সরকারকে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর পরামর্শ সিপিডি'র

সংগৃহীত ছবি

সরকারকে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর পরামর্শ সিপিডি'র

নিজস্ব প্রতিবেদক

মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে সমন্বয় করে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর প্রয়োজন আছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ- সিপিডি। বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) এক বৈঠকে এ কথা জানান সিপিডি'র নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

বৈঠকে ৭ ধরণের সংকটের কথা উঠে এসেছে- ডলার, জ্বালানী, মুল্যস্ফীতি, খাদ্য, পরিবেশ পরিবর্তন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, কোভিড পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার।

এসময় তিনি বলেন, জ্বালানী সংকটসহ সামগ্রিক বিবেচনায় দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাড়াতে হবে।

সেই সঙ্গে আমদানি কমানোর পাশাপাশি গ্যাস উত্তোলন কিংবা অনুস্ধানে মনযোগ দিতে হবে।

ফাহমিদা বলেন, কোভিডের কবল থেকে আমরা এখনও পুরোপুরি মুক্ত হইনি। এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতির যে মন্দা তা বাংলাদেশেও প্রভাব ফেলেছে। মূল্যস্ফিতি সমস্ত পণ্যের যে মুল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে এতে দরিদ্র জনগোষ্ঠী অসহায় অবস্থায় রয়েছে।

দেশি বিদেশি সকল পণ্যের দাম বাড়ছে। এর মধ্যে কমানোর কোন উপায় দেখা যাচ্ছে না। পাশাপাশি ৪৫ টি দেশে খাদ্য সংকট পড়বে তার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে।

সিপিডি নির্বাহী বলেন, খাদ্য সংকট থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে এই মুহূর্তে বিকল্প উপায় খুঁজে বের করতে হবে। এই মুহূর্তে রোহিঙ্গাসহ কক্সবাজার এলাকার মানুষ সংকটে পড়েছে। যখন খাদ্য সংকট দেখা দেয় সে মুহূর্তে খাদ্য ও খাদ্য বহিভুর্ত জিনিসের মূল্যস্ফিতি হয়েছে। বিভিন্ন পণ্যের মূল্য বাজারে আরও বেশি বেড়েছে।

সিপিডি নির্বাহী আরও জানান, রিজার্ভের যে হিসাব দিচ্ছে সরকার, প্রকৃত হিসাব আরও কম। বিশ্বখাদ্য সংস্থার দাম অনুযায়ী বাংলাদেশে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেশি। বৈদেশিক মাদ্রার রিজার্ভ ৩৬.৩ বিলিয়ন ডলারে ঠেকেছে। আমাদের বাকি মাসগুলোর পেমেন্ট কিভাবে মেটাবো তা কিন্তু চিন্তার বিষয়। এটাও কিন্তু বিশ্বব্যাংকের প্রকৃত হিসাব অনুযায়ী এখান থেকে ৭ বিলিয়ন কম ধরতে হবে। এর মধ্য বৈদেশিক ঋণ নিতে চেষ্টা চলছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণে টাকার বিনিময় হারে পতন ঘটছে।

মূল্যস্ফীতির প্রভাব মোকাবেলায় সব শিল্পে কর্মী ও শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর তাগিদ দেন সিপিডি নেতারা। এসময় তারা অতি গরীব ও গরিবদের জন্য প্রয়োজন প্রণোদনা দেয়ার কথা জানান। সেইসাথে বৈঠকে কৃষি উৎপাদনে সহায়তা বাড়ানোর সুপারিশও করা হয়েছে।

বৈঠকে সংকট মোকাবেলায় সরকারের পদক্ষেপগুলোর মূল্যায়ন করে কৌশল পরিবর্তন বা সংযোজনের সুপারিশ করা হয়েছে।

সিপিডির সুপারিশ:
মুল্যস্ফীতির সুপারিশ হলো- আমদানির জন্য যে সকল বেশি তা কমানো, বাজার তদারকি, মনিটরিং জোরদার, গুটি কয়েকজনের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেয়া, কম্পোটিশন অ্যাক্ট না মানলে আইন বিবেচনা করা, সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানে যারা কাজ করছে তাদের জীবন যাত্রার মানে যে ধ্বস নেমেছে তার সমন্বয় করতে বেতন বাড়াতে হবে।

পাশাপাশি সরকারি যে রেশনিং সিস্টেম তার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। যারা প্রকৃত দরিদ্র তাদের ভাতার পরিমাণ বাড়াতে হবে। স্বল্প সুদে ঋণ সহায়তাও অব্যাহত রাখতে হবে। খাদ্যের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে ভর্তুকি দিতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে খাদ্য সংগ্রহের চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

এছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে স্বল্প ও মধ্য মেয়াদী উদ্যোগ নিতে হবে। ভারত থেকে যে বিদ্যুৎ আনার চেষ্টা চলছে তা আসলে বিদ্যুতের ঘাটতি কিছুটা কমবে। নবায়ণযোগ্য জ্বালানি বাড়াতে হবে। সরকারের নীতি নীর্ধারণে সমন্বয় করতে হবে। তথ্যের যে ঘাটতি সংকট তা বিবেচনা করতে হবে। টেকসই জ্বালানি খাতের জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

news24bd.tv/FA/রিমু