পাকসেনার আদলে ভাস্কর্য: নওগাঁজুড়ে সমালোচনার ঝড়

পাকসেনার আদলে ভাস্কর্য: নওগাঁজুড়ে সমালোচনার ঝড়

বাবুল আখতার রানা • নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর বাজারের চৌরাস্তা মোড় গোলচত্বরে একটি ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে। এ ভাস্কর্যটি পাকিস্তানি সেনার আদলে বানানো হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন উপজেলার সচেতন মহল।  

বিষয়টি নিয়ে উপজেলাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগেরমাধ্যম ফেসবুকেও এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।

দ্রুত ভাস্কর্যটি অপসারণ করে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি সংবলিত ভাস্কর্য স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন উপজেলাবাসী।  

news24bd.tv

জানা গেছে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ১৫ লাখ ব্যয়ে ভাস্কর্যটি মান্দার প্রসাদপুর বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে গোলচত্বরে তৈরি করা হয়। গোলচত্বরে বেষ্টনির মধ্যে পিলারের ওপর পূর্ব-পশ্চিম করে দুটি মূর্তি স্থাপন করা রয়েছে। যার দুটি পাকিস্থানি সেনাদের আদলে তৈরিকৃত কোমরে বাউন্ডলি, পরনে পাকিস্তানি পোশাক ও মাথায় হেলমেট।

একজন দু’হাতে বন্দুক উঁচু করে মাথার ওপর ধরে আছে এবং অপরজন বন্দুক আড়াআড়িভাবে ধরে আছে।  

মান্দাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। পাকসেনারা রাতের অাঁধারে নিরীহ বাঙাীরদের ওপর অস্ত্র নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে। দুই লক্ষ মা-বোন হারিয়েছেন তাদের সম্ভ্রম। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষের পক্ষে এরূপ ভাস্কর্য স্থাপন মেনে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।  

মাহবুবুজ্জামান সেতু নামে এক ফেসবুক ইউজার লিখেছেন, ‘নওগাঁর মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর বাজারের চৌরাস্তা মোড়ের গোলচত্বরে সম্প্রতি স্থাপিত প্রতিকৃতি অপসারণ সময়ের দাবি’।  

news24bd.tv

সুলতান মাহমুদ রায়হান নামে অপর একজন তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, ‘মান্দায় প্রসাদপুর চৌরাস্তায় দুই পাকিস্তানি সৈন্যের প্রতিকৃতিকে অনতিবিলম্বে সরানোর জোর দাবি জানাই। বাঙালি জাতি হিসেবে প্রতিকৃতিটি কৃষক, শ্রমিক আথবা বাঙালির আদলে হওয়া উচিত। অনতিবিলম্বে এখানে জাতীয় চার নেতাসহ বঙ্গবন্ধু চত্তর নির্মাণ করা হোক। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। ’

মান্দা থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমি এ ভাস্কর্য নির্মাণের প্রতিবাদ জানাই। এটা মুক্তিযোদ্ধাদের আদলে তৈরি করা হয়নি। এটা সম্পূর্ণ পাকসেনাদের আদলে তৈরি করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। তাদের মূর্তি কেন এখানে তৈরি করা হয়েছে এটি সত্যিই দুঃখজনক। আমি এটা দ্রুত অপসারণের দাবি জানাই। ’

এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা একেএস মাহবুবুর রহমান জানান, বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনা ও পত্রপত্রিকায় প্রকাশের পর নজরে আসে তাদের। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ’ 

রানা/অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর