সৌদিতে শীতের সবজি বিক্রি হচ্ছে পানির দামে

শীতের সবজির পসরা

সৌদিতে শীতের সবজি বিক্রি হচ্ছে পানির দামে

আল-আমিন, সৌদি আরব প্রতিনিধি

বিশ্বে প্রায় ৯০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেই আছেন প্রায় ৬০ লাখ। সৌদি আরবে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকার সবজি বাজারে এলে মনে পড়ে যাবে ঢাকার কারওয়ানবাজারের কথা! ব্যস্ততায় ঠাসা। চলছে হাঁক-ডাক।

শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতের শাক সবজির আইটেম। শীতের শুরুর দিকের সবজি হলেও দাম একেবারে কম। করলা ১রিয়াল, সিম ২রিয়াল, আলু আড়াই রিয়ালে বিক্রি হচ্ছে।

স্থানীয় প্রবাসীরা জানায়, শীত মানেই তাজা শাক-সবজি সেটা হোক কৃষি প্রধান বাংলাদেশ অথবা মরুর দেশ সৌদি আরব।

বিভিন্ন খামারে বাংলাদেশিরা ফলাচ্ছেন দেশীয় শাকসবজি আর সেটা বিক্রি হচ্ছে স্থানীয় বাজারগুলোতে। সৌদি আরবের বিভিন্ন স্থান এবং বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসছে শাক-সবজি ও ফল মূল। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক বেশী তাই দামও কম। কম দামে নতুন তরতাজা সবজি কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা।

বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ বেশি থাকায় সব রকমের সবজি মোটামুটি কম দামে বিক্রি হচ্ছে। আগামী কয়েক সপ্তাহ আরও নতুন সবজি আসবে বাজারে। তখন সবজির দাম আরও কমবে। বর্তমানে ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই ভালো বেচাকেনা করতে পারছেন।

সবজি বিক্রেতা মেরাজ হোসাইন বলেন, শুধু শাক সবজি নয় এখানে সুলভে মিলছে বাংলাদেশি বিভিন্ন মৌসুমী ফল। আম-কাঠাল, লিচু, জলপাই আনারস জাম্বুরা সহ নানা প্রকারের বাংলাদেশি ফলের চাহিদা রয়েছে সব দেশের মানুষের কাছে। যাত্রীবাহী বিমানে এসব পচনশীল সবজি আমদানী করার কারণে মাঝে মধ্যে শিডিউল বিপর্যয় হলে লোকসানের মুখে পরতে হয় আমদানী কারকদের। তাই সকারের কাছে তাদের দাবি যাতে কুটনৈতিকভাবে আলোচনা করে আমদানী প্রক্রিয়া সহজ করা হয়।

ফল আমদানী কারক সাইফুল ইসলাম বলেন, শীতের নতুন সবজির সঙ্গে বাংলাদেশের মিঠা পানির মাছ হলে কেমন হয়? প্রবাসীদের সেই চাহিদাও পূরণ করছে হিমায়িত খাদ্য আমদানীকারক বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ থেকে সরাসরি মাছ রপ্তানীর চুক্তি না থাকলেও ভায়া হয়ে ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আসছে সৌদি আরবে। মাছ আমদানীকারদেরও দাবি সরকার যাতে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সৌদিতে মাছ আমদানীর ব্যবস্থা করে।

রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)র তথ্য বলছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে সবজি রপ্তানি বাড়ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সবজি রপ্তানি হয় সৌদি আরবে। গেল ২০১৩-১৪ অর্থবছরে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে যত সবজি রপ্তানি হয়, তার প্রায় অর্ধেকেই গেছে এই দেশটিতে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে সৌদি আরবে যেখানে ২ কোটি ৮৩ লাখ ৭৫ হাজার ৬২৫ ডলারের সবজি রপ্তানি হয়, সেখানে গত অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ কোটি ২৫ লাখ ৯২ হাজার ২৬১ ডলারে। বিদেশিদের সবজি বিক্রিতে সরকারি অনুমোদন না থাকায় বলদিয়ার লোক (সিটিকর্পোরেশন) এসে মাঝে মাঝে এসে মালপত্র নিয়ে যায় এবং নানাভাবে হয়রানি করে থাকে। তবুও জীবন জীবিকার তাগিদে ঝুঁকি নিয়ে একেকজন একেকভাবে ব্যবসা করছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর