১৮৬ কিলোমিটার সাঁতরে ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্রের রেকর্ড

বিশ্ব রেকর্ড গড়ে তীরে ওঠার পথে ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য

১৮৬ কিলোমিটার সাঁতরে ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্রের রেকর্ড

সোহান আহমেদ কাকন • নেত্রকোনা প্রতিনিধি

বয়স তাঁর ৬৭ বছর। এই বয়সে বেশিরভাগ মানুষই কর্ম ছেড়ে অবসরে যান। বাকি জীবনটা আরাম-আয়েশে কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন। অথচ এই বৃদ্ধ বয়সেই কিনা বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য!

ঠিকই পড়েছেন।

নদীপথে বিরামহীনভাবে ৬১ ঘণ্টায় একটানা ১৮৬ কিলোমিটার সাঁতার কেটেছেন ক্ষিতীন্দ্র। সাঁতারের ইতিহাসে আগের সব রেকর্ড ভেঙে তবেই তীরে উঠেছেন এই কৃতি সাঁতারু ও বীর মুক্তিযোদ্ধা।  

গতকাল (৫ সেপ্টেম্বর, বুধবার) রাত ৮টার দিকে নেত্রকোনার মদন উপজেলার দেওয়ান বাজার ঘাটে পৌঁছার মধ্য দিয়ে তাঁর তিন দিনের ১৮৬ কিলোমিটার বিরামহীন একক দূরপাল্লার সাঁতার শেষ হয়। এ সময় নদীর উভয় পাড়ে হাজার হাজার উৎসুক জনতা করতালি দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান।

সাঁতারু ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য গেল সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টায় শেরপুরের নালিতাবাড়ীর ভোগাই নদীর ব্রিজ থেকে দূরপাল্লার একক সাঁতার শুরু করেন। নেত্রকোনার মদন উপজেলা নাগরিক কমিটি ও শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌরসভা যৌথভাবে এ সাঁতারের আয়োজন করে।

news24bd.tv

নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুর রহমান সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন। মুক্তিযোদ্ধা ও কৃতি সাঁতারু ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্যে নেত্রকোনার মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর বৈশ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় এমএসসি পাশ করেছেন। বর্তমানে তিনি বিমানের এএনএস কনসালট্যান্ট হিসেবে কর্মরত আছেন।

জানা যায়, সাঁতারু ক্ষিতীন্দ্র বৈশ্য বিশ্ব রেকর্ড গড়ার লক্ষ্যে ১৮৬ কিলোমিটার নদীপথ সাঁতরে পাড়ি দেন। এই পথ পাড়ি দিতে সাঁতারু বৈশ্যকে শেরপুরের নালিতাবাড়ী ছাড়াও ময়মনসিংহের তারাকান্দা, ফুলপুর, ধোবাউড়া, নেত্রকোনার পূর্বধলা, দুর্গাপুর, সদর, আটপাড়া ও মদন উপজেলা পাড়ি দিতে হয়েছে।

news24bd.tv

তাঁর বিরামহীন সাঁতার দেখতে নদীর দু’পাড়ে দাঁড়িয়ে শত শত মানুষ করতালি দিয়ে উৎসাহ জুগিয়েছেন। মদন উপজেলার নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক সাবেক পৌর মেয়র দেওয়ান মোদাচ্ছের হোসেন শফিক জানান, গুগল ম্যাপ ডেটায় দূরত্ব নির্ণয় করা হয়েছে। ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্যের বয়স ও সাঁতরানোর দৈর্ঘ্য বিবেচনা করলে এই সাঁতার বিশ্ব রেকর্ড হিসেবে গণ্য হবে। তিনি এই রেকর্ডকে গিনেস বুকে অন্তর্ভুক্ত করার জোর দাবি জানান।

মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়ালিউল হাসান জানান, সাঁতার শেষে ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবে বর্তমানে সুস্থতার পথে তিনি। তাঁকে ডাক্তারের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

 

কাকন অরিনNEWS24

সম্পর্কিত খবর