং তদ্বীয় বিধিমালা বিলুপ্ত করতে হবে।  

৮. ডাইফ পরিদর্শকদের জন্য নির্দিষ্ট পোশাক বা কটি প্রচলনসহ স্থায়ী ভ্রমণ ভাতা ও ঝুঁকি ভাতা প্রচলন করতে হবে। মাঠ পর্যায়ের অফিস প্রধানের জন্য পরিবহন হিসেবে জিপ গাড়ি এবং পরিদর্শনের জন্য মাইক্রোবাসের ব্যবস্থা করতে হবে। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ন্যূনতম ৫টি সিলেকশন গ্রেড প্রদান করতে হবে। এছাড়া, অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক প্রশিক্ষণে মনোনয়ন প্রদানে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দক্ষতা ও যোগ্যতাকে প্রাধান্য দিতে হবে।  

৯. জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটকে শক্তিশালীকরণের জন্য এর প্রধান কার্যালয় ঢাকায় স্থাপনসহ বিভাগীয় পর্যায়ে আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন করতে হবে।

news24bd.tv/JP