পাহাড়ে জমে উঠেছে পশুর হাট

পাহাড়ে জমে উঠেছে পশুর হাট

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

কয়দিন পর ঈদ-উল-আযহা। দিতে হবে কোরবানি। সে কথা মাথায় রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। তাই জমে উঠেছে রাঙামাটি পশুর হাটগুলো।

এসব হাটে স্থান পেয়েছে রাঙামাটির প্রত্যন্ত উপজেলার পাহাড়ি গরু, মহিষ ও ছাগল।

বন-জঙ্গলে লতাপাতা খেয়ে প্রকৃতগতভাবে বেড়ে উঠা এ পশুগুলোর প্রতি আকর্ষণ বেশি রয়েছে ক্রেতাদের। তাই ক্রেতাদের চাহিদা মত রঙ-বেরঙের হরেক রকম পশু আনা হচ্ছে রাঙামাটি শহরের হাটে। এসব গরু দেখতে বেশ মোটা তাজা।

 

পশু ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাহাড়ি অঞ্চলের গরুর স্বাস্থ্য ধরে রাখতে কোনো রকম কৃত্রিম ওষুধও প্রয়োগ করতে হয় না। এসব গরুর চাহিদা শুধু রাঙামাটিতে নয়, আকর্ষণ রয়েছে সমতলের মানুষের মধ্যেও। তাই বেশি লাভের আশায় তারা গরু সংগ্রহ করছেন রাঙামাটির দূর্গম পাহাড়ি অঞ্চল থেকে।

আবার কেউ কেউ বেশি লাভের আশায় গোপনে গরু রফতানি করছেন চট্টগ্রাম-ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। তাই স্থানীয় বাজারে গরুর চাহিদা মিটছে না বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবার রাঙামাটি শহরে বসানো হয়েছে দুই পশুর হাট। এসব পশুর হাটে বাজার দখল করেছে রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই, বরকল, লংগদু, জুরাছড়ি, নানিয়ারচর  ও বিলাইছড়ি উপজেলা পাহাড়ি গরুগুলো।

প্রায় প্রতিদিন ইঞ্জিন চালিত বোটে কাপ্তাই হ্রদ পাড়ি দিয়ে আনা হচ্ছে শত শত গরু-মহিষ ও ছাগল। একই সাথে মানুষের ভিড় বেড়েছে চোখে পরার মত। কেউ দেখতে, আবার কেউ ক্রয় করতে ছুটছে পশুর হাটে।

গরু ব্যবসায়ী জ্ঞানো চাকমা জানান, তিনি লংগদু উপজেলা থেকে গরু নিয়ে আসছেন রাঙামাটি পশুর হাটে। তার কাছে সর্বাচ্চ এক লাখ ২০ হাজার ও সর্বনিম্ম ৭০ হাজার টাকার দামের গরু রয়েছে। ক্রেতারাও আসছে, দাম করছে।

কারণ সবগুলো গরু বেশ স্বাস্থ্যবান। দুই/একদিনের মধ্যে আরও প্রচুর গরু আসবে। এখনো পর্যন্ত পশুর হাট থেকে কেউ খালি হাতে ফিরে যায়নি। সবাই কিনছে পছন্দের গরু। তাও সুলভমূল্যে। তিনি আশা  করছেন শেষ বাজারের আগে বিক্রি হতে পারে তার সবগুলো গরু।  
 
তবে এ নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে ক্রেতাদের মধ্যে। তারা বলছেন, গরুর তুলনায় দাম বেশি। দালাল চক্রের কারণে পাইকারি ব্যবসায়ীরা গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন জেলার বাইরে। প্রায় প্রতিদিন ট্রাকে ট্রাকে যাচ্ছে এসব গরু। তাই চাহিদা মিটছে স্থানীয় বাজারে।  

রাঙামাটি জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ছুফি উল্লাহ জানান, আসন্ন কোরবানির ঈদকে ঘিরে রাঙামাটি জেলায় ব্যাপক পুলিশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে পশুর হাটে জালনোট চিহ্নিত করার জন্য মেশিন দেওয়া হয়েছে।

দালাল চক্রের দৌড়াত্ব কমানোর জন্য সাদা পোশাকেও বিশেষ পুলিশের দলও সর্বক্ষণিক থাকছে পশুর হাটে। স্থানীয় ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধার্তে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

রাঙামাটি পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. জামাল উদ্দীন জানান, রাঙামাটি পৌরসভা থেকে ইজারা নিয়ে শহরে দু’টি পশুহাট বসানো হয়েছে। ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ে নিজেদের সুবিধা মতো এ হাটে পশু কেনাবেচা করতে পারছে।

এছাড়া কোরবানি দেওয়ার জন্য পৌরসভা থেকে বিভিন্ন এলাকায় স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। যাতে পৌর এলাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পরিবেশ বজায় থাকে।  


(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল)

সম্পর্কিত খবর