তিন উপায়ে কমলার জনপ্রিয়তা ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা ট্রাম্পের

কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প

তিন উপায়ে কমলার জনপ্রিয়তা ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা ট্রাম্পের

অ্যান্টনি জার্চার

আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রথমে লড়তে চেয়েছিলেন জো বাইডেন। তবে তিনি উন্মুক্ত বিতর্কে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে এক রকম ধরাশায়ী হন। এর পর থেকে বাইডেনকে পার্টির প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়াতে জোর দাবি ওঠে।

এক পর্যায়ে বাইডেন সরে গেলে কমলা হ্যারিসকে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে মনোনিত করা হয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ পার্টির সবার সমর্থনে বেশ শক্ত অবস্থানে আছেন কমলা।

তবে কমলা হ্যারিসের এই শক্ত অবস্থানকে ‘হানিমুন পিরিয়ড’ হিসেবে বিবেচন করছে ট্রাম্প শিবির, যা দ্রুতই শেষ হয়ে যাবে বলে তারা মনে করছে। কমলার জনপ্রিয়তাকে গুঁড়িয়ে দিতে তিনটি পন্থা অবলম্বন করছেন  ট্রাম্প।

মার্কিন সাংবাদিক অ্যান্টনি জার্চার যুক্তরাজ্যের সংবাদ মাধ্যম বিবিসিতে লেখা একটি আর্টিকেলে এমনটিই উল্লেখ করেছেন।   

কলামিস্ট অ্যান্টনি জার্চার মনে করেন, তিন উপয়ে কমলা হ্যারিসের জনপ্রিয়তাকে ট্রাম্প প্রশ্নবিদ্ধ করতে তৎপরতা চালাচ্ছেন— 

কমলা হ্যারিস ‘র‌্যাডিক্যাল’ বামপন্থী 

বাইডেন প্রশাসনে থাকাকালে কমলা হ্যারিসের নানা পদক্ষেপের সমালোচনা করে ট্রাম্প তাকে র‌্যাডিক্যাল বামপন্থী হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন। ইতোমধ্যে উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় নির্বাচনি প্রচারসভায় কমলার গর্ভপাতের পক্ষে অবস্থান নেওয়া এবং শিশুদের ‘মৃত্যুদণ্ড’র পক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ তুলে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা এটি হতে দেব না। ’ তিনি বলেন, ‘বাইডেনের বিপর্যয়ের পেছনে অতি উদারনৈতিক চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে কমলা। ’ 

এ সময় কমলা হ্যারিসকে ‘উগ্র বামপন্থী উন্মাদ’ বলে আক্রমণ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘কমলা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য অযোগ্য। ’ 

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাতের অধিকার রক্ষার বিষয়ে সরব ছিলেন কমলা হ্যারিস, আর এ কারণেই শুরু থেকেই তাকে রিপাবলিকান শিবিরের তোপের মুখে পড়তে হয়।  

এছাড়া ২০১৯ সালে হ্যারিস  সরকার পরিচালিত একটি সিস্টেমের জন্য ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য বিমা বাতিল করার অনুমোদন দিয়েছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ প্রবেশকে সমর্থন করেছিলেন এবং অভিবাসনে শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থাকে বিলুপ্ত করার জন্য সমর্থন দিয়েছিলেন। তার এসব অবস্থানগুলো তার বর্তমান পরিস্থিতিকে দুর্বল করে দিতে পারে।  

‘বাইডেন প্রশাসনের অজনপ্রিয় পদক্ষেপ’

সাম্প্রতিক জরিপগুলোতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নাজুক অবস্থা ধরা পড়ে। অভিযোগ রয়েছে, তাঁর অভিবাসন নীতি অজনপ্রিয় ছিল। তার সময়ে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস এবং অর্থনীতি বাড়লেও ভোটাররা তাকে দ্রব্যের উচ্চমূল্যের জন্য দায়ী করেন। গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতি তার চলমান সমর্থনও তরুণ ভোটারদের মধ্যে তার সমর্থন হ্রাস করে। ট্রাম্প মনে করেন, কমলা হ্যারিসও ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসাবে তাঁর ভূমিকায় অবতীর্ণ। এভাবে বর্তমান প্রশাসনের দুর্বলতা বা অজনপ্রিয় পদক্ষেপগুলো তুলে ধেরে হ্যারিসের ওপর নেতিবাচক প্রভাব আনার চেষ্টা করছে ট্রাম্প।  

‘প্রসিকিউটর হ্যারিসকে আক্রমণ’

২০১১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন কমলা হ্যারিস। এ সময় হ্যারিস ঘোষণা দেন, তিনি সব ধরনের অপরাধীর মুখোমুখি দাঁড়াবেন। তবে প্রসিকিউটর থাকাকালে অনেককে মাদক অপরাধের জন্য বিচার না করে ছেড়ে দেন  তাদের সমর্থন আদায়ে। নতুন করে অপরাধে জড়াতে পারে এমন অনেক ব্যক্তিদের প্যারোলে মুক্তির অনুমতি দিয়েছেন তিনি। নির্বাচনি ক্যাম্পেইনে কমলাকে আঘাত করতে এসব ব্যাপরগুলো তুলে আনার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প।

news24bd.tv/আইএএম