পাহাড়ে মাল্টার বাম্পার ফলন

মাল্টার বাম্পার ফলন

পাহাড়ে মাল্টার বাম্পার ফলন

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে কাঁচা-পাকা মিষ্টি মাল্টা। পুরো বাগান জুড়ে এখন ছোট-বড় মাল্টার সমাহার। পাহাড়ে উৎপাদিত এসব মাল্টার রং সবুজ। দেখতে অনেকটা মিষ্টি লেবুর মত।

ইতোমধ্যে প্রায় সবগুলো গাছে ফলন আসতে শুরু করেছে। আবার কোনো কোনো গাছে ব্যাপক ফলও এসেছে।

রাঙামাটি কৃষি বিভাগ বলছে, পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া উপযুক্ত থাকায় এবার মাল্টা চাষে সফল হয়েছেন চাষিরা। তাছাড়া কম খরচ, ব্যাপক ফলন, লাভও অধিক।

তাই কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে মানন্নোয়নে বিরাট ভূমিকা রাখছে পাহাড়ে উৎপাদিত মাল্টা। রাঙামাটি ছাড়িয়ে এসব মাল্টা রপ্তানি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।

রাঙামাটি কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে দেশীয় মাল্টার চাষ। তাছাড়া ফলনও হয়েছে বাম্পার। এরইমধ্যে সফলতা পেয়েছেন রাঙামাটির শুকরছড়ি গ্রামের অনেক মালটা চাষি। তাই মালটা চাষের আগ্রহ বেড়েছে পাহাড়ের কৃষকদের। পাহাড়ে উৎপাদিত এসব মাল্টার চাহিদা অনেক। রাঙামাটি জেলায় প্রায় ৫৫ হেক্টর জমিতে মাল্টা বাগান গড়ে তুলেছেন কৃষকরা। পাহাড়ি মাটি উর্বর ও সঠিক পরিচর্যার কারণে সহজে বেড়ে উঠছে মাল্টা গাছগুলো। তাছাড়া ফলনও হচ্ছে বাম্পার।

স্থানীয় মাল্টা চাষি হেম কুমার চাকমা বলেন, রাঙামাটি কৃষি বিভাগ মাল্টার চারা দিয়ে আমাকে সহযোগিতা করেছে। গত আড়াই বছর ধরে পাহাড়ে মাল্টা চাষ করে আসছি। চলতি বছর মাল্টার উৎপাদন ব্যাপক হয়েছে। তাই আর্থিকভাবে আমি লাভবান হয়েছি।

রাঙামাটি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শান্তিময় চাকমা জানান, পাহাড়ে উৎপাদিত মাল্টার নাম বারি মাল্টা-১। অন্যান্য মাল্টার রঙ দেখতে হলুদ হলেও পাহাড়ে উৎপাদিত মাল্টা দেখতে সবুজ। খেতেও মজাদার। রসালো আর মিষ্টি। স্থানীয় কৃষি বিভাগ মাল্টা চাষিদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে। হেম কুমার চাকমার মতো অনেকে এখানে মাল্টা বাগান গড়ে তুলেছেন। এসব মাল্টার চাহিদা অনেক। তাই সহজে বাজারজাত করা যায়। তাই পাহাড়ি জমিতে মাল্টা চাষ বাড়াতে রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মাল্টার চারা বিতরণ করে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক পবন কুমার চাকমা জানান, এখানকার মাটি ও আবহাওয়া যে কোন চাষাবাদের জন্য উপযোগি। তাই সহজে কৃষকরা সফলতা পায়। তেমনি মাল্টা বাগান করে অনেক কৃষক এখন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল।  

তিনি বলেন, রাঙামাটি জেলায় প্রায় ৫৫ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হচ্ছে। হেক্টর প্রতি ১২ মেট্রিক টন করে উৎপাদিত হচ্ছে মাল্টা, যা চাহিদার তুলনায় অনেক। আর এসব মাল্টা বিক্রি করে  ৪ থেকে ৫ কোটির অধিক আয় করছে চাষিরা। পাহাড়ে জুম চাষের পরিবর্তে অনেক কৃষক এখন মাল্টা চাষ করছে। পাহাড়ে উৎপাদিত দেশীয় মাল্টার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো গেলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে স্থানীয় কৃষকরা।

 

NEWS24কামরুল

 

 

সম্পর্কিত খবর