পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জের বিরুদ্ধে এক পরিবারকে ঘরছাড়া করার অভিযোগ

পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জের বিরুদ্ধে এক পরিবারকে ঘরছাড়া করার অভিযোগ

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাটের শরণখোলার তাফালবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই লিটনের বিরুদ্ধে একটি প্রবাসী পরিবারকে ঘরছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের ওই এসআই পরিবারের পাঁচ সদস্যকে জোরপূর্বক ঘর থেকে নামিয়ে দিয়ে বসতঘরে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন।

অমানবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৯ জুন সকালে উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বগী গ্রামে। হাতেপায়ে ধরে কান্নাকাটি করেও ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই লিটনের মন গলাতে পারেনি অসহায় ওই পরিবারের সদস্যরা।

আষাঢ়ের লাগাতার ভারী বর্ষণের মধ্যেও ঘরে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না তাদেরকে। সেই থেকে প্রায় ১৫ দিন ধরে প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তারা।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য প্রবাসী রাজ্জাক হাওলাদারের স্ত্রী সুখী বেগম অভিযুক্ত এসআই লিটনের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ও আইজিপি বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সুখী বেগম শরণখোলা প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ২০১৫ সালে পার্শ্ববর্তী বকুলতলা গ্রামের সামসুর রহমান ও তার স্ত্রী মাসুরা বেগমের কাছ থেকে এক লাখ টাকা মূল্যে সাড়ে ১৬ শতাংশ জমি কিনি।

ওই সময় বিক্রেতারা একটি বায়না চুক্তির মাধ্যমে জমির দখল বুঝিয়ে দেন। পরবর্তীতে সুযোগ মতো জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার কথা এবং চুক্তিনামায়ও তা উল্লেখ রয়েছে। সে অনুযায়ী আমরা ওই জমিতে পুকুর কেটে গাছপালা রোপণ করি এবং ঘর তুলে প্রায় ৯ বছর ধরে বসবাস করে আসছি। কিন্তু এক বছর আগে জমির দাতাদের মধ্যে সামসুর রহমান মারা যান। এই সুযোগে অপর দাতা তার স্ত্রী মাসুরা বেগম জমি বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করতে থাকেন।

সুখী বেগম বলেন, দাতা মাসুরা বেগম গত ১৯ জুন সকালে তাদের বিক্রি করা জমি পুনরায় দখল নিতে শরণখোলা থানাধীন তাফালবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই লিটনকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসেন। এসময় এসআই লিটন মাসুরা বেগমের পক্ষ নিয়ে আমার (সুখী বেগম) দুটি শিশু সন্তানসহ আমার বৃদ্ধ শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘর থেকে নামিয়ে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেন। ঘরে তালা দিয়ে তার চাবি দেলোয়ার হোসেন বয়াতী নামে এক প্রতিবেশীর কাছে জমা রেখে চলে যান এসআই লিটন ও মাসুরা বেগম।

সুখী বেগম আরও বলেন, ঘটনার পরেরদিন আমার বৃদ্ধ শ্বশুরকে নিয়ে আমি ফাঁড়িতে গিয়ে এসআই লিটনের হাতে-পায়ে ধরে ঘরের তালা খুলে দেওয়ার জন্য কান্নাকাটি করেছি। কিন্তু কিছুতেই তার মন গলাতে পারিনি। সেই থেকে ১৫ দিন ধরে আমরা অন্যের বাড়িতে আশ্রয়ে আছি। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করি।

এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে তাফালবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির ইসচার্জ এসআই লিটনের কাছে জানতে চাইলে বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছে। তাই শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়েছি।

news24bd.tv/SHS