মাশহাদে রাইসির দাফন সম্পন্ন

মাশহাদে ইরানের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির কফিনের পাশে শোকার্তদের ভিড়। ছবি: রয়টার্স

মাশহাদে রাইসির দাফন সম্পন্ন

অনলাইন ডেস্ক

কয়েকদিনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) নিজের শহর মাশহাদে ইমাম আলী আল-রেজার মাজারে সমাহিত করা হয় প্রয়াত এই প্রেসিডেন্টকে।

ইরানের সংবাদ সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেলে বিমানে করে মাশহাদের নেজাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রাইসির মরদেহ নিয়ে আসা হয়। এর আগে তাঁকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

মাশহাদ শহরে রাইসিকে দাফনের আগে শোকাহত লাখো মানুষে রাজপথ ভরে যায়।

টেলিভিশনের বিভিন্ন ফুটেজে দেখা যায়, প্রেসিডেন্টের দাফন উপলক্ষে উত্তর-পূর্ব শহরটির প্রধান সড়কে মানুষের বিপুল উপস্থিতি দেখা গেছে।

এর আগে আনাদোলু এজেন্সি জানায়, হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সবচেয়ে বড় জানাজা হয় তেহরানে। বুধবার (২২ মে) রাজধানীর তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে তার জানাজায় লাখো মানুষ অংশ নেয়।

এ দিন রাইসিকে সম্মান জানাতে অংশ নেন ৬৮ দেশের প্রতিনিধি।

বৃহস্পতিবার তেহরানে পররাষ্ট্র দপ্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আবদোল্লাহিয়ানের জানাজাও অনুষ্ঠিত হয়। এ দিনই তাঁকে তেহরানের দক্ষিণে শাহ আবদুলাজিম মাজারে দাফন করা হয়।

গত শনিবার (১৮ মে) একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে আজারবাইজান সফরে যান প্রেসিডেন্ট রাইসি। রোববার (১৯ মে) দেশটির প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে দুদেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করেন তিনি। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা কর্মকর্তারা।

পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে রাইসিকে বহনকারী বেল-২১২ মডেলের হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। কয়েক ঘণ্টা পর হেলিকপ্টারটিতে থাকা সব আরোহীর মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে ইরান সরকার। তবে অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।

এ ঘটনায় পাঁচ দিনের শোক পালিত হচ্ছে ইরানে। দেশটিতে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ জুন। রাইসিকে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উত্তরসূরি মনে করা হতো। দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন।

ইব্রাহিম রাইসি ইরানের অষ্টম প্রেসিডেন্ট ছিলেন। একাধারে রাজনীতিবিদ ও বিচারক রাইসি বিশ্ব রাজনীতিতেও অন্যতম প্রভাবশালী নেতাদের একজন। ইব্রাহিম রাইসি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠজন হিসেবেও পরিচিত। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে দেশটির প্রধান বিচারপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার কারণেই দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা কমেছে।

ইব্রাহিম রাইসির জন্ম ১৯৬০ সালের ১৪ ডিসেম্বর উত্তর-পূর্ব ইরানের পবিত্র শহর মাশহাদে। মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি তেহরানের পার্শ্ববর্তী শহর কারাজের প্রসিকিউটর-জেনারেল নিযুক্ত হন। ১৯৮৯ থাকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেহরানের প্রসিকিউটর-জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন রাইসি। ২০০৪ সাল থেকে তিনি এক দশক জুডিশিয়াল অথোরিটির উপপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে তাকে বিচার বিভাগের প্রধান নিযুক্ত করেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি।

news24bd.tv/DHL