হোটেলকক্ষে প্রেমিক-প্রেমিকার লাশ, পাশে সুইসাইড নোট

ম্যাপ

হোটেলকক্ষে প্রেমিক-প্রেমিকার লাশ, পাশে সুইসাইড নোট

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল মিন্টু দেব আর রুমি পালের মধ্যে। ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখছিলেন তারা। তবে নিজেদের সম্পর্কের বিষয়ে পরিবার থেকে সমর্থন পাচ্ছিলেন না তারা।  সম্প্রতি রুমি পালের বিয়ে অন্যত্র দিতে উঠেপড়ে লাগে তার পরিবার।

 দু'জনের এই আলাদা হয়ে যাওয়ার শঙ্কা এলোমেলো করে মিন্টু-রুমির মনকে। আর এই শঙ্কাই তাদেরকে ঠেলে দেয় মৃত্যুর দিকে।

পুলিশ বলছে, যে হোটেলে তারা দুজন উঠেছিলেন, সেখানে তাদের কক্ষে সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে। এছাড়া রুমিকে হত্যা করে মিন্টু নিজে আত্মহত্যা করেছিলেন কি না, তা জানতে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার অপেক্ষা করছে পুলিশ।

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট উজানীনগর গ্রামের মিলন পালের মেয়ে রুমি পাল। মিন্টু দেব সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার জগন্নাথবাড়ি গ্রামের মতিলাল দেবের ছেলে। মিন্টু ও রুমির মধ্যে দূরসম্পর্কের আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। রুমি সম্পর্কে মিন্টুর খালাতো বোন। মিন্টু ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারী একটি বেসরকারি কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অন্যদিকে রুমি জৈন্তাপুরে একটি স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জগন্নাথপুরে আত্মীয়দের বাড়িতে যাওয়া-আসা ছিল রুমি পালের। এ থেকেই মিন্টু দেবের সাথে তার ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত রবিবার তারা দু'জনে সিলেট নগরীতে মিলিত হন। নগরীর সোবহানীঘাট পয়েন্টে ‘হোটেল মেহেরপুরে’ মুসলিম ও দম্পতি পরিচয়ে নিজেদের নাম ‘মিন্টু মিয়া’ ও ‘রুমি বেগম’ লিখে ২০৬নং কক্ষে ওঠেন তারা।

হোটেল সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার সন্ধ্যার পরে রুমি পাল তার দুলাভাইয়ের মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ পাঠান। তাতে লেখা ছিল 'সিলেটে হোটেল মেহেরপুরে ২০৬নং কক্ষে আমরা আছি। আমরা আত্মহত্যা করছি'। হোটেলে এসে রুমির দুলাভাই হোটেল ব্যবস্থাপককে বিষয়টি জানান। রাত ১০টার দিকে পুলিশ হোটেলের ওই কক্ষের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে রুমির লাশ বিছানায় দেখতে পায়, পাশেই সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলছিল মিন্টু দেবের নিথর দেহ।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব বলেন, আলামত দেখে মনে হয়েছে মিন্টু প্রথমে রুমিকে হত্যা করেন। পরে নিজে আত্মহত্যা করেছেন। তবে বিষয়টি আমরা সবদিক থেকে খতিয়ে দেখছি।

এদিকে, মিন্টু ও রুমির হোটেল কক্ষ থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, ওই সুইসাইড নোটে নিজেদের মৃত্যুর বিষয়ে বিস্তারিত লিখে গেছেন তারা। তবে পুলিশ এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ।

পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াহাব বলেন, আমরা সুইসাইড নোট পেয়েছি। তবে তাতে কি আছে, তা তদন্তের স্বার্থে এখনই বলা যাচ্ছে না।

মিন্টু ও রুমির মরদেহ ওসমানী হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষা করছে পুলিশ।

সম্পর্কিত খবর