কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র ৩২তম মৃতুবার্ষিকী পালিত

কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র ৩২তম মৃতুবার্ষিকী পালিত

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

’ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ কালজয়ি এই গানের শ্রষ্টা তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র ৩২তম মৃতুবার্ষিকী বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে আজ বুধবার তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের মোংলার মিঠেখালিতে পালিত হয়েছে। রুদ্র স্মৃতি সংসদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সিপিবি, কবিতা আবৃতি পরিষদ, রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিরিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন সকালে কবির কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মিলাদ, দোয়া মাহফিলসহ রুদ্রের স্মরনে দিনভর বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিনটি পালন করেছে।

বুধবার সকালে রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি সুমেল সারাফাতের সভাপতিত স্মরণানুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক মাহমুদ হাসান ছোটমনি, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্ধসঢ়;বায়ক মো. নূর আলম শেখ, মিঠাখালি ইউপি চেয়ারম্যান উৎপল মন্ডল, সিপিবি নেতা নাজমুল হক, বিএনপি নেতা শেখ শাকির হোসেন, কবি গীতিকার মোল্যা আল মামুন, রুদ্র সংসদের বিল্লাল হোসেন, ইউপি সদস্য উকিল উদ্দিন ইজারদার, আসাদুজ্জামান টিটো, আমাদের গ্রামের শেখ সাদী প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে আলোচকরা বলেন, অকালপ্রয়াত এই কবি নিজেকে মিলিয়ে নিয়েছিলেন আপামর নির্যাতিত মানুষের আত্মার সাথে।

সাম্যবাদ, মুক্তিযুদ্ধ, ঐতিহ্যচেতনা ও অসাম্প্রদায়িকবোধে উজ্জ্বল ছিল তার কবিতা। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’ এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি উচ্চারণ করেছেন অবিনাশী স্বপ্ন ‘দিন আসবেই দিন সমতার’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক’ হিসেবে। একই সাথে তাঁর কাব্যের আরেক প্রন্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা।
মাত্র ৩৫ বছরের (১৯৫৬-১৯৯১) স্বল্পায়ু জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ সহ অর্ধ শতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। পরবর্তীকালে এ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন। ‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্নগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দু’বছর ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরষ্কার লাভ করেন।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ রেখে ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা। মৃতুবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে রুদ্রের কবিতা আবৃত্তি ও রুদ্র সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।

news24bd.tvতৌহিদ