'অবসরের আগে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নের মুকুট দিতে চাই দেশকে'

প্রবাসীদের সাথে প্রশ্নোত্তর পর্বে সাকিব আল হাসান

'অবসরের আগে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নের মুকুট দিতে চাই দেশকে'

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে :

বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বললেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আমরা একটি পর্যায়ে এনেছি। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এই পর্যায় থেকে আরেকটি পর্যায়ে নিয়ে যাবে এবং আমি খুবই আশাবাদী যে, নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটাররা বর্তমানের মত সর্বস্তরের মানুষের ভালবাসা পেতে থাকলে নিশ্চয়ই বিশ্ব-ক্রিকেট ইতিহাসে বাংলাদেশ অনন্য এক স্থান দখলে রাখতে সক্ষম হবে।

৩০ বছর বয়সী সাকিব আরও বলেন, ‘শরীর যদি পারমিট করে তাহলে আরও ১০ বছর পর্যন্ত খেলতে পারবো ইনশাআল্লাহ। আর আমার স্বপ্ন হচ্ছে, অবসরে যাবার আগে বাংলাদেশকে বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়নের মুকুট উপহার দেওয়ার।

গতকাল শুক্রবার রাতে নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে একটি মিলনায়তনে প্রবাসীদের মুখোমুখি হয়ে এভাবেই বাংলাদেশের ক্রিকেটকে নিয়ে নিজের মনের কথা বলে যান বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।

এদিন সাকিব কথা বলেন বলিউড কিং শাহরুখ খানের কথাও। কলকাতা নাইট রাইডারের মালিক হচ্ছেন শাহরুখ খান। সাকিব খেলেন সেই টিমে।

এর ফলে শাহরুখ সম্পর্কে সাকিবের অনেক  ধারণা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সাকিব বলেন, ‘খুবই হাম্বল এবং বন্ধুসুলভ আচরণ করেন। বাংলাদেশের খেলা তিনি অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে দেখে থাকেন। আমার সাথে যখনই কথা হয়, তিনি আমাদের টিমের খেলা পর্যালোচনা করেন এবং বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন। ’ 

সাকিব আরও বলেন, ‘একই সাথে আমাকে উপদেশ দেন কীভাবে ভালো বাবা এবং ভালো স্বামী হওয়া যায়। ’

নিজের প্রেম এবং বিয়ে প্রসঙ্গে সাকিব বলেন, ‘ফেসবুকে পরিচয় ঘটে উম্মে আহমেদ শিশিরের সাথে। এত সুন্দর মেয়ে, ছবি দেখেই অভিভূত হই। এক পর্যায়ে মনে হয়েছিল যে, এটি হয়তো কোন ফেইক আইডি। কিন্তু বাস্তবেই যে সে ... ছিল। লন্ডনে খেলার সময় দেখা হয় দু’বার। এরপরই বিয়ে। প্রেম করার তেমন সুযোগ ঘটেনি। তবে তাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্তটি ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে ভালো এবং সময়োপযোগী একটি সিদ্ধান্ত। কারণ, বিয়ের পর আমি আরও বেশী উৎসাহ পাচ্ছি ক্রিকেটের প্রতি। ’ 

সাকিবের দু’বছর বয়সী কন্যা আলেনা হাসান অব্রেসহ স্ত্রী শিশির থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের মেডিসন সিটিতে।  
গতকাল শুক্রবার রাতে প্রবাসীদের মুখোমুখী হওয়ার চমৎকার এ আয়োজন করেছিল ‘শো টাইম মিউজিক’ নামক একটি বিনোদন সংস্থা। এ সংস্থার প্রেসিডেন্ট আলমগীর খান আলমের আমন্ত্রণে সর্বস্তরের প্রবাসীর সমাগম ঘটেছিল। বক্তৃতার কোন সুযোগ ছিল না। সরাসরি প্রশ্নোত্তর পর্বে চলে যান সাকিব আল হাসান। ক্রিকেট এবং ব্যক্তি জীবনের যাবতীয় প্রশ্নে তিনি ছিলেন প্রফুল্ল। অবলিলায় তা বিবৃত করেছেন প্রবাসীদের কৌতুহল মেটাতে।

এর আগে সাকিবকে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন বহু বছর যাবৎ নিউইয়র্কে বসবাসরত আরেক কৃতি অ্যাথলেট ও সাপ্তাহিক ঠিকানার প্রেসিডেন্ট সাঈদ-উর রব। ১৯৮০ সালে এই রব ডিসকাস থ্রো-তে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েছিলেন।  

এ সময় নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান এম আজিজ, প্রখ্যাত ব্যবসায়ী ও সমাজকর্মী সাঈদ রহমান মান্নান, কণ্ঠশিল্পী রিজিয়া পারভিন, বাংলাদেশ সোসাইটির সেক্রেটারি রুহুল আমিন সিদ্দিকী, আহসান হাবীব শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। গভীর রাত অবধি চলা এ অনুষ্ঠানে আগতরা সাকিবের সাথে ফটো সেশনের পাশাপাশি সেলফিতেও মেতেছিলেন।  

প্রসঙ্গত, গত শনি ও রবিবার ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠিত ‘ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লীগ’র খেলায় অংশ নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন সাকিব আল হাসান।

 হৃদ্যতাপূর্ণ এ আলাপচারিতায় বিশিষ্টজনদের মধ্যে ছিলেন আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি লাবলু আনসার এবং সেক্রেটারি শহিদুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ আহমেদ, সাংবাদিক মিজানুর রহমান, কানু দত্ত, আজিমউদ্দিন অভি, যুক্তরাষ্ট্র শাখা ‘রিয়াল এডমিরাল মাহবুব আলী খান স্মৃতি সংসদ’র সেক্রেটারি মাজহারুল ইসলাম জনি প্রমুখ।  

সম্পর্কিত খবর