গণমাধ্যমের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগীদের অপসারণের দাবি 

গণমাধ্যমের ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগীদের অপসারণের দাবি 

অনলাইন ডেস্ক

গণমাধ্যমসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগীদের অপসারণ করে আইনের আওতায় আনার দাবি করেছে বৈষম্যবিরোধীরা। আজ শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) এক বার্তায় এসব কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী গণমাধ্যম আন্দোলন।

তারা জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান একটি সফল বিপ্লবের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। বিপ্লবের ফসল হিসেবে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে।

সরকার এরই মধ্যে গণআকাঙ্খার অনুকূলে বেশ কিছু সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যা আমাদের আশাবাদী করে।

এই বার্তায় জানানো হয়, রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত বৈষম্য দূর হয়নি, এমনকি দূর হওয়ার কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না, যা উদ্বেগের কারণ। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তথা শত শত শহিদের রক্তের ওপর দিয়ে প্রতিষ্ঠিত এই বাংলাদেশে আর কোনো বৈষম্য, অনিয়ম ও অবিচার থাকতে পারে না।

আরও পড়ুন: নতুন ফ্যাসিবাদ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাইলেও জায়গা হবে না: নুর

লক্ষ্য করা যাচ্ছে, স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটলেও গণমাধ্যমসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে দুষ্টু কালো বিড়ালগুলো ঘাপটি মেরে রয়ে গেছে।

তারা এখনো প্রতিবিপ্লবের স্বপ্ন দেখছে এবং পতিত স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট শক্তির দালালি করে যাচ্ছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অনেকে সুযোগ বুঝে ভিন্ন সুরে ডাকতে চাইছে, যদিও এসব কালো বিড়ালের স্বর ও চেহারা জনগণ চেনে। এরা ইতিপূর্বে জনআকাঙ্খার বিরুদ্ধে গিয়ে; গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শেখ হাসিনার সরকারকে অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে নগ্ন সহযোগিতা ও সমর্থন দিয়ে ক্রমান্বয়ে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট হতে প্রভাবিত করেছে। এসব করতে গিয়ে ক্ষেত্র বিশেষে তারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতেও পিছপা হয়নি। যার কুফল দেড় দশকের বেশি সময় ধরে জনগণ ভোগ করেছে, এর কুপ্রভাব আরও বহুদিন জাতিকে বয়ে বেড়াতে হবে। অন্যায়কারীর মতো অন্যায়ের সহযোগী হয়ে এরাও সমান দোষে দুষ্ট। গণমাধ্যমে থেকে এরা মূলত সাংবাদিকতাকে কলুষিত করেছে।

আরও পড়ুন: ‘কিছুদিন ধরে আমাদের হঠাৎ মনে হচ্ছে, আমরা মুক্ত’

গণমাধ্যমের নাম ব্যবহার করে, সাংবাদিকতার মতো পবিত্র একটি পেশাকে তারা দালালির হাতিয়ারে পরিণত করেছে। তাই সাংবাদিকতাকে কলুষতামুক্ত রাখার স্বার্থে সাংবাদিক পরিচয়ধারী এই দুর্বৃত্ত ও দালালদের পেশা এবং সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমে থাকা পদ থেকে অপসারণের পাশাপাশি দ্রুত আইন ও বিচারের আওতায় আনার দাবিও জানানো হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী গণমাধ্যম আন্দোলন মনে করে, গণমাধ্যমে বিদ্যমান বহু বছরের বৈষম্য দূর না করে এবং স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগীদের বহাল রেখে প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গণঅভ্যুত্থানের সুফল প্রতিটি নাগরিকের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব নয়। কারণ, রাষ্ট্রের অতন্দ্র প্রহরী গণমাধ্যম সরকারের নীতি নির্ধারণে ভূমিকা রাখে। আর মুষ্টিমেয় ব্যতিক্রম ছাড়া এই গণমাধ্যমই কিন্তু প্রকাশ্যে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের দালালি করেছে।

এই বার্তায় আরও বলা হয়। আমরা লক্ষ্য করছি, গণঅভ্যুত্থানের পরে মাস পেরিয়ে গেলেও, গণমাধ্যমে বহাল তবিয়তে থাকা পতিত স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগীদের ব্যাপারে সাংবাদিক ইউনিয়ন ও সংগঠনগুলো দুঃখজনকভাবে নিরব ভূমিকা পালন করছে, যা তাদের পৃষ্ঠপোষকতার শামিল ও দৃষ্টিকটু। আমরা বিশ্বাস করি সাংবাদিক ইউনিয়ন ও সংগঠনগুলো গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করতে পারবে।

এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বৈষম্যবিরোধী গণমাধ্যম আন্দোলন সাত দিনের সময় দিচ্ছে। অন্যথায় পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও হুঁশিয়ার করা হয়।

news24bd.tv/SC