মৎসজীবীদের ভিজিএফ’র চাল বিতরণে অনিয়ম

মৎসজীবীদের ভিজিএফ’র চাল বিতরণে অনিয়ম

ইমন চৌধুরী, পিরোজপুর

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার ৪নং দাউদখালী ইউনিয়নে মৎসজীবীদের ভিজিএফের চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকাশ্যে এ ভিজিএফ চাল বিতরণ কালে জনপ্রতি অন্তত ৫কেজি করে চাল কম দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় তালিকাভুক্ত ক্ষোভ-অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার সরেজমিনে এ চিত্র দাউদখালী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যলয়ে দেখা যায়।

জানা যায়, চলতি বছরের ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই দীর্ঘ ৬৫ দিন ধরে জেলেদের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদেরকে (তালিকা ভুক্ত) সরকারি ভাবে ভিজিএফ এর চাল বরাদ্দ করে সরকার।  

সে ক্ষেত্রে  প্রতি জেলে পরিবারকে দুই কিস্তিতে চাল বিতরণ করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে জনপ্রতি প্রথমে জুন মাসে ৪০ এবং চলতি মাসে ২য় বার ৪৬ কেজি ৬৬০ গ্রাম বরাদ্দ দেয়া হয়।

কিন্তু ৪নং দাউদখালী ইউনিয়নে মৎসজীবীদের ভিজিএলফরে চাল বিতরণে উল্টো চিত্র বাস্তবায়ন করেছে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ কতৃপক্ষ।

 

মঙ্গলবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদের নিচতলায় চেয়ারম্যান মোঃ ফজলুল হক খান (রাহাত) ভিজিএফ চাল বিতরণের উদ্বোধন করেন। এরপর পরিষদ ভবনের উপর তলায় শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে অবস্থান নেন চেয়ারম্যান। আর তখন থেকেই চলতে থাকে জনপ্রতি ৪৬ কেজি ৬৬০ গ্রাম চাল না দিয়ে ৪/৫ কেজি করে কম দেওয়ার মহোৎসব। খোদ ট্যাগ অফিসার ও মৎস সুপারভাইজারের দুইজনের একজনকেও  দুপুর ১টা পর্যন্ত দেখা যায়নি চাল বিতরণের স্থানে।

এই পুরো বিতরণকালীন সময় আবার ট্যাগ অফিসার হিসাবে দায়িত্বে থাকা সমাজসেবা বিভাগের ফিল্ড সহকারী মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন এবং মৎস বিভাগের ফিল্ড সহকারী মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।  

এদিন বিকাল পর্যন্ত কেবল মাত্র ১নং ওয়ার্ড বাদে বাকি ৮টি ওয়ার্ডে ভিজিএফ কার্ড ধারীদের দাউদখালী ইউনিয়নে অনুমোদিত ভিজিএফ কার্ডের সংখ্যা ৭২৯ তার মধ্যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৭১১ জনকে।  
    
এ ব্যাপারে ভিজিএফের চাল নিতে আসা নলবুনিয়া ৭নং ওয়ার্ডের কৃষ্ণকান্ত ঘরামীর স্ত্রী যুথিকা রানী, শ্যামল ঘরামীর স্ত্রী পারুল রানী এবং মৃত কার্তিক চন্দ্র শীলের পুত্র নারায়ন চন্দ্র অভিযোগ করে বলেন, তাদের প্রত্যেককেই ৪০/৪১ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে।

তবে চেয়ারম্যান মোঃ ফজলুল হক খান (রাহাত) চাল কম দেওয়ার অভিযোগের বিষয় অস্বিকার করে বলেন, চাল বরাদ্দ কতটুকু তা আমি জানি না। মাল আনার জন্য কোনো ক্যারিং দেয় না, এবার ক্যারিং এর জন্য ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে কেরিংবাবদ ২ কেজি বা গোডাউনে বস্তাপ্রতি শট আছে। খরচের জন্য ইউএনও স্যার দুই কেজি করে কম দিতে পারেন বলেছেন। সে মিটিংএ আমি যাইনি, আমার প্যানেল চেয়ারম্যান গেছে।

জেলা মৎস কর্মকর্তা মোঃ মোশারফ হোসেন জানান, সাগরে ৬৫ দিনের জন্য মৎস আহরণ নিষেধাজ্ঞার কারণে ভিজিএফ কার্ডধারী প্রত্যেক জেলেকে এবারে ৪৬ কেজি ৬৬০ গ্রাম চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।


(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল)

সম্পর্কিত খবর