ইউপি চেয়ারম্যানকে জুতার মালা পরিয়ে ঘোরাল বিক্ষুদ্ধ জনতা

সংগৃহীত ছবি

ইউপি চেয়ারম্যানকে জুতার মালা পরিয়ে ঘোরাল বিক্ষুদ্ধ জনতা

অনলাইন ডেস্ক

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার আবু-বকরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সিরাজ জমাদারকে জুতার মালা পরিয়ে বাজারে ঘুরিয়েছে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপরের দিকে ইউনিয়নের রৌদ্দেরহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে। পরে দুলারহাট থানা পুলিশ ও নৌবাহিনী গিয়ে স্থানীয়দের হাত থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

স্থানীয়রা জানায়, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর আবু-বকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ জমাদার তার নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনীর পাহারায় বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন।

গত মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে তিনি তার সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে স্থানীয় রৌদ্দেরহাট বাজারে মহড়াও দিয়েছেন। এসময় তিনি স্থানীয় মানুষকে বলেন, তাকে কেউ কিছু করতে পারবে না। এ ঘটনার পর স্থানীয় মানুষ তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং তার অবস্থান পর্যবেক্ষণ করতে থাকে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে তিনি বাড়িতে আছেন খবর পেয়ে বাড়ির চতুর্দিক থেকে প্রায় সহস্রাধিক মানুষ গিয়ে তাকে ধরে আনে।

এরপর মারধর করে গায়ের জামাকাপর খুলে ফেলে। পরে গলায় জুতার মালা গলায় দিয়ে স্থানীয় রৌদ্দেরহাট বাজারে এক-দেড় ঘণ্টা ধরে ঘোরায়।

দুলাহাট থানা পুলিশ খবর পেয়ে নৌবাহিনীর সহায়তায় বিক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে এবং গত জানুয়ারি মাসে স্থানীয় বাজার মসজিদের ইমাম মাওলানা মাইনুল ইসলামকে মারধরের ঘটনায় একটি মামলার প্রস্তুতি নেয়।

রৌদ্দেরহাট বাজারের ব্যবসায়ী মো. হেলাল উদ্দিন জানান, আবু-বকরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজ জমাদার টানা দুই মেয়াদে ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। প্রথমবার ভোটে নির্বাচিত হলেও দ্বিতীয়বার কোনো প্রার্থীকে তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেননি। এমনকি যে প্রার্থীই তার বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান নির্বাচন করতে চেয়েছেন তাকেই নিজের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে এলাকাছাড়া করেছেন। এ ছাড়া চেয়ারম্যান সিরাজ স্থানীয় কয়েকজন মেম্বারসহ একটি সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করেছেন। যার নাম দিয়েছেন সিরাজ বাহিনী।

এই বাহিনীর অন্যতম সদস্যরা হলেন আবু তাহের মেম্বার, রন্টু মেম্বার, জহির, নাঈম, এমরান, রনিসহ অন্তত ২০ জন। যে কেউ তার কোনো কাজের বিরোধিতা করলেই তার বাহিনী দিয়ে নির্যাতন চালানো হতো। তার এ নির্যাতন থেকে অন্য দল ও নিজ দলীয় লোকজনসহ স্থানীয় আলেম, মসজিদের ইমামসহ কেউ বাদ যেত না। চেয়ারম্যানের অপকর্মের কারণে ইউনিয়নের প্রায় ৯০ শতাংশ লোক তার বিরুদ্ধে ছিল। স্থানীয় মানুষ তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। আওয়ামী লীগের পতন হওয়ায় স্থানীয়রা তাকে মারধর করে ও জুতার মালা পরিয়ে ঘুরিয়েছে।

দুলারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাকসুদুর রহমান মুরাদ বলেন, ‘আবু-বকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে নৌবাহিনীর সহায়তায় আমরা স্থানীয়দের হাত থেকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছি। গত জানুয়ারি মাসে স্থানীয় এক ইমামকে মারধর করে গুরুতর আহত করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। মামলা হলে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

news24bd.tv/JP

এই রকম আরও টপিক