বাংলাদেশকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার স্বপ্ন চুরমার করে সেমিতে আফগানিস্তান

বাংলাদেশকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার স্বপ্ন চুরমার করে সেমিতে আফগানিস্তান

অনলাইন ডেস্ক

নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশকে বৃষ্টি আইনে ৮ রানে হারিয়ে নিজেদের প্রথম সেমিফাইনাল খেলার টিকিট নিশ্চিত করলো আফগানিস্তান। মঙ্গলবার (২৫ জুন) আর্নোস ভ্যাল স্টেডিয়ামে ইতিহাস সৃষ্টি করে অস্ট্রেলিয়ার সেমির স্বপ্নও ভেস্তে দেয় আফগানরা।

এই দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংস্টনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটের শেষ ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান করে আফগানিস্তান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করলেও জয়ের শেষ হাসিটা আফগানিস্তানই হেসেছে।

বাংলাদেশের জন্য সেমিতে ওঠার সমীকরণটা ছিলো আফগানিস্তানের দেওয়া রান তাদের ১২ ওভার ১ বলে তুলতে হতো। অন্যদিকে বাংলাদেশ তা না করতে পারলে শুধুমাত্র বাংলাদেশের জয় অস্ট্রেলিয়ার সেমির স্বপ্ন বাস্তব করতে পারতো।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্নে গুড়েবালি

আফগানিস্তানের জন্য শুধুমাত্র জয়টাই ছিলো প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে ওঠার একমাত্র পথ।

১ উইকেট ৮০ রান করে ভালো পজিশনেই ছিল আফগানরা।

এরপর রিশাদ হোসেনের লেগ স্পিন আর মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদের গতির মুখে পরে মাত্র ১২ বলে ৯ রান তুলতেই আফগানরা হারায় ৪ উইকেট। টপাটপ উইকেট পতনের কারণে শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রানের বেশি করতে পারেনি আফগানরা।  

আফগানিস্তানের হয়ে ৫৫ বলে তিন চার আর এক ছক্কায় সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। ইনিংসের একিবারে শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ১০ বলে তিন ছক্কায় ১৯ রান করে অপরাজিত থাকেন রশিদ খান। এছাড়া ২৯ বলে ১৮ রান করেন ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান।

বাংলাদেশ দলের হয়ে ৪ ওভারে ২৬ রানে ৩ উইকেট নেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। একটি করে উইকেট নেন তাসকিন ও মোস্তাফিজ।

মাঝে বৃষ্টিতে বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়। তবে বাংলাদেশের সেমির সমীকরণ মেলানোর চেষ্টা অব্যাহত থাকে। সৌম্য সরকারের সঙ্গে লিটন দাসের জুটিও লম্বা হতে দেননি রশিদ খান। ১০ বলে ১০ রান করা সৌম্যকে বোল্ড করেন তিনি।

এরপরও উইকেটে এসে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তাওহীদ হৃদয়। তারও ব্যাটে ঠিকঠাক টাইমিং হচ্ছিল না, তবুও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ৯ বলে ১৪ রান করে হৃদয় আউট রশিদ খানের বলে বাউন্ডারির কাছে ক্যাচ দিয়ে।  

তার আউটের পরই হুট করে বাংলাদেশের ইনেন্ট বদলে যায়। নূর আহমেদের ১০ম ওভারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ পাঁচটি ডট দেন, হাঁকান কেবল একটি বাউন্ডারি! এমনকি তার মধ্যে কতটা চেষ্টা ছিল, প্রশ্ন উঠতে পারে সেটি নিয়েও।  

এরপরের ওভারে আসেন রশিদ খান। বাংলাদেশের সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনার শেষ তো বটেই, ম্যাচ হারের শঙ্কাও ভর করে এই ওভারে। পঞ্চম বলে রিয়াদের ব্যাট ছুয়ে উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ ইশহাকের হাতে যায়। আম্পায়ার আউট দেননি। পরে বদলি ইশহাকের কথায় রিভিউ নিয়ে সফল হয়ে যান রশিদ। পরের বলেই রিশাদ হয়ে যান বোল্ড।

বৃষ্টিতে এক ওভার কমে আস ম্যাচের দৈর্ঘ্য। একপ্রান্তে যখন উইকেট পড়ছে, তখন আরেকদিকে বাংলাদেশের জন্য ভরসা হয়ে থাকেন লিটন। তার দিকে তখন তাকিয়ে ছিল অস্ট্রেলিয়াও। কারণ বাংলাদেশ জিতলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হতো তাদের।

যদিও এরপর স্ট্রাইকেই আসতে পারেননি লিটন। ১৮তম ওভারে তাসকিন বোল্ড হওয়ার পর আসেন মোস্তাফিজুর রহমান। এরপর তিনিও স্ট্রাইক দিতে পারেননি লিটন দাসকে। এলবিডব্লিউ হন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে ৪৯ বলে ৫৪ রান অপরাজিত থাকেন লিটন দাস।

আরও পড়ুন: সেমিতে যাওয়ার পরিকল্পনার উত্তরে বক্তব্য দিলেন শান্ত

আর তাতেই উল্লাসে ফেটে পড়ে আফগানিস্তান। এসময় বেশ আবেগঘন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় আফগানিস্তান ডাগআউটে।

এই নিয়ে প্রথমবারের মতো কোনো আইসিসি টুর্নামেন্টের সেমিতে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলো আফগানিস্তান। ৪ উইকেট শিকার করে নবীন-উল-হক ম্যাচসেরা হয়েছেন।  

news24bd.tv/SC