পরীক্ষায় পূর্ণ নম্বরের নিশ্চয়তা দিয়ে টাকা আদায়

পরীক্ষায় পূর্ণ নম্বরের নিশ্চয়তা দিয়ে টাকা আদায়

নাটোর প্রতিনিধি

প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের মুখে তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ের নম্বর পাইয়ে দিতে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত টাকা অবশেষে ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এন এস সরকারী কলেজ কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে অর্ধশতাধিক পরীক্ষার্থী টাকা তোলা বন্ধের দাবিতে কলেজ ক্যাম্পাসে জমায়েত হয়। তারা কলেজ প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করলে প্রাথমিকভাবে আদায়কৃত টাকা ফেরত ও নতুন করে টাকা আদায় বন্ধের ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, এন এস কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে চলতি বছর ২৩২ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।

এপ্রিলের শুরু থেকে অনুষ্ঠিতব্য  ওই পরীক্ষায় তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ের নম্বর পাইয়ে দিতে ব্যবসায় শিক্ষা শাখার পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে আদায় শুরু করা হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাহাবুব হাসান তার নিজ বাড়িতে বসে চারটি গ্রুপের মাধ্যমে এ টাকা তোলেন। ব্যবহারিক পরীক্ষায় ২৫ নম্বর পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে গত ২ দিনে প্রায় ৫০ জন পরীক্ষার্থীর নিকট থেকে ছাত্র মারফত এ টাকা তুলেছেন মাহবুব হাসান।

বাকি দেড় শতাধিক পরীক্ষার্থীর টাকা আগামী দুই দিনে তোলার কথা ছিল।

২৩২ জন পরীক্ষার্থীর নিকট থেকে প্রায় ৭০ হাজার টাকা তোলার টার্গেট করা হয়। সোমবার সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে টাকা দেওয়া ৫৪ জন পরীক্ষার্থীর একটি তালিকা দিতে কলেজের অধ্যক্ষ শামসুজ্জামানের কাছে যায় বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা। কিন্তু ব্যস্ত থাকায় অধ্যক্ষ পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করেননি। ওই পরীক্ষার্থীরা তখন উপাধ্যক্ষ নূর কুতুব উল আলমের কাছে গেলে বিষয়টি বিবেচনার জন্য পুনরায় অধ্যক্ষের কাছে পাঠান তিনি। অধ্যক্ষ বিষয়টি দেখার জন্য শিক্ষক পরিষদ সভাপতি ফরহাদ মন্ডলকে নির্দেশ দিলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে টাকা তোলা 
বন্ধ করেন তিনি। এ সময় উত্তোলিত টাকা ফেরত দেওয়ারও ঘোষণা দেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন পরীক্ষার্থী জানায়, শিক্ষক মাহবুব হাসান কয়েকমাস আগে একই বিষয়ের জন্য পরীক্ষার্থী প্রতি ৫০ টাকা করে আদায় করেন ৪ দিন ব্যবহারিক ক্লাস করানোর বিনিময়ে।

সম্প্রতি তিনি, ব্যবহারিকে ২৫ নম্বরের গ্যারান্টি দিয়ে পুনরায় ৬০০ টাকা করে চান পরীক্ষার্থী প্রতি। টাকার পরিমাণ বেশি বলে আপত্তি জানালে কমিয়ে ৩০০ টাকা করে নির্ধারণ করা হয়। এ ব্যাপারে ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাহাবুব হাসানের সঙ্গে মাবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি গত দুদিন ক্যাম্পাসে ছিলেন না। ছুটিতে রয়েছেন। তাহলে টাকা তুললেন কীভাবে। আর ভর্তির সময়ই বিধি অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে ৩০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। তাই টাকা তোলার প্রশ্নই ওঠেনা।

এদিকে টাকা আদায় বন্ধে পরীক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কথা অস্বীকার করে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সামসুজ্জামান জোর দিয়ে বলেন, শিক্ষক মাহবুব হাসান এমন কাজ করতে পারেন না । তার বাড়িতে বসে টাকা আদায় করার অভিযোগও বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। তিনি ছুটিতে রয়েছেন।  ছুটি থেকে ফিরলে তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/নাসিম/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর