বিচারপ্রার্থীদের মারধর করলেন আইনজীবীরা, ভিডিও ভাইরাল

সংগৃহীত ছবি

বিচারপ্রার্থীদের মারধর করলেন আইনজীবীরা, ভিডিও ভাইরাল

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরে তিন বিচারপ্রার্থীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন আইনজীবীর বিরুদ্ধে। রোববার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার দিকে নাটোর আইনজীবী সমিতির নতুন ভবনে এ ঘটনা ঘটে। আইনজীবীদের হাতে বিচারপ্রার্থীর এমন নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।  

ভিডিওতে দেখা যায়, বেশকিছু আইনজীবী এবং তাদের সহকারীরা তিনজন বিচারপ্রার্থীকে বেধড়ক মারপিট করছেন।

লাঠি হাতেও মারধর করতে দেখা যায়।  

মারধরের শিকার খালেকুজ্জামান লালন, সাইদুজ্জামান লিখন ও আসাদুজ্জামান লিমন নাটোরের লালপুর উপজেলার বাসিন্দা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, লালপুরের পারিবারিক জমিজমা নিয়ে মামলায় দুলাভাই ও শ্যালকের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে আইনজীবী শাহ মখদুম রূপশের মক্কেল আব্দুর রাজ্জাককে ধাক্কা দেন তার শ্যালক লালন, লিমন ও লিখন।

পরে আব্দুর রাজ্জাক আইনজীবী শাহ মখদুম রূপশকে গিয়ে নালিশ করেন যে, তাকে তার মামলার বিবাদীরা মারধর করেছে। ঘটনা শুনে আইনজীবী শাহ মখদুম রূপশ তার মক্কেলকে মারধরের বিষয়টি জানতে অ্যাডভোকেট দিনেশ চন্দ্র মণ্ডলের মক্কেল লালন, লিমন ও লিখনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে শাহ মখদুম রূপশের সঙ্গে তর্কে জড়ান তারা। এ সময় অন্যান্য আইনজীবী ও আইনজীবীর সহকারীরা লালন, লিমন ও লিখনকে কিলঘুষি ও লাঠি দিয়ে মারধর করেন।

অ্যাডভোকেট শাহ মখদুম রূপশ বলেন, বিবাদী লালন তার দুলাভাই আব্দুর রাজ্জাককে চড় দেয়। পরে বিবাদি লালনকে গিয়ে আমি বকাবকি করি। পরে হাসানুজ্জামান সৈকতসহ আরও আইনজীবী এবং সহকারীরা লালনকে মারধর শুরু করেন।

অ্যাডভোকেট হাসানুজ্জামান সৈকত জানান, তার একজন সহকর্মীর সাথে তার মক্কেলরা খারাপ ব্যবহার করছিল। তাকেও দুইবার ধাক্কা দিয়েছে। তার সামনে তার সহকর্মী আইনজীবীর সাথে খারাপ ব্যবহার করছিল; সে কারণে তিনি তার আইনজীবীর পক্ষে ডিফেন্স করেছেন।

ভুক্তভোগী খালেদুজ্জামান লালন বলেন, বাবার মৃত্যুর পর তার দুলাভাই আব্দুর রাজ্জাক সম্পত্তির ভাগ চায়। তিনি তাতে রাজি না হয়ে মামলা করেছেন। এসব বিষয় নিয়ে তার পরিবারের লোকজনই কথাবার্তা বলছিল। এ সময় কিছু মোহরার এবং আরও আইনজীবী তাদের ওপর হামলা করে। তিনি আরও জানান, আইনজীবীরা অনেক প্রভাবশালী। সে কারণে তারা কোনো অভিযোগ করবেন না।

নাটোর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মালেক শেখ বলেন, আইনজীবীরা যদি বিচারপ্রার্থীকে মারধর করে, তাহলে ঘটনাটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কেউ যদি এ বিষয়ে সমিতিতে অভিযোগ করে তাহলে দোষী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে তাদের লাইসেন্স বাতিলের জন্য বার কাউন্সিলে চিঠি দেওয়া হবে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, আইনজীবী সমিতিতে মারধরের ঘটনা শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে আইনজীবীরা বিষয়টা মিটমাট করে দিয়েছেন বলে তাকে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

news24bd.tv/আইএএম