ঢাকার দোকানে মেলে ১০ টাকায় গরুর মাংস, ২৫ টাকায় মাছ

সংগৃহীত ছবি

ঢাকার দোকানে মেলে ১০ টাকায় গরুর মাংস, ২৫ টাকায় মাছ

অনলাইন ডেস্ক

নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। এক কেজি মাংস বা মাছ কেনার মতো সক্ষমতা হারিয়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। যারা মাছ-মাংস কিনতে পারছেন না, তারা অনেকে বাজারে গিয়ে গিলা কলিজা কিনছেন। তবে মাছ-মাংস খাওয়ার সাধ তো থাকেই।

এমন পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে অনেক মার্কেটের কিছু কিছু বিক্রেতা কম দামে কম পরিমাণ মাছ, মাংস বা অন্যান্য নিত্যপণ্য বিক্রি করছেন।    

রাজধানীর দক্ষিণখানের ফায়দাবাদ ট্রান্সমিটার এলাকার পাটোয়ারী স্টোরে মেলে সবজি, মাছ, মাংসসহ ফলমূল। তবে অন্য সব দোকানের চেয়ে পাটোয়ারী স্টোরের পার্থক্যটা ক্রেতাদের কেনাকাটায়। যেকোনো মূল্যের যতটা প্রয়োজন ততটাই কিনতে পারেন মানুষ।

পণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বগতির সময় এই বাজারে ১ বা ২ টাকা যখন প্রায় মূল্যহীন তখন এখানে সেই টাকাতেও মেলে কিছু না কিছু। দোকানের সামনে আলাদা একটি টেবিলে সাজিয়ে রাখা আছে সেসব পণ্য। ৫ টাকার সয়াবিন তেল, ২ টাকার লবণ বা মসলা যেমন মেলে তেমনি কম টাকায় মেলে মাছ বা মাংস। সেই দোকানের মালিক শাহাদাত হোসেন। দোকানটি থেকে একজন ক্রেতা ১০ টাকার গরুর মাংস আর একটি ডিম কিনলেন। এই দোকান থেকে ক্রেতারা ১০, ৫০ বা ১০০ টাকার গরুর মাংস কিনতে পারেন।  

শাহাদাতের দোকানে মাছ আর ব্রয়লার মুরগির মাংস কিনতে আসেন আরেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তিনি ৭৫ টাকায় রুই মাছ ৩ টুকরা, ২৫ টাকায় এক টুকরা পাঙাশ মাছ এবং ৫৬ টাকায় ব্রয়লার মুরগির রানের ১ টুকরা মাংস কেনেন। সব মিলিয়ে তাঁর খরচ ১৫৬ টাকা

পবিত্র রমজান আসন্ন। এ মাসের কথা মাথায় রেখে নানা ফল দোকানে তুলেছেন শাহাদাত হোসেন। তাঁর দোকানে পুরো একটি মাল্টার দাম ৩০-৩৫ টাকা আর প্রতি টুকরা কাটা মাল্টা বিক্রি হয় ৫ টাকায়। তবে কাটা কমলার টুকরা, বরই, আঙুর, কাটা মাল্টা এক প্যাকেটে ‘মিক্স ফ্রুট’ হিসেবে বিক্রি করেন তিনি। দাম ৫ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে। মাছ, মাংসের সঙ্গে ১০ টাকার সয়াবিন তেল দুই প্যাকেট আর ৫ টাকার কাঁচা মরিচ কিনে বাড়ির পথে হাঁটা শুরু করে আবারও ফিরে এলেন সুমন। তাঁর মনে হয়েছে গরমে তৃষ্ণা নিবারণের জন্য ৫ টাকার কোল্ড ড্রিংকস খাওয়া যায়।

শাহাদাত হোসেনের পাটোয়ারী স্টোরে আধা কেজি চালের প্যাকেট পাওয়া যায়। ৫ পিস পেঁয়াজ, বড় দুই কোয়া রসুন আর এক টুকরো আদা এক প্যাকেটে বিক্রি করেন ১০ টাকায়। এ ছাড়া ছয় রকমের ডাল দিয়ে আছে ৩০ টাকার প্যাকেট। যার সঙ্গে চাল মিশিয়ে রান্না করা যাবে খিচুড়ি। ছোট শিশুদের জন্য চাল, ডাল আর মসলা একসঙ্গে প্যাকেট পাওয়া যায়, যা বাসায় নিয়ে সরাসরি রান্না করে খাওয়ানো যাবে।

শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমরা অনেক সময় শুনতে পাই মানুষ বছরে একবার কোরবানির ঈদের সময় গরুর মাংস খাইছে বা অনেক দিন ধরে বড় মাছও কিনতে পারে না। আবার সবজির দামও ওঠানামা করে। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সব একবারে কেনা সম্ভব হয় না কখনো। কিন্তু আমি চিন্তা করি, যদি অল্প করে বিক্রি করি তাহলে মানুষ তাদের সাধ্যের মধ্যে একদিন রুই মাছ, একদিন ইলিশ মাছ আবার একদিন চিংড়ি মাছ, কোনো দিন গরুর মাংস, কোনো দিন মুরগির মাংস খাইতে পারে। এতে কারও মাঝে কোনো আফসোস থাকে না। ’

শাহাদাত হোসেনের মতো বেশ কয়েকজন দোকানদার মার্কেটটিতে এভাবে ১০ টাকায় গরুর মাংস, ২৫ টাকায় মাছ বিক্রি করে থাকেন।  

news24bd.tv/আইএএম