পাহাড়ে জলোৎসবের জোয়ার

জল মেরে কাবু করার চেষ্টা

পাহাড়ে জলোৎসবের জোয়ার

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি প্রতিনিধি

বৈসাবি শেষ, তবে শেষ হয়নি আমেজ। নতুন করে শুরু হয়েছে জলোৎসব। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মধ্যে মারমা সম্প্রদায়ের এটা প্রধান
ধর্মীয় উৎসব। যার নাম সাংগ্রাই।

মারমা ভাষায় ‘রিলংপোয়ে’। তবে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেছে জলোৎসব নামে। জলোৎসব দৃশ্য বেশ উপভোগ্য। তাই হাজারো মানুষের সমাগম ঘটেছে রাঙামাটিতে।

মারমা সম্প্রদায় ছাড়াও উৎসবে যোগ ছিয়েছে- চাকমা, ত্রিপুরা, খিয়াং, গুর্খা, অহমিয়া, তঞ্চঙ্গ্যা, উসুই, লুসাই, চাক, রাখাইন, খুমী, বমসহ বাঙালি জনগোষ্ঠীর হাজার হাজার নারী-পুরুষ। শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সের মানুষের উপস্থিতিতে জমে উঠেছে উৎসবস্থল। সাংগ্রাইকে ঘিরে উৎসবমুখর হয়ে ওঠেছে পাহাড়ি জনপদ। পার্বত্য তিন জেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নিয়ে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলা এখন উৎসবের নগরী। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী-বাঙালিসহ সব ধর্ম, বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সম্প্রীতির মিলনমেলা এ জলোৎসবকে ঘিরে।

news24bd.tv

সোমবার রাঙামাটি থেকে প্রথম জলোৎসব শুরু হয় কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেনে সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার। এ সময় রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেলারেল সৈয়দ রিয়াদ মেহেমুদ, ডিজিএফ আই কর্ণেল মো. শামসুল আলম, রাঙামাটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এসএম শফি কামাল, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে আগে থেকে তৈরি করা প্যান্ডেলে মারমা নারী-পুরুষরা একে অপরের প্রতি জল ছিটিয়ে মেরে কাবু করার প্রতিযোগিতায় সামিল হয়। এসময় কৃত্রিম ভারি বর্ষণ হয় অনুষ্ঠানস্থল জুড়ে। উৎসবের আনন্দ জলে সিক্ত হয় সবাই। পুরনো বছরকে
বিদায় আর নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আয়োজন করা হয় এ সাংগ্রাই উৎসব। কারণ পার্বত্যাঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসমূহগুলো
বৈসাবিকে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে পালন করে থাকে। চাকমারা বিজু, ত্রিপুরা বৈসুক, তঞ্চঙ্গ্যারা বিষু, ও মারমারা সাংগ্রাইং নামে পালন করে
থাকে। মারমারা সম্প্রদায় জলোৎসবের মাধ্যমে জল ছিটিয়ে পুরোন বছরের সমস্ত গ্লানি, দুঃখ, বেদনা ও অপশক্তিকে ধুয়ে মুছে দূর করে।

জলোৎসবকে ঘিরে সপ্তাহব্যাপী চলবে মারমাদের ঐতিহ্যবাহী নানা আচার-অনুষ্ঠান। অন্যদিকে শেষ হয়েছে পার্বত্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের
প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু, বৈসুক, বিষু, বিহু। অবশ্য মাসজুড়ে চলা উৎসবের উচ্ছ্বাস এখনও পাহাড়কে মাতিয়ে রেখেছে। গত রোববার উদযাপিত হয় বাংলা বর্ষবরণ উৎসব। সর্বশেষ মারমা সম্প্রদায় ঐতিহ্যবাহী জলোৎসবের মধ্যদিয়ে অর্ধমাসব্যাপী চলা
বৈসাবি উৎসব শেষ হবে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/মুমু/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর