রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে ভারী যান চলাচল শুরু

রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে ভারী যান চলাচল শুরু

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি:

পাহাড় ধসের প্রায় তিন মাস পর রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে ভারী যান চলাচল শুরু হয়েছে। সোমবার সকাল ১১টায় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সাপছড়ি শালবনে নবনির্মিত বেইলি ব্রিজটি ভারী যান চলাচলের জন্য খুলে দেন রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এমদাদ হোসেন।  

এসময় রাঙামাটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের সাব-এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. আবু মোছা ও রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল উপস্থিত ছিলেন।  

বেইলি ব্রিজের উপর প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে হালকা গাড়ি চালিয়ে উদ্বোধন করা হয়।

পরে শুরু হয় রাঙামাটি ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার দূর পাল্লার সব ধরণের মাঝারি ও ভারী যানবাহন চালাচল। সড়কটি চালু হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয় রাঙামাটি বাস ও ট্রাক মালিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা। এর আগে বেইলি ব্রিজ উদ্বোধনের খবর পেয়ে রাঙামাটি শহর থেকে ছুটে আসে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।  

রাঙামাটি বাস ও ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি মো. মঈন উদ্দীন সেলিম জানান, দীর্ঘ দিন পর পাহাড়ের মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

বেইলি ব্রিজটি খুলে দেওয়ার কারণে দুর্ভোগ কমছে। পাহাড় ধসের কারণে রাঙামাটি শহর থেকে সাবছড়ি শালবন বিহার সড়কে এত দিন পর্যন্ত সরাসরি বাস ও ট্রাক চলাচল বন্ধ ছিল। যাত্রীদের রাঙামাটি থেকে চট্টগ্রাম-ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জেলায় যেতে অটোরিক্সাযোগে প্রায় ৩০কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তারপর ঘাগড়া বাজার থেকে বাসে উঠতে হতো। একই সাথে সমান দুর্ভোগে পড়তে হয়েছিল মৌসুমি ফল ব্যবসায়ীদেরও। পর্যটক পর্যন্ত আসা বন্ধ হয়ে যায় রাঙামাটিতে। এক প্রকার পাহাড়-বন্দি হয়ে পড়ে রাঙামাটির মানুষ। দেখা দেয় দুর্ভোগ ও অভাব। এখন বড় ও ভারী যান চলাচলের কারণে রাঙামাটি আগের মত আবারও স্বাভাবিক হয়ে উঠতে খুব বেশি সময় লাগবে না।  

রাঙামাটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের সাব-এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. আবু মোছা জানান, গত ১৩ জুন পাহাড় ধসে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সদর উপজেলার সাপছড়ির শালবাগানে ১০০ মিটারব্যাপী রাস্তা ধসে ১০০ ফুট খাদে বিলীন হয়ে যায়। সড়কটির মোট ৪৫ স্থান পাহাড়ধসে বিধ্বস্ত হয়। এসময় রাঙামাটির সাথে চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ অন্যান্য জেলার সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তবে পাহাড় ধসের ঘটনার আট দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ দল রাতদিন কাজ করে ২১ জুন থেকে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কটি হালকা যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়। কিন্তু  সড়কে এক টনের অধিক ভারী যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। তাই ভারী যান চলাচলের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে এ সড়কের বিধ্বস্ত অংশে ২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় বেইলি ব্রিজ।

তবে এ বেইলি ব্রিজটির স্থায়ীত্ব ১০বছর। চিরস্থায়ী সমাধানের জন্য পাহাড় কেটে বিকল্প সড়ক তৈরি করতে হবে বলে জানান সওজের এ কর্মকর্তা।


রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.এমদাদ হোসেন জানান, জনদুর্ভোগ কমাতে আসন্ন ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে এ ব্রিজটি ভারী যান চলাচলের জন্য খুঁলে দেওয়া হয়েছে। ব্রিজটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে মহাসড়কের বড় ও ভারী যানবাহনগুলো চলাচল করতে পারে। তবে রাঙামাটির অন্যান্য সড়কের অবস্থা তেমন ভাল না হওয়ার কারণে এ মুহূতে ১০ থেকে ১৬টনের অধিক ভারী যান চলাচল করা যাবে না। সড়কগুলো মেরামত হয়ে গেলে সব ধরণের বড় ও ভারী গাড়ি চলাচল করতে পারবে এ ব্রিজের উপর দিয়ে।

সম্পর্কিত খবর