মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ রাঙামাটির মানুষ। এরই মধ্যে হাসপাতালগুলোতে বৃদ্ধি পাচ্ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। আতঙ্কগ্রস্ত মানুষেরা মশা উৎপত্তির দায় চাপাচ্ছে সংশ্লিষ্টদের ওপর।
আক্রান্ত রোগীরা বলছেন, আন্দোলনের নামে পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে পালন করেনি কোনো দায়িত্ব।
তাই দীর্ঘ দিনের ময়লা-অবর্জনা থেকে ছড়িয়েছে ডেঙ্গু মশা। যার খেসারত দিতে হচ্ছে পৌরবাসীকে। এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনও। তাই এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে করা হয়েছে জন সচেতনামূলক সভা, সমাবেশ ও র্যালি।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি রাঙামাটিতে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে দশজন। তার মধ্যে দুজন ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে আসলেও বাকিরা সবাই ছিল রাঙামাটি শহরের। বাকিরা চিকিৎসাধীন।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগিরা হলেন- সোমা চাকমা (১৭), আতিথ্য চাকমা (২০), তোদিতা দেওয়ান (৭), মো. ইকবাল হোসেন (২৭), সৈকত চাকমা (২২), জ্ঞান বিকাশ চাকমা (৩৩), অনিন্দিতা চাকমা (২২), কণকণ চাকমা, পূর্নিমা মারমা, বাবুল মহাজন ও ওয়াহিদুল রহমান। তাদের মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত মো. ইকবাল হোসেন নামে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাঙামাটি থেকে আশঙ্কাজন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
চিকিৎসকরা বলছেন- জনসচেতনা বৃদ্ধি করা না হলেও এ রোগের প্রকোপ আরও বাড়তে পারে। তাই শঙ্কায় গঠন করা হয়েছে চিকিৎসকদের বিশেষ মেডিকেল টিম। তারা প্রতিনিয়ত প্রর্যবেক্ষণ করবে ডেঙ্গু রোগী।
রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জন ডা. শহীদ তালুকদার বলছেন, রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের প্রফেসরসহ একটি টিম গঠন করা হয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মেডিকেল টিমটি প্রস্তুত রয়েছে। যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের বিনামূল্যে সব পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাই এখনো রাঙামাটিতে ডেঙ্গু ভয়াবহতা অর্জন করতে পারেনি।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে ম্যালেরিয়াসহ বিভিন্ন মশার উৎপত্তি থাকলেও রাঙামাটিতে একেবারেই ছিল না।
কিন্তু পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের পর এ মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের কাজের গাফলতির কারণে জায়গায় জায়গায় পর্যটন শহর রাঙামাটিতে অর্বজনার স্তুপ জমেছে। অপসারণ করতে নজরদাড়ি ছিল না কারো। এসব ময়লা-অবর্জনায় জমেছে বৃষ্টির পানি তাতেই মশাদের ডিম পাড়ার নিরাপদ আবাসস্থল তৈরি হয়েছে। আর এ মশা ছড়িয়ে পরেছে রাঙামাটি শহরে। একই সঙ্গে ছড়িয়ে পরেছে ডেঙ্গু জ্বরও।
রাঙামাটি পৌর প্যানেল মেয়র মো. জামাল উদ্দীন বলছেন, রাঙামাটি শহরে যাতে ডেঙ্গু অধিপাত্য বিস্তার করতে না পারে, সে জন্য গুরুত্বসহকারে ময়রা-আবর্জনা অপসারণ করা হচ্ছে। এলাকা-বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে জন সচেতনতামূল কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। পৌর কর্মচারীরা তাদের কাজ শুরু করেছে অনেক আগে। এখন কোথাও ময়লা-আবর্জনার স্তুপ জমতে দেওয়া হবে না।
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/মুমু/তৌহিদ)