অচেতন করে স্ত্রীকে ১৫ টুকরো করে স্বামী

খুন

অচেতন করে স্ত্রীকে ১৫ টুকরো করে স্বামী

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর হাত ও দুই পা ৮ টুকরো, নিতম্ব ও উরু ৫ টুকরো, বুক থেকে পেট পর্যন্ত একটিসহ মোট ১৫ টুকরো করে পলিথিনভর্তি করে নদীতে ফেলে স্বামী।

অভিযুক্ত মামুনকে মঙ্গলবার রাত দুটার দিকে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার কবিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বুধবার দুপুর তিনটার দিকে গাজীপুরের পুলিশ সুপারের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন গাজীপুরের পুলিশ সুপার শাসুন্নাহার।

তিনি জানান, পারিবারিক কলহ ও স্ত্রীর জমানো ৪০ হাজার টাকা ভোগ করার জন্য স্ত্রী সুমি আক্তারকে সে হত্যা করে।

পুলিশ সুপার জানান, স্বামী মামুন স্বীকার করে যে, ৮ আগস্ট স্ত্রী সুমি আক্তারকে হত্যার পরিকল্পনা করে মামুন। সে অনুযায়ী ৫ কেজি ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ২৫০ গ্রাম পলিথিন ব্যাগ, একটি চাকু, তিনটি ট্রাভেল ব্যাগ ও ঘুমের ওষুধ ক্রয় করে এনে বাসায় রাখে মামুন। ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে একই রাত একটার দিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে লাশের হাত ও দুই পা আট টুকরো, নিতম্ব ও উরু থেকে পাঁচটি, বুক থেকে পেট পর্যন্ত একটিসহ মোট ১৫ টুকরো করে।

৯ আগস্ট ভোর ছয়টায় লাশের শরীরের অংশ ট্রাভেল ব্যাগে ভর্তি করে স্বামী মামুন গাজীপুরের সিংহশ্রী সেতুর ওপর থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়। একইদিন রাতে দেহের অন্যান্য অংশের পাঁচটি টুকরো ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে পলিথিনে পেঁচিয়ে রেখে হাত, পা’য়ের টুকরো ও মাথা আরেকটি ট্রাভেল ব্যাগে নিয়ে একইস্থানে ফেলে দেয়।

এদিকে, তাদের ভাড়া বাসায় এসে সুমি আক্তারের স্বজনেরা কোনো খোঁজ না পেয়ে বাসার তালা ভেঙ্গে নতুন তালা লাগিয়ে যাওয়ায় ওই পাঁচটি টুকরো নিতে না পেরে মামুন পালিয়ে যায়।

নিহত সুমি আক্তার (২২) নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার দেবকান্দা গ্রামের নিজাম উদ্দিনের মেয়ে ও গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বড়বাড়ি গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে মামুনের স্ত্রী। গত দেড় বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। এটি উভয়েরই দ্বিতীয় বিয়ে।

সুমি স্থানীয় গিলারচালা এলাকার একটি গার্মেন্টস লিমিটেডের শ্রমিক ও স্বামী মামুন পেশায় ইলেক্ট্রিশিয়ান। তারা গিলারচালা গ্রামের সফিকুল ইসলাম বিপুলের বাড়ির ভাড়াটিয়া। দেড় মাস আগে তারা ওই বাড়িতে ভাড়ায় উঠেন। সোমবার রাত নয়টার দিকে শ্রীপুর থানা-পুলিশ পলিথিনে মোড়ানো মাংস পুটলি উদ্ধার করেন।  

সুমি আক্তারের বোন বৃষ্টি আক্তার বলেন, বৃহস্পতিবার কারখানা ছুটির পর ওই রাতেই নেত্রকোনা বাবার বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল সুমির। খোঁজ নিতে শুক্রবার স্বামী মামুনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে সে (স্বামী মামুন) জানায় সুমি বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছে। পরদিন শনিবারও বাড়িতে না যাওয়ায় বৃষ্টি আক্তার নিজে তাদের ভাড়া বাসায় খোঁজ নিতে আসেন। সেখানে তাদের কাউকে পাননি এমনকি, মামুনের মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। পরে সোমবার সন্ধ্যায় আবার খোঁজ নিতে এসে ঘর থেকে পঁচা মাংসের গন্ধ পেয়ে আশপাশের লোকদের ডেকে আনেন। এতে স্থানীয় লোকদের সন্দেহ হলে তালা ভেঙ্গে তারা ঘরে ঢুকেন। পরে ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার খুলে পাঁচটি পলিথিন ব্যাগে মোড়ানো মাথাবিহীন দুর্গন্ধযুক্ত মাংসের সন্ধান পান।  

শ্রীপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) রাজীব কুমার সাহা জানান, নিহত সুমি আক্তারের স্বজনদের খবরে পলিথিনে মোড়ানো মাংস উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার শ্রীপুর থানায় মামলা হয়েছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর