ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে বৈধতা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট

সংগৃহীত ছবি

ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে বৈধতা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট

অনলাইন ডেস্ক

মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সংসদ ভেঙে দিলে দেশ পরিচালনায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও সে সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টাদের শপথ গ্রহণের পক্ষে মত দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এ মতামত পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।

রাষ্ট্রপতির পাঠানো রেফারেন্সের (মতামত) পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ গতকাল বৃহস্পতিবার বিষয়টির ওপর মতামত দেন।  প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সাত বিচারপতি ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে এই মতামত দেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। প্রধানন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। পরদিন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এ অবস্থায় দেশ পরিচালনায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা যায় কি না এবং সে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বা উপদেষ্টাদের শপথ পড়ানোর ক্ষেত্রে সংবিধানের কোনো বিধানের ব্যত্যয় ঘটে কি না, সে বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত জানতে চান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।

শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র বিষিয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। নাম-পদবি প্রকাশ না করার শর্তে এই সূত্র বলেন, ‘সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে মাহামান্য রাষ্ট্রপতি যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাহায্য চাইতে পারেন। যেহেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর মহামান্য রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দিয়েছেন এবং সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হয়েছে। সাংবিধানিক এই শূন্যতা দূরীকরণের স্বার্থে এবং দেশের নির্বাহী কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে এ রকম পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টামণ্ডলীকে শপথ পড়াতে পারেন মর্মে মতামত দিয়েছেন। ’

এই মতামতের আলোকেই রাষ্ট্রপতি বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান বলে জানান এই সূত্র। তবে কী প্রক্রিয়ায় আপিল বিভাগ এই মতামত দিয়েছেন, তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।

এ বিষয়ে আরেকটি সূত্রে জানিয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যায় কি না, এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত জানতে চান। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় ভার্চুয়াল মিটিংয়ে বসে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। শুনানিতে নবনিযুক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানও অংশ নেন বলে জানান এই সূত্র।

সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের বলা আছে, ‘যদি কোনো সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হয় যে আইনের এইরূপ কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হইয়াছে বা উত্থাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়াছে, যাহা এমন ধরনের ও এমন জনগুরুত্বসম্পন্ন যে, সেই সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ করা প্রয়োজন, তাহা হইলে তিনি প্রশ্নটি আপিল বিভাগের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করিতে পারিবেন এবং উক্ত বিভাগ স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত শুনানির পর প্রশ্নটি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে স্বীয় মতামত জ্ঞাপন করিতে পারিবেন। ’

news24bd.tv/DHL