কালো টাকাকে বৈধ অপ্রদর্শিত আয় আখ্যা এমপি সোহরাবের

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন

কালো টাকাকে বৈধ অপ্রদর্শিত আয় আখ্যা এমপি সোহরাবের

নিজস্ব প্রতিবেদক

নতুন ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখেছে সরকার। তবে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন তাকে কালো টাকা না বলে অপ্রদর্শিত আয় বলে দাবি করেছেন।

তিনি বলেন, সেই কর আরও কমানোর দাবি সংসদে তোলা হয়েছে। এখানে কালো টাকা সাদা করা নয়, বৈধ অপ্রদর্শিত আয় প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

এক্ষেত্রে কর ৫ শতাংশ করলেও অসুবিধা নেই। কর যত কমানো হবে তত বেশি টাকা প্রদর্শিত হবে।

রোববার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৩–২৪ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব দাবি করেন কিশোরগঞ্জ থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র এমপি সোহরাব উদ্দিন।

এসময় তিনি বলেন, অর্থ পাচারের কারণে ডলার সংকট হচ্ছে।

অপ্রদর্শিত আয় প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া না হলে অর্থ পাচার বন্ধ হবে না। ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা। আসলে এটা ভুল তথ্য।

তিনি বলেন, ১৫ শতাংশ কর অনেক বেশি। এই হারে অনেকে অপ্রদর্শিত আয় প্রদর্শন করবে না। ১৫ শতাংশ কর দিতে হলে অপ্রদর্শিত আয় কমাতে হবে। তাহলে অপ্রদর্শিত আয়ের প্রদর্শন বেশি হবে। রাষ্ট্রের ট্যাক্স আসবে। দেশে বিনিয়োগের সুযোগ বাড়বে। এক্ষেত্রে আরও সুযোগ দেওয়া যায়। আগে এটি ছিল। ইন্ডাস্ট্রি করতে জমি, মেশিনারিজ কেনার ক্ষেত্রে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নাসের শাহরিয়ার জাহেদী বলেন, ব্যাংকিং উৎস থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কমাতে হবে। সরকার বেশি ঋণ নিলে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ কমে যায়। এতে শিল্প বাণিজ্যের অগ্রগতি বিঘ্নিত হয়। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় না। তিনি বলেন, ২০১৭–১৮ সালে ব্যাংকিং উৎস থেকে সরকার নিয়েছিল ১১ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। চলতি অর্থবছরে এই ঋণ এক লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা। এদিকে সরকারের দৃষ্টি দেওয়া দরকার। সরকারের উচিত ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ কম নিয়ে বেসরকারি খাতে ঋণ বাড়তে দেওয়া।

সরকারি দলের সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নাজমা আক্তার বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে দারিদ্র অনেক কমেছে। কিন্তু কোভিড–১৯, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের মত বৈশ্বিক কারণে এখন মধ্যবিত্ত অনেকের সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। ন্যায্যমূল্যে টিসিবির ট্রাকে বিভিন্ন দ্রব্য বিক্রি করা হয়। মধ্যবিত্তদের অনেকে এখানে দাঁড়াতেও লজ্জাবোধ করেন। মধ্যবিত্তের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা করা গেলে ভাল হতো।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, কোনো প্রকল্প নেওয়া হলেই আগে গাড়ি কেনা হয়। এ প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। জুন মাস এলে তড়িঘড়ি করে টাকা তোলা হয়।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান বলেন, কিছু বুদ্ধিজীবী আর তথাকথিত বিরোধী দল টকশোতে যা খুশি তা বলেন।

বুদ্ধিজীবীরা বিএনপির ভাষায় কথা বলেন। অপরিপক্ব অশিক্ষিত একজনের কাছে সিদ্ধান্ত আসে লন্ডন থেকে। যে কারণে বাস্তবায়ন হয় না।

এদিকে বিমানবন্দরে প্রবাস ফেরত বাংলাদেশী শ্রমিকদের বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবি তুলেছেন সরকার দলীয় হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। তিনি বলেন, প্রবাসীরা যখন দেশে আসেন, আমি অনুরোধ করব বিমানবন্দরে তাদের বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার জন্য। সকল প্রবাসীদের সম্মানের সহিত দেশে আনতে হবে।

বাংলাদেশের সিভিল সোসাইটি গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান করছে না বলে দাবি করে তিনি বলেন, যে কাজগুলো করলে সমাজ কলুষিত হবে, গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হবে, রাষ্ট্র ধ্বংস হবে সেই শক্তিগুলো যখন ক্ষমতায় আসেন তখন আমাদের সিভিল বাবুরা অনেক আনন্দে দিন কাটায়। তাদের প্রতি স্পষ্ট কথা আপনারা সমালোচনা করেন, সেটা আমরা সহ্য করি, সরকারি দলে আছি চামড়া অবশ্যই আমাদের মোটা, সমালোচনা ধারণ করতে পারি। আপনাদের ন্যায্য কথাকে বঙ্গবন্ধু কন্যা গ্রহণ করেন।

১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে দেশের সিভিল সোসাইটি সামরিক শাসকদের সঙ্গে ছিল বলেও উল্লেখ করেন স্বপন।

news24bd.tv/SC