সবজির দাম কমেছে

সবজি

সবজির দাম কমেছে

অনলাইন ডেস্ক

গত কয়েকদিন রাজধানীর বাজারে সবজির বাজার বেশ অস্থির ছিল। তবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে চাষের মাছ, মুরগি, পেঁয়াজ ও সব ধরনের সবজিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম কমেছে। সবচেয়ে বেশি কমেছে সবজির দাম। এতে করে কিছুট স্বস্তি ফিরেছে রাজধানীবাসীর মনে।

 

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা কাঁচাবাজার, মহাখালী কাঁচাবাজার, বাড্ডা ও জোয়ার সাহারা বাজারে ভালো মানের (গোল) বেগুন কেজি ৬০ ও লম্বা বেগুন কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক-দেড় সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি ভালোমানের বেগুন কিনতে হয়েছে ১০০ থেকে ১৪০ টাকায়। এখন প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। কিছুদিন আগে তা ১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।

দাম কমে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ১৪০ থেকে ২০০ টাকায়, পটল ৫০, চিচিঙ্গা ও ঢেঁড়স ৪০-৫০, পেঁপে ৫০, চালকুমড়া প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, আলু কেজি ৬০ টাকা, হাইব্রিড শসা কেজি ৫০-৬০ টাকা ও দেশি শসা কেজি ৭০-৮০, কচুমুখি ৮০, টমেটো কেজি ১৬০ থেকে ১৮০, লাউ প্রতিটি আকারভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ভ্যানে আরো কম দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে। ছোলমাইদে ভ্যানে পটল, শসা (হাইব্রিড), চিচিঙ্গা ও ঝিঙা কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

বাড্ডা কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মাহাদি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পাইকারি বাজারে পর্যাপ্ত সবজির সরবরাহ থাকায় দাম অনেক কমে গেছে। ক্রেতারা এখন এক কেজির দামে দুই কেজি সবজি পাচ্ছে। তার পরও সবজির বিক্রি কম। ’

রামপুরা কাঁচাবাজারে কথা হয় রংমিস্ত্রি মোতালেব আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাজারে এখন অন্যান্য নিত্যপণ্যের মাঝে সবজির দামটাই কম। তাই কয়েক দিন ধরে সবজি খাওয়া বাড়িয়েছি। মাছের দাম কিছুটা কমলেও এখনো নাগালের বাইরে। সাধারণত ব্যবসায়ীরা কোনো অজুহাত পেলেই বাজার অস্থির করে তোলে। বেগুন দেশেই উৎপাদন হচ্ছে, সেই বেগুনের দাম উঠিয়েছিল ১৫০ টাকায়। তখন ক্রেতারা বেগুন খাওয়া ছেড়ে দিল, আবার দাম নেমে ৬০ টাকায় এলো। ’ 

সরবরাহ সংকটে গত দেড়-দুই সপ্তাহ আগে রাজধানীর বাজারগুলোতে সব ধরনের মাছের দাম বেড়ে গিয়েছিল। এখন সরবরাহ বাড়ায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে চাষ করা মাছের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে। দাম কমে চাষের পাঙ্গাশ কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়, নলা রুই (৮০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজন) প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায়, দেড়-দুই কেজির রুই কেজি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায়, মাঝারি আকারের কাতল কেজি ৩৫০ টাকায়, দেড়-দুই কেজির মৃগেল ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  জোয়ারসাহারা বাজারের মাছ বিক্রেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আড়তে এখন মাছের ব্যাপক সরবরাহ বেড়েছে। সেই তুলনায় বাজারে মাছের চাহিদা নেই। ফলে দাম কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত কমে গেছে। ’

জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর—এই তিন মাস ইলিশ মৌসুম হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এই ভরা মৌসুমেও বাজারে চড়া দাম ইলিশের। রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে ১৩০০ থেকে ১৪০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ ২০০০ থেকে ২১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেজি ১০০০ থেকে ১১০০ টাকায় এবং ছোট আকারের তিনটি এক কেজি ওজনের ইলিশ কেজি ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।  বিক্রেতারা বলছেন, এখন জেলেদের জালে ইলিশ খুব কম উঠছে। এতে জেলেদের সাগরযাত্রার খরচাই উঠছে না। মূলত এসব কারণেই দাম কমছে না।

বাজারে এখন তুলনামূলক কম দামেই ক্রেতারা মুরগি কিনতে পারছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, সোনালি মুরগি কেজি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের মেসার্স মা আয়েশা ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘বাজারে সরবরাহ বাড়ার পর থেকেই মুরগির দাম কম। তবে আগামীকাল (আজ) মুরগির দাম কিছুটা বাড়তে পারে। কারণ পাইকারিতে কেজিতে পাঁচ টাকা বাড়তি দিয়ে কিনে আনতে হচ্ছে। ’

এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা এবং আলু কেজিতে পাঁচ টাকা পর্যন্ত কমেছে। খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ কেজি ১০০ থেকে ১১০ টাকায়, আলু কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের ডিম প্রতি ডজনে ১০ টাকা কমে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরিবর্তিত আছে রসুন ও ডালের দাম। দেশি রসুন ও আমদানীকৃত রসুন প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২১০ টাকায়, ছোট দানার মসুর ডাল কেজি ১৪০ টাকায় এবং বড় দানার মসুর ডাল কেজি ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক