ছিনতাইয়ের শহর মাদারীপুর

ছিনতাইয়ের শহর মাদারীপুর

বেলাল রিজভী, মাদরীপুর প্রতিনিধি

প্রতিদিনই মাদারীপুর শহরের কোথাও না কোথাও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। ছিনতাইয়ের কারণে আতঙ্কে রয়েছে মাদারীপুরের বাসিন্দারা।

সাধারণ মানুষ সন্ধ্যার পরে বাসার বাইরে বের হতেও ভয় এবং আতঙ্কে থাকেন। সম্প্রতি শহরের একাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও পুলিশের ভুমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ সাধারণ নাগরিকরা।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দিনে দুপুরেই শহরের লেকেরপাড় এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে লিমন হোসেন নামে এক ব্যবসায়ীর মোটরসাইকেল, টাকা ও মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। মোবাইল হারিয়ে গেছে মর্মে একটি জিডি করা হয়। কিন্তু উদ্ধার হয়নি খোয়া যাওয়া মালামাল।

তবে এই ঘটনায় ডিবি পুলিশের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন মাদারীপুর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আবু নাইম।

ডা. একরাম হোসেনকে অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা ছিনতাই করে ছিনতাইকারীরা। অসিম হাওলাদার নামে এক ব্যক্তির গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথে কাঠপট্রি ব্রিজের কাছ থেকে ছিনকাইকারীরা অস্ত্র ঠেকিয়ে ২০হাজার টাকা ছিনতাই করে। ওই একই দিনে কমপক্ষে পাঁচটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। শহরের ইউআই স্কুলের এক শিক্ষকের বাবাকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাই করা হয় টাকা। শহরের প্রতিটি এলাকায় বেড়েছে ছিনতাই।

সম্প্রতি শহরের ডিসি ব্রিজ এলাকায় এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। নিহতের লাশের পাশেই পড়ে ছিলো তার ব্যবহৃত ব্যাগ। এই ব্যাগটি ছিলো এলোমেলো। ধারণা করা হচ্ছে ছিনতাইতারীদের ছুরিকাঘাতেই নিহত হয়েছে ওই যুবক।
তবে পুলিশ এই হত্যার কুলকিনারা করতে পারেনি।

ব্যবসায়ী লিমন হোসেন বলেন, আমার মোটরসাইকেল, টাকা এবং মোবাইল ছিনতাই হলেও পুলিশ ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা নেয়নি। মোবাইল হারিয়ে গেছে মর্মে একটি জিডি নিয়েছে কিন্তু আমার মালামাল এখনও পাইনি।

উপজেলার স্বনির্ভর বাজার থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে ব্যবসায়ী সোহাগ বেপারীকে অস্ত্র ঠেকিয়ে প্রায় ৬ লাখ টাকা এবং চারটি মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এসময় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সোহাগকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে তিনি চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন রিয়াজুল ইসলাম ইবু নামে এক ছিনতাইকারীকে আটক করে। এসময় আটক ইবু ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করে এবং ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত মূল হোতার নামও প্রকাশ করে। ইবু জানায়, শহরের দরগাখোলা এলাকার কালাম ফকিরের ছেলে সাগরের কাছে ছিনতাই হওয়া টাকা ও মোবাইল রয়েছে। এছাড়াও তারা জেলার বিভিন্ন স্থানে সাগরের নেতৃত্বে ছিনতাই করে থাকে বলেও জানায়।

এদিকে এই ঘটনায় মাদারীপুর সদর থানায় ১৯ জুলাই একটি মামলা হলেও ছিনতাইয়ের মূলহোতা সাগর গ্রেপ্তার হয়নি।  

মামলারবাদী আমিনুল ইসলাম বলেন, আমার ভাগিনাকে কুপিয়ে প্রায় ৬ লাখ টাকা এবং চারটি মোবাইল নিয়ে গেছে। এর মূলহোতা সাগর এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। ছিনতাইয়ের টাকাও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। আমরা চাই টাকা উদ্ধার ও আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।

মাদারীপুর পৌর যুবলীগের সভাপতি কামাল হোসেন বলেন, মাদারীপুর শহরে প্রায়ই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। আমার এক আত্মীয়র কাছ থেকেও কুপিয়ে টাকা ছিনতাই করেছে। আমরা পুলিশের জোড়ালো ভূমিকা কামনা করছি।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা বলেন, এসব ঘটনা প্রতিহত করার জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে। ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর