চোখের পলকে অন্যের বাচ্চা নিয়ে উধাও! [ভিডিও]

হাসপাতালগুলোকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বাচ্চা চোর সিন্ডিকেট

চোখের পলকে অন্যের বাচ্চা নিয়ে উধাও! [ভিডিও]

টিম আন্ডারকাভার প্রতিবেদন

১০ মাস ১০ দিন গর্ভে ধারণের পর সন্তানের মুখে মা ডাক শোনার সুযোগটুকু হচ্ছে না। ঘুমন্ত মায়ের কোল থেকেই হারিয়ে যাচ্ছে নবজাতক। কখনো বদলে যাচ্ছে সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুটি। চলে যাচ্ছে অন্য কোন গন্তব্যে।

অনেক সময় মাকে জানানো হচ্ছে তিনি মৃত সন্তান প্রসব করেছেন। নাড়িছেড়া ধনকে ছাড়াই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে গর্ভধারিণী মাকে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোতে ঘটছে এসব শিশু চুরির ঘটনা। আর চুরি যাওয়া এসব শিশু বিক্রি হচ্ছে দুই-তিন হাজার থেকে শুরু করে কয়েক লাখ টাকায়।
টিম আন্ডারকাভারের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই বাচ্চা চুরি সিন্ডিকেটের ভেতরের খবর। কারা এর সঙ্গে জড়িত? কোথায় যায় এসব বাচ্চা- এমন নানা তথ্য।

সুমাইয়ার কোল থেকে তিন মাসের শিশু জিমকে চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল বাচ্চা চোর সিন্ডিকেট। ২০১৭ সালের ১৭ নভেম্বরের ঘটনা। সেদিন অসুস্থ স্বামী জুয়েলের চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে আসেন সুমাইয়া। সঙ্গে তিন মাসের মেয়ে জিম ও তার বোনের ছেলে রাফসান। পোশাক শ্রমিক স্বামী জুয়েলের শরীরে ক্যান্সারসহ কিডনি ও লিভারের নানা রোগ বাসা বেঁধেছিল। দারিদ্র সীমার নিচে বাস করা সুমাইয়াদের ঠিকানা হয় ঢামেকের ৭০১ নম্বর ওয়ার্ডে। সুমাইয়াদের মতো যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় এমন অনেকেরই ঠাঁই হয় এই ওয়ার্ডে। স্বজন-সন্তান নিয়ে কারও মেঝেতে, কারও জায়গা হয় বারান্দায়। সেভাবেই স্বামীর বিছানার পাশে ঠাঁই হয়েছিল সুমাইয়া ও তার তিন মাসের সন্তান জিমের। স্বামীর জন্য দুঃশ্চিন্তা ও টানা পরিশ্রমে সুমাইয়ার চোখ যখন ঘুমে বুজে আসতে চাইছে, ঠিক তখনই এক ব্যক্তির ডাকে সুমাইয়া বুঝতে পারে পাশে ঘুম পাড়িয়ে রাখা তার সন্তানটি আর নেই। মুহূর্তে চারদিকের পরিবেশ অন্যরকম হয়ে যায়। শুরু হয়ে যায় ছুটোছুটি। কিন্তু, না, কোথাও মেলে না ছোট্ট জিমের দেখা। ততক্ষণে বাচ্চা চোর সিন্ডিকেটের দখলের চলে গেছে সুমাইয়ার বুকের ধন। সন্তান হারিয়ে সুমাইয়া তখন পাগলপ্রায়। বার বার মূর্ছা যান। ১৭ ঘণ্টা পর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মনোয়ারার বাড়ি থেকে জিমকে উদ্ধার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ফিরিয়ে দেয় মায়ের কোলে। সেদিন মনোয়াারার চোখে যে খুশির ঝিলিক দেখা গিয়েছিল, সেই ঝিলিক কিন্তু হাসপাতাল থেকে সন্তান হারানো আর সব মায়েদের চোখে দেখা যায়নি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চুরি যাওয়া বাচ্চাগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

সেদিন যে মনোয়ারার বাসা থেকে জিমকে উদ্ধার করা হয়েছিল তিনিও ঢামেকে কাজ করতেন। তখন মনোয়ারাসহ আরও কয়েকজনের নামও উঠেছিল যারা ঢাকা মেডিকেল থেকে বার বার বাচ্চা চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছেও নামগুলো পরিচিত। কিন্তু, বাচ্চা চুরির অপরাধে যাদের নাম পুলিশের খাতায়, তারা এখনো কাজ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে।

বাচ্চা চুরি সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত এমনই একজন ফরিদা। ঢাকা মেডেকেলের আশপাশে চায়ের দোকানে, হাসপাতালের বারান্দায়, কখনো ওয়ার্ডের মধ্যে ঘুরতে দেখা যায় তাকে। পুলিশের তথ্যমতে তিনি তিনটি বাচ্চা চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত এবং জেলফেরত আসামি। যতবারই বাচ্চা চুরির ঘটনা ঘটে, ততবারই ফরিদার নাম উঠে আসে। তবে ফরিদা বহাল তবিয়তে তার অপরাধ ঘটিয়ে যাচ্ছেন এটাই বাস্তবতা। টিম আন্ডারকাভারের গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়ে বাচ্চা চুরি নিয়ে ফরিদার দম্ভোক্তি। চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে দিতে ফরিদা বলেন, ''আরে দুরো...জেল আমার ভাগ্যে ছিল...তিন মাস...তাতে কী হইছে? আমি ওইখানে গিয়া হজ কইরা আইছি। এইখানে যে জাউ...(অশ্লীল শব্দ) করি, ওইখানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ছি, রোজা রইছি...ওইডাতো আমার জন্য শৌখিন জায়গা আছিল। ''

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩০ বছর ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে একটি চক্র বাচ্চা চুরি করছে। শুধু ২০১৭ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও তার আশপাশের এলাকা থেকে নয়টি বাচ্চা চুরির অভিযোগ উঠেছে। বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা তিনগুণ। তাহলে গত ৩০ বছরে চুরি যাওয়া বাচ্চার সংখ্যা কত? সংখ্যাটা সবারই অজানা। কিছু ঘটনা প্রকাশ্যে আসলেও অধিকাংশ ঘটনাই চাপা পড়ে যায়। এসব চুরি যাওয়া বাচ্চার একটা অংশ যায় নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে, আরেকটি অংশ যায় অপরাধ জগতে।

শিশু চুরির ঘটনা অনেক আগে থেকে ঘটলেও সম্প্রতি এ সিন্ডিকেট বেশি তৎপর হয়ে উঠেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে অনেক নিঃসন্তান দম্পতি এখন সন্তান কিনতে এসব সিন্ডিকেটের দ্বারস্থ হচ্ছেন। তাই শিশু চুরির ঘটনাও বেড়ে গেছে। হাই কোর্টের আদেশ, র‌্যাব-পুলিশের অব্যাহত অভিযান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন রকম তৎপরতার পরও মায়ের কোল খালি করার ঘটনা থামছে না। আগে রাজধানীতে হাতে গোনা কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে শিশু চুরির ঘটনা ঘটলেও ইদানীং এর দৌরাত্ম্য সারা দেশে বিস্তৃত হয়েছে।

র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এমরানুল হক বলেন, আমরা ফরিদা, জাহানারা, মনোয়ারা এমন বেশ কিছু নাম পেয়েছি যারা প্রায় ৩০ বছর ধরে বাচ্চা চুরি চক্রের সঙ্গে জড়িত।  

ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, বরিশাল ও কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতাল-ক্লিনিক থেকেও বেশ কয়েকটি শিশু চুরির ঘটনায় অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন। অনেকেই এখন সন্তান জন্মদানের জন্য হাসপাতালে যেতে ভয় পাচ্ছেন। এসব শিশু চোর সিন্ডিকেটের অনেক সদস্য দীর্ঘদিন একই কাজ করে যাওয়ায় পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন। কেউ কেউ এ কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়লেও কিছুদিন জেল খেটে ফিরে এসে ফের একই কাজে লিপ্ত হচ্ছেন। হাসপাতাল  ও ক্লিনিকগুলোর অনেকেই তাদের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল। তারপরও তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে কোহিনুর ও মনোয়ারা সিন্ডিকেট বেশি ভয়ঙ্কর। সারা দেশে এ চক্রের অর্ধশতাধিক সদস্য সক্রিয়। এ পর্যন্ত ঢামেক হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল-ক্লিনিকে যতগুলো শিশু চুরি হয়েছে, ঘুরেফিরে এই সিন্ডিকেটের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।  

জানা গেছে, রাজধানীর সরকারি হাসপাতাল, বেসরকারি ক্লিনিক ও নার্সিং হোম ঘিরে ‘বহিরাগত আয়া’দের সমন্বয়ে শিশু চুরি ও বেচাকেনার শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। সিন্ডিকেটের সদস্যরা হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ড থেকে চুরি করা শিশুদের বিক্রি করছে। বড়জোর তিন-চার হাজার টাকা, এমনকি এর চেয়েও কম দামে বিক্রি হচ্ছে ছেলে কিংবা মেয়েশিশু। সামান্য বকশিশের বিনিময়ে গ্রাহকের পছন্দমাফিক ‘নবজাতক’ পাল্টে দেওয়ার অপকর্মও করছে সিন্ডিকেটের সদস্যরা। ক্ষেত্রবিশেষ চুরি যাওয়া এসব শিশুর দাম ওঠে ২-৩ লাখ টাকা।

 

২০১৬ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ঢামেক হাসপাতাল থেকে নাসিমা খাতুনের সাড়ে তিন মাসের শিশু খাদিজা আক্তার চুরি হলেও আজ পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, নবজাতক চুরি হলে তা উদ্ধার করার জন্য সময় পাওয়া যায় খুব কম। দুই দিনের মধ্যেই বাচ্চার চেহারায় পরিবর্তন আসে। তিন-চার দিন পার হলে আরও বদলে যায় চেহারা। তখন সেই বাচ্চা উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়ে।

২০১৪ সালের ২০ আগস্ট ঢামেক হাসপাতালের ২১৩ নম্বর লেবার ওয়ার্ড থেকে রুনা বেগমের দুটি যমজ নবজাতকের একটি চুরির ঘটনা ঘটে। ২০১২ সালের ২৩ এপ্রিল যাত্রাবাড়ীর মীরহাজিরবাগের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী শিল্পীর নবজাতক শিশু ঢামেক হাসপাতালের ২১২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে চুরি হয়। এসব শিশু চুরির ঘটনা হাসপাতালের সিসি টিভির ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়ে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘শিশু চুরিসহ নানা ধরনের অপরাধ ঠেকাতে আমরা বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। উন্নতমানের নাইটভিশন আইপি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। বর্তমানে মোট ক্যামেরার সংখ্যা ১১৮টি। পর্যায়ক্রমে ক্যামেরার সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। ’ তিনি বলেন, শিগগিরই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ঢামেক হাসপাতাল চত্বরে বিশেষ অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।

র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এমরানুল হক বলেন, ‘শিশু চুরি সিন্ডিকেটে বিভিন্ন ধরনের লোক জড়িত। তদন্তে দেখা যাচ্ছে, নিঃসন্তান দম্পতিদের চাহিদা মেটানোর জন্য এ সিন্ডিকেট অন্য আরেক মায়ের কোল খালি করে ব্যবসা করে যাচ্ছে। ঢাকা মেডিকেলের আশপাশে গজিয়ে ওঠা নামমাত্র ক্লিনিকেই এ সিন্ডিকেটের সদস্যদের আখড়া। এই অপরাধ ঠেকাতে ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে কিছু সুপারিশ করেছি। জানতে পেরেছি তারা ওই সুপারিশ অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ’ 

২৫ ফেব্রুয়ারি বিকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের লেবার রুম থেকে নবজাতক চুরির সন্দেহে ডাক্তারি ইউনিফর্ম পরা রাজ (১৯) ও ফারজানা আকতার মণি (২৬) নামে দুজনকে আটক করে পুলিশ। এর আগে ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর শিশু চোর চক্রের সদস্য সন্দেহে দুজন নারীকে আটক করা হয়। ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই নবজাতক চুরির ঘটনায় হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় সুজন দত্ত (৩০) ও তার স্ত্রী রীনা দে (৩২)-কে আটক করে র‌্যাব। অভিযোগ আছে, হাসপাতালের ওয়ার্ডবয়, আয়া, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তরা একশ্রেণির দালালের মাধ্যমে শিশু চুরিসহ নানা অপরাধ সংঘটিত করে চলেছেন। হাসপাতালকে কেন্দ্র করে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয়। এদিকে হাসপাতালে বসানো সিসি ক্যামেরাগুলোর অধিকাংশই নষ্ট, যে কারণে শিশু ও পণ্য চুরিসহ নানা অপরাধ ঘটলেও অনেক সময় প্রয়োজনীয় প্রমাণের অভাবে অপরাধী শনাক্ত করা যায় না।

শিশু চোরদের ক্ষমতার উৎস কোথায়?

শিশু চোরদের হাতেনাতে আটক করে মামলা দিয়েও জেলে আটকে রাখা সম্ভব হয় না। আইনের ফাঁক গলে তারা দ্রুতই জামিনে বেরিয়ে আসে। আবার আস্তানা বদলে একই  কাজে মেতে ওঠে। রাজধানীতে নবজাতক চুরির ‘গডমাদার’ হিসেবে চিহ্নিত দীপালির আস্তানায় নবজাতক বেচাকেনা আর রদবদল হয় হামেশা। মাত্র চার বছরের তৎপরতায়ই দীপালি ও তার সহযোগীরা ঢামেক হাসপাতাল, মিটফোর্ড ও আজিমপুর মাতৃসদন থেকে অন্তত ৩০টি নবজাতক চুরি করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। দীপালির ঘনিষ্ঠ সহযোগী হলেন নিলুফা বেগম, মুন্নী আক্তার ও নাসিমা বেগম। ইসমত আরা দীপালির বাসায় শিশু বিক্রির দরদাম চলাকালে নবাবপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে এ চক্রের চারজনকে আটক করে। কিন্তু দুই সপ্তাহ না পেরোতেই সেই দীপালি ও তার সহযোগীরা আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আবার একই অপরাধে জড়িয়ে পড়েছেন। এর আগে বিভিন্ন সময় চুরি করা নবজাতকসহ বার বার আটক হলেও অদৃশ্য ইশারায় দ্রুতই ছাড়া পেয়ে আবার শিশু চুরির অপকর্মে লিপ্ত হয় তারা।

এদিকে বাচ্চা চুরির ঘটনায় মামলাগুলো হচ্ছে চুরির মামলা। ভুক্তভোগীরা দণ্ডবিধির ৩৭৮ ধারায় চুরির মামলা করেন যার বিচার শুরু হয় দণ্ডবিধির ৩৭৯ ধারায়। যেখানে সর্বোচ্চ শাস্তি তিন বছর। আবার কোন কোন মামলা অপহরণের ধারাতেও করা হয়েছে। তবে পুলিশের তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত কারও ছয় মাসের বেশি সাজা হয়নি। বেশিরভাগ মামলায় আসামি অজ্ঞাতনামা।

মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবী এলিনা খান বলেন, মামলাগুলোয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারা যোগ হওয়া দরকার ছিল। এর শাস্তি অনেক বেশি। এর শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, নিচে ১০ বছরের কারাদণ্ড। সেক্ষেত্রে আমি কেন পেনাল কোর্টে যাব? এখানে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে যে, কোন শিশু বা নারীকে চুরি করা যদি হয়, সেটা পাচারের উদ্দেশ্যে হতে পারে, অপহরণ বা যে কোন কারণে হতে পারে। তার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান আছে। তাহলে আমি চুরির মামলায় যাচ্ছি কেন? তার মানে এখানে অনেকগুলো বিষয় খেলা করে। হয় টাকা খেলা করে, না হয় গাফিলতি খেলা করে।  

সম্পর্কিত খবর