শেখ হাসিনা সরকারের আপত্তি নেই, তবে তিনটি দাবি

ফাইল ছবি

শেখ হাসিনা সরকারের আপত্তি নেই, তবে তিনটি দাবি

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

নির্বাচনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারে আপত্তি নেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের। তবে তারা তিনটি দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরবে।

১. সংসদ ভেঙে দিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে ভোট গ্রহণ। ২. নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট কোটায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বা সংসদের বাইরের বিরোধী দলগুলো থেকে মন্ত্রী করে তাঁদের স্বরাষ্ট্র বা জনপ্রশাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় দেওয়া।

৩. বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি ও তাঁর ভোটে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সাজা স্থগিত করা। খবর প্রথম আলোর।
 
একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, ৭ দফা দাবির বাকিগুলোর মধ্যে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে তাঁরা শিথিল থাকবেন। সরকার সংসদ ভেঙে নির্বাচন দেওয়ার দাবি মানলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিষয়টিতে ঐক্যফ্রন্ট অনড় থাকবে না।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কোনো নেতা নাম প্রকাশ করে এ ব্যাপারে এখনই কিছু বলতে রাজি হননি। ঐক্যফ্রন্টের শরিক দল বিএনপির একজন আইনজীবী নেতা বলেছেন, এবারের বৈঠকটি সীমিত পরিসরে এবং তাত্ত্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। ঐক্যফ্রন্ট তাদের দাবিগুলোর সাংবিধানিক ও আইনগত যৌক্তিকতা তুলে ধরবে। সিদ্ধান্তের ভার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপরই ছেড়ে দেবেন। বিষয়টি মানা না মানা তাঁর ব্যাপার।

এই নেতা বলেন, আমাদের লক্ষ্য সরকারকে এটা জানানো যে সংবিধানের মধ্য থেকে নির্বাচনের অনেক উপায় আছে, যা নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ করতে এবং সব রাজনৈতিক দলের আস্থা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে। কেননা, সরকার বলছে, সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনো পন্থা বের করা বা সংবিধান সংশোধন তাঁরা করবেন না।

বিএনপিপন্থী একজন আইনজ্ঞ বলেন, সংবিধানের মধ্য থেকেই তাঁরা সমাধানে জোর দিচ্ছেন। এ কারণে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের কথা বলা হবে। এটি সংবিধানে সুস্পষ্ট বলা আছে। সে ক্ষেত্রে সংসদ ভেঙে দিলে বর্তমান সরকারই অন্তর্বর্তী সময়ে দায়িত্ব পালন করবে। সংবিধান অনুযায়ী মন্ত্রিসভার সদস্যদের এক–দশমাংশ টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী রাখা যায়। বর্তমান মন্ত্রিসভায় ৫০ জনের মতো সদস্য আছেন। অর্থাৎ, পাঁচজন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী রাখা সম্ভব। এই মন্ত্রীদের জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বা বিরোধীদের থেকে নেওয়া হলে এবং তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মন্ত্রণালয় বিশেষ করে জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে।

এই আইনজ্ঞ বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের মুক্তির বিষয়টি আদালতের ব্যাপার। সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষ যদি তাঁর জামিনের বিরোধিতা না করে বা আপিলে সাজা স্থগিতের বিরোধিতা না করে, তাহলে ভোটের সময় খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব এবং তাঁর ভোটে অংশগ্রহণও নিশ্চিত হয়। আর এটা চাওয়া অন্যায্য কিছু নয়।

গতকাল রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের মতিঝিলের চেম্বারে একটি বৈঠক হয়। সেখানে আইনজ্ঞ, আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকে সংবিধান ও আইনের ভিত্তিতে ৭ দফার বিভিন্ন দাবিগুলোর যৌক্তিক তা নিয়ে আলোচনা হয়।

বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোর নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই। এ জন্য সংবিধান সংশোধন করতে হবে। আর অন্য দাবিগুলোর বিষয়ে সরকারের আশ্বাসে বিশ্বাস রাখা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই বলেই মনে করছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।


NEWS24▐ কামরুল

সম্পর্কিত খবর