রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশের পাশে থাকবে মালয়েশিয়া

রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদি

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশের পাশে থাকবে মালয়েশিয়া

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

মিয়ানমার সেনা ও বিজিপি’র নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিরাপদে তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে সমর্থন রয়েছে মালয়েশিয়ার। রোহিঙ্গাদের ফেরতের বিষয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে মালয়েশিয়াও কাজ করবে। সফররত দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদি সোমবার সকালে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে একথা জানান।  
 
সোমবার বেলা ১১টার দিকে উখিয়ার কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে যান মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় তিনি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা মুসলিমদের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের দুর্দশার বর্ণনা শোনেন। পরে সাংবাদিকদের কাছে আহমেদ জাহিদ হামিদি রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনা বাহিনীর নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানান।
 
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে যে মানবিকতা দেখিয়েছে, তা বিশ্বের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। ’ নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারকেও ধন্যবাদ জানান মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী।

 
তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে মালয়েশিয়া সরকার আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে বাংলাদেশের পাশে আছে। আশিয়ানভুক্ত দেশগুলোকে নিয়েও এই চাপ অব্যাহত রাখা হবে। ’ 
 
এর আগে, সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিশেষ বিমান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কক্সবাজার পৌঁছায়। সেখান থেকেই তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে যান।
 
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে দুপুরের পর মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ছেড়ে যাবেন বলে জানা গেছে।
 
এর আগে, রবিবার সফরে এসে সন্ধ্যায় ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন আহমেদ জাহিদ হামিদি।
 
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, মালয়েশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি ফিল্ড হাসপাতাল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেখানে প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গা ফ্রি চিকিৎসা নিতে পারবে। খুব তাড়াতাড়ি বড় ধরনের এই হাসপাতাল নির্মাণকাজ শুরু হবে।
 
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, বিজিপি ও স্থানীয় উগ্রপন্থী বোদ্ধরা মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর দমন অভিযান শুরু করে। এরপর থেকে জাতিসংঘের হিসাবে ৫ লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।  
 
সেনাবাহিনীর এই অভিযানে অন্তত ৫ হাজার রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। জাতিসংঘ একে ‘গণহত্যা’ ও ‘জাতিগত নিধন’ আখ্যায়িত করেছে।

সম্পর্কিত খবর