যৌন নির্যাতনের শিকার তরুণীর পাশে পুলিশ সুপার

সন্তানকে কোলে নিয়ে সেই তরুণী

যৌন নির্যাতনের শিকার তরুণীর পাশে পুলিশ সুপার

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

জর্ডানে যৌন নির্যাতনে গর্ভবতী হয়ে দেশে ফিরে সন্তান জন্ম দেয়া এক তরুণীর পাশে দাঁড়ালেন মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি)। গতকাল (২ সেপ্টেম্বর, রোববার) পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম সিংগাইর উপজেলার ওই তরুণীর বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নেন। এ সময় নবজাতক ও মায়ের নতুন পোশাক এবং আর্থিক সহায়তা দেন তিনি।

পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম জানান, মেয়েটি বিদেশে নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

এ ক্ষেত্রে তার কোনো দোষ নেই। তরুণী ও তার সন্তানকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। তাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করতে প্রতিবেশীদেরও পরামর্শ দেন তিনি।

মানিকগঞ্জ এসপি আরও বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক ওই তরুণীকে বিদেশে পাঠানো এবং যৌন নির্যাতনে যারা বাধ্য করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

নির্যাতিতা ওই নারী জানান, পুলিশ সুপার তার খবর নেয়ায় তিনি খুবই খুশি। এখন ন্যয় বিচার পাওয়ার ব্যাপারে বেশ আশাবাদী তিনি।  

জানা গেছে, সিংগাইর উপজেলার দরিদ্র পরিবারের ওই তরুণী অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর জর্ডানে যান। স্থানীয় দালালরা তাকে বাসা-বাড়িতে কাজ দেয়ার কথা বলে পাঠালেও জর্ডানে তাকে যৌন কাজে বাধ্য করা হয়।

একই উপজেলার জর্ডান প্রবাসী সেনিয়া আক্তার তাকে ১০ মাস আটকে রেখে যৌন কাজে বাধ্য করেন। এক পর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে দুই মাস জেলে থাকার পর গেল ১৮ এপ্রিল দেশে ফেরেন তিনি। এরপর গেল ২৩ আগস্ট (ঈদ ইল আযহার পরদিন) হাসপাতালে ওই তরুণী একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। সন্তান জন্ম দেয়ার পর শুরু হয় নতুন বিপদ। সমাজের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেন।

এ নিয়ে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে। পরে পুলিশের পরামর্শেই গেল ২৮ আগস্ট সিংগাইর থানায় মামলা করেন ওই তরুণী। মামলায় মানব পাচার ও শিশু নির্যাতন, জোর করে দাসত্ব করানো, আটকে রেখে যৌনকাজে বাধ্য ও ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়।

মামলায় জর্ডান প্রবাসী সেনিয়া আক্তার, তার মা-বাবা, জর্ডানের নাগরিক গরজিদসহ ৫জনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে সেনিয়ার মা-বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বর্তমানে তারা কারাগারে আছেন।

 

অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর