মিয়ানমারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, নিহত বেড়ে ৭১

সংগৃহীত ছবি

মিয়ানমারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, নিহত বেড়ে ৭১

নিউজ ২৪ ডেস্ক

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত ৭১ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৫৯ জন রোহিঙ্গা  ও ১২ জন নিরাপত্তাকর্মী রয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

জাতীয় পরামর্শক অং সান সুচির কার্যালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, ১৫০ জনের অধিক দুর্বৃত্ত অন্তত ২০টি পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায়।

পরে 'বাধ্য' হয়ে তার জবাব দেয় পুলিশ। দু'পক্ষের সংঘর্ষে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। নিহত রোহিঙ্গারা সবাই সন্ত্রাসী বলে দাবি করেছে সুচির অফিস।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রধান মিন অং লিয়াং ফেসবুকে হতাহতের সংখ্যার বিষয়টি প্রকাশ করেছেন।

তিনি দাবি করেন, স্থানীয় সময় রাত ১টায় দক্ষিণাঞ্চলীয় মংদুতে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এর ফলে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।  


জাতিসংঘের সাবেক প্রধান কফি আনান মায়ানমার সরকারকে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ার অনুরোধ করেছিলেন। এর কয়েকঘণ্টার মাথায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ব্রিটেনের একটি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে সংঘর্ষের সময় মুসলিম রোহিঙ্গাদের গলা কেটে হত্যা করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।  

এদিকে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আর্সা) এক ট্যুইট বার্তায় এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। তারা নিরাপত্তা বাহিনীকে হত্যা হত্যা ও ধর্ষণের জন্য দায়ী করে এ হামলাকে তার প্রতিরোধ বলে উল্লেখ করেছে। একইসঙ্গে আরও হামলার হুমকি দিয়েছে সংগঠনটি। ২০১২ সালে মারাত্মক জাতিগত সংঘর্ষের সময় সৌদি আরবে বসবাসরত রোহিঙ্গারা আর্সা নামের সংগঠনটি গঠন করে।

গত বছরের ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকায় দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য মারা যান। অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুটের ঘটনা ঘটে। এরপর আবার একই ধরনের হামলার তথ্য দিল মিয়ানমার সরকার।

জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। জাতিগতভাবে নির্মূল করতে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের গ্রামে আগুন দিয়ে বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়াসহ গণহত্যা ও গণধর্ষণ চালায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

সম্পর্কিত খবর