শঙ্কামুক্ত এমপি কেয়া চৌধুরী

ফাইল ছবি

শঙ্কামুক্ত এমপি কেয়া চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনুদানের অর্থ বিতরণ করতে গিয়ে হামলার শিকার হবিগঞ্জের বাহুবলের নারী সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী এখন শঙ্কামুক্ত। শুক্রবার সন্ধ্যায় মীরপুরে বেদে সম্প্রদায়ের মধ্যে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তার ওপর হামলা চালায় যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক তারা মিয়া ও তার লোকজন।

হামলায় আহত কেয়া চৌধুরীকে প্রথমে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকলে কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

সেখানে তাকে আইসিউতে রাখা হয়। তবে তার অবস্থা এখন আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

হামলার বিষয়ে নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রাসেলুর রহমান বলেন, মোবাইলে ভিডিও ধারণ করাকে কেন্দ্র করে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী ও উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগেরর সাধারণ সম্পাদক তারা মিয়ার লোকজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে উভয় গ্রুপের লোকজনের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।

পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে তিনি অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা জন্য প্রেরণ করা হয়।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ পরিচালক হামদুল করিম বলেন, মিরপুরে বেদে পল্লীর লোকজনকে নিয়ে সমাজসেবা কার্যালয়ের উদ্যোগে একটি অনুষ্ঠান চলছিল। সংসদ সদস্য কেয়া চৌধুরী ও উপজেলা সমাজসেবা অফিসার নুসরাত আরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।
  
এ ব্যাপারে ভাইস চেয়ারম্যান তারা মিয়া বলেন, অনুষ্ঠান চলাকালে একটি ছেলে মোবাইলে ছবি ধারণ করছিল। এ সময় সংসদ সদস্যের লোকজন তার মোবাইল ফোন নিয়ে নেন। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ উত্তেজিত হয়ে গেলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, বেদে পরিবারের ২১ জন সদস্যের হাতে সরকারি অনুদান তুলে দেওয়ার জন্য শুক্রবার বিকেলে হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার তিতারকোনা বেদেপল্লিতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা সমাজসেবা অফিস। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী। কিন্তু তাঁকে অতিথি করার কারণে অনুষ্ঠানে বাধা দেন বাহুবল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাঁরা মিয়া। বাধা পেয়ে সমাজসেবা কার্যালয় নির্বারিত স্থানে অনুষ্ঠান না করে একই উপজেলার মিরপুর পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজন করা হয়।

সেখানে অনুষ্ঠান শেষে কেয়া চৌধুরী বেদেপল্লি পরিদর্শনে গেলে বাহুবল উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. তারা মিয়া এবং হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য ও বাহুবল উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলাউর রহমান শাহেদের নেতৃত্বে একদল লোক কেয়া চৌধুরীকে বেদেপল্লিতে প্রবেশে বাধা দেন। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে তাঁরা সাংসদ কেয়া চৌধুরীকে ধাক্কা দেন। এতে মাটিতে পড়ে আহত হন কেয়া চৌধুরী। এ সময় অন্যরা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

বাহুবল সমাজসেবা কর্মকর্তা নুসরাত আরা বলেন, তিতারকোনা বেদেপল্লির লোকজনের সহায়তার জন্য কেয়া চৌধুরী সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন করেন। তাঁর এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় এ বেদেপল্লির ২১ সদস্যকে পাঁচ হাজার টাকা করে বিশেষ অনুদান বরাদ্দ দেয়। এ অনুদানের চেক হস্তান্তর করতেই তাঁরা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন।

সম্পর্কিত খবর