শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ

সংগৃহীত ছবি

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ

অনলাইন ডেস্ক

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছেন কেরানীগঞ্জের আগানগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন তপু। রোববার (১৮ আগস্ট) সকালে প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ চলাকালে বিদ্যালয়ের বাহিরে কয়েকজন বহিরাগত এসে শিক্ষার্থীদেরকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অবিচার করা হয়েছে।

তাদের কাছ থেকে প্রতি মাসে জেনারেটরের বিল নেওয়া হলেও বিদ্যুৎ গেলে জেনারেটর দেওয়া হয়নি। কোচিংয়ের নামে অতিরিক্ত টাকা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। কেউ কোচিং করতে না চাইলে তাকে ক্লাসে ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এ ছাড়া এসএসসি পরীক্ষার্থীদের টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করিয়ে শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে উত্তীর্ণ করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে কোনো শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে টিসি দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয় প্রধান শিক্ষক। ক্লাসে যতই ভালো ছাত্র হোক না কেন তাকে কোচিং করতে হবে। স্কুলের নির্ধারিত বেতন ছাড়াও কোনো গরিব ছাত্র কোচিং ফি দিতে না পারলে তার প্রতি কোনো প্রকার সহানুভূতি দেখানো হতো না।

শিক্ষার্থীরা আরো জানায়, প্রধান শিক্ষক আগানগর উচ্চ বিদ্যালয় ব্যতীত আরো দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পার্টনার হিসেবে স্কুলের ব্যবসা খুলে বসেছেন। স্কুলের ৪৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে বিলাসবহুল তিনটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন।

সকালে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কথা শুনে তাতে যোগ দেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের একই অভিযোগ, তারা জানান বিদ্যালয়ে অনিয়মের বিষয়ে কোনো কিছু জানালে সেটিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিদ্যালয়টির সভাপতি জাকির আহমেদ পেশিশক্তি ব্যবহার করে দমিয়ে রাখত। আগানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্কুলের সভাপতি জাকির আহমেদ প্রায় দুই কোটি টাকা স্কুলের কোষাগার থেকে হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন অভিভাবকরা।

এ ছাড়া পুরনো তারিখ দেখিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের স্ত্রীকেও নিয়োগ দিয়েছেন।

বিদ্যালয়ে একজন মাত্র বিজ্ঞান শিক্ষক যিনি বিজ্ঞানের সব ধরনের বিষয় পাঠদান করেন। যদিও বিজ্ঞানের তিনটি বিষয়ের জন্য তিনজন আলাদা বিজ্ঞান শিক্ষক প্রয়োজন। স্কুল সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মিলে শিক্ষক নিয়োগ ও তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্যে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন অভিভাবকরা।

প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন তপুকে অনিয়মের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি তার তিনটি ফ্ল্যাট ও দুটি বিদ্যালয়ে পার্টনার থাকার কথা স্বীকার করেন। তবে ৪৮ লাখ টাকার বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি জাকির আহমেদের ওপর দোষ চাপিয়ে দেন। এ ছাড়া নানা অনিমের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক কোনো সদুত্তর দিতে না পারায় সে পদত্যাগ করেন।

news24bd.tv/JP